স্থানীয় সংবাদ

যশোরে হত্যাকারির সাথে বসবাসের অপরাধে পুড়লো ৬ পরিবারের বাড়িঘর সহায় সম্বল : গ্রেফতার ২

যশোর ব্যুরো ঃ যশোর শহরের বারান্দিপাড়া এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী টগরকে হত্যার সময় বাধা না দেয়ায় এবং খুনির সাথে একই বাড়িতে বসবাস করার অপরাধে ৬টি ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে দুর্বৃত্তরা। তাদের দেওয়া আগুনে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও নগদ দেড় লাখ টাকাসহ সকল আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নিম্নবিত্ত পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ বলছে,আগুন দেয়ার সাথে জড়িত সন্দেহে দুই যুবককে হেফাজতে নেয়া হয়েছে এবং এটা নাশকতা কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আটককৃতরা হচ্ছে, নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার কাজী পাঙখারচর গ্রামের বর্তমানে যশোর শহরের পূর্ব বারান্দীপাড়া মেঠোপুকুর পাড় এলাকার মৃত রেজাউল চৌধুরীর ছেলে সোহেল (২৩) ও শহরের বারান্দীপাড়া লিচুতলা বর্তমানে পূর্ব বারান্দীপাড়া মেঠোপুকুর পাড়ের আ?লাউদ্দীনের ছেলে সোহেল ওরফে ছোট সোহেল (২১)।ঘরে আগুন দেওয়ার অভিযোগে রোববার ১৮ ফেব্রুয়ারী বিকেলে ওমর ফারুক ওরফে তারেক বাদি হয়ে উল্লেখিত দু’জনসহ তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। গ্রেফতারকৃত দু’জনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। যশোওে গত ৯ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে প্রতিপক্ষেও সন্ত্রাসীদেও ছুরিকাঘাতে আহত হন যশোর শহরের বারান্দিপাড়া এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী টসর। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ ফ্রেব্রুয়ারি তিনি মারা যান এবং শনিবার ১৭ ফেব্রুয়ারী রাতে তার লাশ এলাকায় আনা হয়। এ ঘটনায় জড়িত ছিল একই এলাকার মেঠোপাড়ার আয়ান নামে এক যুবক। আয়ানের বাড়ির পাশেই এ ঘটনা ঘটে। সেসময় আশপাশের লোকজন টের পেলেও কেউ ঘর থেকে বের হননি। আর সেটাই কাল হয়েছে তাদেও জন্য। সহযোগিতায় বের না হওয়ায় ও ঘাতক আয়ানের সাথে পাশাপাশি বাড়িতে থাকায় শায়েস্তা করতে শনিবার ১৭ ফেব্রুয়ারী দিবাগত গভীর রাতে ওই এলাকার ৬টি ঘওে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ঘরের বাসিন্দারা জীবননিয়ে বের হতে পারলেও রক্ষা করতে পারেননি নগদ টাকা, চাল-ডাল নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষসহ মূল্যবান আসবাবপত্র। সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নিম্নবিত্ত পরিবারের সদস্যরা।ক্ষতিগ্রস্ত বাবু জানান, ৯ ফেব্রুয়ারি রাত দেড়টার দিকে আয়ান ও তার সহযোগীরা টসরকে ছুরিকাঘাত করে। এসময় আমরা ভয়ে কেউ ঘর থেকে বের হয়নি। এরপর আয়ান ও তার পরিবারের লোকজন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু টগরের বন্ধুরা অব্যাহতভাবে হুমকি দিতে থাকে। তারা বলেন, টসরকে বাঁচাতে যারা এগিয়ে আসেনি তাদেও কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। ১৭ ফেব্রুয়ারী শনিবার রাতে লাশ আসার পর ঠিক রাত দেড়টার দিকে আগুন দেয় টগরের বন্ধুরা। ঘর থেকে কোন মতে জীবন নিয়ে বের হয়েছেন তারা। টিভি, ফ্রিজ, নগদ টাকা, চাল ডাল সব পুড়ে গেছে। মোস্তফা নামে অপর এক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বলেন, আমি ক্যান্সারের রোগী। ঘওে আমার চিকিৎসার এক লাখ টাকা ছিলো। দুইদিন আগে ঋণ করেছি। আগুনে সেই টাকাসহ সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পাশের ঘরের লোক ফল ব্যবসা করে। তার নগদ ৩০ হাজার টাকাসহ সব পুড়ে গেছে। আমাদেও পরনোর কাপড় ছাড়াা আর কিছু নেই। আমরা নিহয়ে গেলাম। ঘর মালিক ওমর ফারুক তারেক বলেন,আগুনের খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ছুটে আসি। এরপর আগুন নেভানোর কাজ শুরু করি। এসময় সন্দেহভাজন দুই যুবককে আটক করি। পওে পুলিশ আসলে তাদেও কাছে সোপর্দ করি। আগুনে আমার ভাড়া দেওয়া ৬টি ঘর পুড়ে গেছে। সময়মত ফায়ার সার্ভিস না আসলে পাশের আরো অনেকের ঘওে আগুন ছড়িয়ে পড়তো। এ ঘটনায় জড়িতদেও আটক ও শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এদিকে জড়িত সন্দেহে আটক দুই যুবককে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোছাইন বলেন. এাঁ নাশকতা কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।ক্ষতিগ্রস্তদেও দেয়া তথ্য মতে, অগ্নিকান্ডে তাদেও নগদ দেড় লাখ টাকাসহ প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।যশোর ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক দেওয়ান সোহেল রানা বলেন, শনিবার ১৭ ফেব্রুয়ারী দিবাগত রাত সোয়া ১ টার দিকে আগুন লাগার খবর আসে। সাথে সাথে সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদেও পাঠানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে এক ঘন্টা চেষ্টা করেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। আগুন দেয়া ৬টি বাড়ি পুরোপুরি বশ্মিভূত হয়ে যায়। তবে কি পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনো নির্ণয় করা সম্ভব নয় বলে জানান এ কর্মকর্তা। এব্যাপাওে যশোর কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক বলেন আগুন লাগানোর ঘটনা তদন্ত চলছে। পওে জানানো হবে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দুইজনের আটকের বিষয়েও তিনি কিছু জানেনা বলে জানান। উল্লেখ্য গত ৯ ফেব্রুয়ারী গভীর রাতে ওই এলাকার আয়ান, মিলন ও শাহিনের নেতৃত্বে এলাকার চিহ্নিত ৭ থেকে ৮ জনের একদল মাদক কারবারী টসরকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। পওে তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়। পওে চিকিৎসাধিন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button