স্থানীয় সংবাদ

যশোরে সুদের টাকা না দিতে পেরে কৃষক মহাসিন মন্ডলকে হত্যা : আটক লিখনের আদালতে স্বীকারোক্তি

যশোর ব্যুরো : যশোরে চড়া সুদের টাকা দিতে না পারায় গালিগালাজ করেছিলো হত্যার শিকার হওয়া মহাসিন। সেই রাগে অফিসের মধ্যেই ল্যাপটপের পাওয়ার কেবল দিয়ে প্রথমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে প্রতিবেশী মেহেদী হাসান লিখন। এরপর মরদেহ ভরা হয় একটি ট্রাঙ্কে। সেই ট্রাঙ্ক বাক্স ভর্তি লাশ নুরপুর থেকে প্রথমে ইজিবাইকে ও পরে ভ্যানে নিয়ে যাওয়া হয় ফতেপুরের বালিয়া ডাঙ্গা মান্দিয়া গ্রামে। যাওয়ার পথে তেলপাম্প থেকে কেনা হয় ডিজেল। আর সেখানে নিয়ে ডিজেল ডেলে পুড়িয়ে দেয়া হয় মহাসিনের মরদেহ। ডিবির জালে আটকের পর এসব কথা জানিয়েছেন নুরপুরের মহাসিনের হত্যাকারী একই এলাকার মৃত আকবর হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান লিখন। শনিবার ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে তাকে আটকের পর উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত বাক্স, মহাসিনের মোবাইল ফোন ও জুতা। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন মহাসিনের ভাই কোরবান আলী। ডিবির ওসি রুপন কুমার সরকার জানায়, আটক লিখন ওই এলাকায় ঈগল হাই ফোর্স এন্ড লজিস্টিক সার্ভিস লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি পরিচালনা করেন। এ ব্যবসার কাজে সুদে সাত লাখ টাকা মহাসিনের কাছথেকে নিয়েছিলেন লিখন। প্রতি সপ্তাহে তাকে দিত হতো ৩০ হাজার টাকা লাভ। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে লিখনের সুদের সেই টাকা দেয়ার কথা ছিলো মহাসিনকে। বিকেলে ওই টাকা নিতে অফিসে যান মহাসিন। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মহাসিন। এক পর্যায় ক্ষুব্ধ হয়ে অফিসে থাকা কম্পিউটারের ক্যাবেল দিয়ে শ^াসরোধ করে প্রথমে হত্যা করে মহাসিনকে। পরে লাশ নিয়ে যায় ফতেপুরের আদর্শপাড়া মসজিদের পাশে। পরে সুযোগ বুঝে মহাসিনের শরীরে ডিজেল ঢেলে আগুন জালিয়ে চলে আসে।
ডিবি আরও জানায়, বিভিন্ন স্থানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ তারা সংগ্রহ করেন। এরপর মহাসিনের মোবাইল ফোনের লোকেশন শনাক্ত করে ফোন উদ্ধার করে লিখনের কাছথেকে। লিখনকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে ধীরে ধীরে সব স্বীকার করেন।
রোববার সকালে ডিবির এসআই শামীম হোসেন ও এসআই খান মাইদুল ইসলাম লিখনকে নিয়ে নুরপুরের তার সেই অফিসে যান। যেখানে মহাসিনকে হত্যা করা হয়েছিলো নিজ মুখে তার বর্ণনা দেন লিখন। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা ফুসে উঠে। লিখনের ফাঁসির দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকে সবাই। অন্যদিকে, মহাসিনের পরিবার কান্নায় ভেঙে পরে। পরে লিখনকে নিয়ে যাওয়া হয় ফতেপুরের মান্দিয়া গ্রামে কিভাবে মহাসিনকে পুড়িয়ে দিয়েছিলো সে কাহিনীও নিজ মুখে স্বিকার করেন লিখন। এছাড়া যে বাক্সে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো সে বাক্সটিও পালবাড়ি এলাকা থেকে উদ্ধার করে ডিবির এ টিম। রোববার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে লিখন আদালতে এ হত্যার বিষয়টি স্বিকার করে জবানবন্দি দেন। আদালত জবানবন্দি গ্রহন শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button