রূপসা উপজেলা ভূমি অফিসে জমির মিউটশনে হয়রানির অভিযোগ

প্রতি ফাইলে টাকা দাবির অভিযোগ সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে, টাকা না দিলে ফাইল পড়ে থাকছে দীর্ঘকাল
স্টাফ রিপোর্টার ঃ রূপসা উপজেলা ভূমি অফিসে জমি মিউটেশন করতে গিয়ে নানা জটিলতার কবলে পড়ছেন জমির মালিকগণ। যারা ওখানকার কর্মকর্তাদের টাকার চাহিদা/খোরাক মিটাচ্ছে তাদের কাজ হচ্ছে। আর যারা দিতে পারছে না তাদের ফাইল ওভাবেই পড়ে থাকছে দিনের পর দিন। আর জমিতে ঝামেলা আছে বলে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর সরাসরি বলছে মিটাতে গেলে অনেক টাকা লাগবে। আর এমনই অভিযোগ উঠেছে এসিল্যান্ড অফিসের সার্ভেয়ার মো: আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জমির মালিক আফসোস করে বলেন, আমার একটি জমি আছে। সেটির মিউটেশনের জন্য আবেদন করাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছি। জমিটি হলো রূপসা উপজেলার আইচগাতি মৌজার সেনের বাজারে । আমি জমিটির মিউটেশনের জন্য আবেদন করতে প্রথমে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যাই। মাত্র আধাঘন্টা পর আবেদনটি এসিল্যান্ড রূপসা বড় বাবুর কাছে পাঠানো হয়। সেখানে গিয়ে জানতে পারি ফাইলটি কম্পিøট করে প্রায় ১-২ দিন পর সার্ভেয়ার মো: আতিকুর রহমানের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। সেই থেকেই ফাইলটি সার্ভেয়ারের কাছে ১০ দিন পড়ে থাকে। এরপর তার কাছে গেলে তিনি বলেন, সামনে শুনানির দিন ধার্য আছে সেদিন এসেন। শুনানির দিন গেলে বলে আপনার জমিতে একটা ঝামেলা আছে। টাকা পয়সা দিলেই মিটিয়ে দেবো। কি ঝামেলা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনার জমিটা বাজার পেড়ি পেড়ির মধ্যে আছে মনে হয়। তখন ভুক্তভোগী বলেন, যদি লিগালি কোন ঝামেলা থেকে থাকে তাহলে সেটি করা লাগবে না। তখন সার্ভেয়ার আতিকুর রহমান বলেন, “টাকা নিয়ে আসেন নাহলে আমি দেখতেছি কি করা যায়। আর শোনেন আপনার পাশের জমিগুলো টাকা দিয়ে কাজ করিয়ে নিয়ে গেছে।” এরপর সে আর কোন কাজ করে দেয়নি। এরকম আরও অনেক ভুক্তভোগী আছে যাদের ফাইল দিনের পর দিন পড়ে আছে। আর যারা টাকা খরচ করছে তাদের সমস্যা মিটে যাচ্ছে। আব্দুর রহমান নামের এক ভূক্তভোগী বলেন, সার্ভেয়ারের কারণে মিউটেশন করাতে অনেক সময় লাগে। লিগ্যাল থাকলেও আবেদন করতে অনেক টাকা লাগে। আর সময় ক্ষেপণও হয়। এবিষয়ে সার্ভেয়ার মো: আতিকুর রহমানকে ফোন দিলে এ প্রতিবেদককে তিনি জানান, “মিউটেশন এর জন্য আবেদনটি আমরা যাচাই বাছাই করি। আর সরকারি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোন বিষয় আছে কিনা সেটি দেখেই রিপোর্ট দেই।” টাকা চাওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, “না এরকম কারও কাছ থেকে টাকা দাবি করি নাই। কেনই বা করবো। আমরা শুধু গেজেট দেখে বলি সরকারি স্বার্থ আছে কিনা।” এখানে জমির কাজ নিয়ে আসা অনেক ভূক্তভোগি দিনের পর দিন টাকা না দিতে পারায় অসহায়ের মত ফিরে যাচ্ছে। ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। জমিতে কোন সমস্যা না থাকলেও সমস্যা দেখিয়ে উৎকোচ নেন এই সার্ভেয়ার। বিষয়টি নিয়ে সহকারি কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল বাকি বলেন, “যদি কোন ভূক্তভোগি লিখিত অভিযোগ করেন তবে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”