স্থানীয় সংবাদ

মাদারীপুরে ব্লাক মেইলিং’র শিকার গৃহবধূর মামলা করেই আতœহত্যা করলেন

মাদারীপুর প্রতিনিধি ঃ মাদারীপুরে প্রাক্তন প্রেমিকের সাথে বিয়ে পূর্ববর্তী অন্তরঙ্গ সম্পর্কের ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে প্রকাশের হুমকিতে আদালতে মামলা দায়েরর পরের দিন আত্মহত্যা করলেন বাদী হামিদা আক্তার নামের এক গৃহবধু। নিহত গৃহবধু হামিদা আক্তার (২৫)। মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের টেকেরহাট এলাকার হালিম ঢালীর মেয়ে। ঘটনাটি মঙ্গলবার বিকেলে মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের টেকেরহাট এলাকায় ঘটেছে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। পুলিশ ও নিহতের পরিবার থেকে জানা গেছে, ৯ বছর আগে শরীয়তপুরের তুলসির চর এলাকার আশরাফ খানের ছেলে শামীম খানের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয় থেকে প্রেম হয়। পরে দুজনের ঘনিষ্ট সম্পর্ক হয়। পরে শামীম খানের সাথে হামিদা আক্তারের প্রেম ভেঙ্গে গেলে সিলেটের লিটন হোসেন নামের আরেক তরুণের সাথে তার মোবাইল ফোনে প্রেম হয়। পরবর্তীতে লিটনকে ভালোবেসে হামিদা বিয়ে করে সংসার করতে শুরু করে। বিয়ের পরেই হামিদার একটি ছেলে সন্তান হয়। যার বয়স ৮ বছর। বর্তমানে হামিদার স্বামী লিটন হোসেন সৌদি আরবে থাকেন। এই সুযোগে শামীম খান পুনরায় হামিদার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে। এবং হামিদা বিয়ের পূর্বে শামীম হোসেনের সাথে প্রেমের সম্পর্কের সময়ের দুইজনের মেলামেশার অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও সৌদি প্রবাসী স্বামী লিটনের কাছে পাঠায়। এতে হামিদার সাথে লিটনের দাম্পত্য জীবনে চরম অশান্তি দেখা দেয়। নিরুপায় হয়ে হামিদা ১৮ ডিসেম্বর মাদারীপুরের একটি আদালতে শামীমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। কিন্তু মামলা দায়েরের পরে শামীম খান আরো ক্ষিপ্ত হয়ে হামিদা ও তার স্বামী লিটনের সাথে পুরনো সম্পর্কের বিষয় নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করায় হামিদা আক্তারের মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলেই বিষ পান করে। পরে গুরুতর অবস্থায় মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এই বিষয়ে নিহত হামিদার ছোট বোন হালিমা আক্তার বলেন, ‘আমার বোনের সাথে বিয়ের আগে শামীমের ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের বিষয় নিয়ে আমার দুলাভাই ও বোনকে নানা ধরনের হুমতি ধামকি শামীম দিয়ে আসছিল। ওই শামীমের কারণেই আমার বোনকে মরতে হয়েছে। আমরা এই মৃত্যুর বিচার চাই। গতকালকে (১৮ ডিসেম্বর) কোর্টে আমার বোন শামীমের বিরুদ্ধে মামলা করায় সে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ওর জন্যই আমার বোন মারা গেছে। আমরা বিচার চাই। এই বিষয়ে মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ.এইচ.এম সালাউদ্দিন বলেন, ‘নিহত হামিদা আদালতে একটি মামলা দায়ের করার পরের দিনই আত্মহত্যা করেছে। আমরা লাশ উদ্ধার করে পোষ্টমর্টেমের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। এবং মৃত্যুর কারণ উৎঘাটনের জন্য তদন্ত করছি। তদন্ত প্রতিবেদন পেলেই আমরা মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পারব।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button