স্থানীয় সংবাদ

খুলনাতে জনপ্রিয় হচ্ছে কাশ্মীরি আপেল কুল

স্বল্প শ্রম ও বিনিয়োগে অধিক লাভবান হচ্ছেন চাষিরা

মোঃ আশিকুর রহমান ঃ খুলনাঞ্চলে দিন দিন অধিক জনপ্রিয় হচ্ছে উঠছে কাশ্মীরি আপেল কুল। স্বল্প শ্রম ও বিনিয়োগে চাষাবাদে অধিক লাভের মুখ দেখায় চাষিরাও বেশ আগ্রহী হয়ে উঠছে কাশ্মীরি আপেল কুল চাষে। খুলনাঞ্চলের খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নড়াইল, যশোরসহ স্থানীয় এলাকগুলোতে ক্রমশঃই চাষাবাদ বাড়ছে, বাড়ছে অর্থনৈতিক সম্ভবনাও। বাংলাদেশের আবহাওয়া, জলবায়ু ও মাটি চাষাবাদের উপযোগী হওয়াতে সারা বছর জুড়েই নানা রকম ফলের চাষ হয়ে থাকে। বর্তমান সময়ে স্বল্প খরচে অধিক লাভে যে সকল ফল উৎপাদন করা হচ্ছে তার মধ্যে কাশ্মীরি কুল অন্যতম। কৃষিবিদদের মতে, উর্বর বা অনুর্বর জমিতে কম খরচে সহজে আপেল কুল চাষ করা যায়, স্বল্প করে যে বেশি লাভ হওয়ার কারণে দিনকে দিন চাষীরা অধিক আগ্রহী হয়ে উঠছে কাশ্মীরি চাষে বাড়ছে সম্ভাবনা। তবে, চাষের আগে চাষিদের সঠিক জাতের চারা নির্বাচন করতে হবে। নতুন চাষিরা গাছ লাগানোর আগে ভালো প্রতিষ্ঠান হতে গুণগত মানের চারা লাগাতে পারলে ভালো ফলন পাবেন বলে জানিয়েছেন তারা। সংশ্লিষ্ট তথ্যসূত্রে জানা গেছে, সাধারণত যে কোন ফল গাছের চারা লাগানোর উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল। তবে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ থাকলে বছরে যে কোনো সময় কাশ্মীরি আপেল কুলের চারা লাগানো যায়। তবে সাধারণত চাষিরা মার্চ মাস থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই কুলের চাষাবাদ করে থাকেন। এক গাছ থেকে অন্য গাছের এবং এক সারি থেকে অন্য সারির দূরত্ব ১০ফুট বাই ১০ফুট রাখতে হয়। চাষকৃত জমির বিঘা প্রতি বিঘা প্রতি ২০০টির বেশি গাছ লাগানো যায়। আকারে ছোট হওয়ায় গাছটি খুব সহজে পরিচর্যা করা যায়। পরিণত গাছে আগস্ট মাসে ফুল ধরতে শুরু করে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে ফুলের সময়। এসময় কোনো ধরনের পোকানাশক স্প্রে ব্যবহার করা যাবে না। ফুল ধরলে সাইফারম্যাথিন গ্রুপের কীটনাশক ও ম্যানকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। এতে গাছ বিভিন্ন পোকামাকড়ের আক্রমণ হতে রক্ষা পাবে, ফল পচন ধরবেনা।
ছাড়াও এপ্রিল মাসে ফলন তোলার পর পরিচর্যার জন্য বেশি উচ্চতার গাছগুলি কেটে দিতে হয়। ডাল কাটার পর অটোস্টিন বা ডায়থেন এম ৪৫ স্প্রে করতে হয়। পর্যাপ্ত সেচ ব্যবস্থা থাকতে হবে, একই সাথে সঠিক পরিচর্যার ক্ষেত্রে জৈব সারসহ রাসায়নিক সারও প্রয়োগ করতে হয়ে থাকে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দৌলতপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-সহকারী উদ্যান কর্মকর্তা মোঃ আক্তারুজ্জামান। তিনি আরো জানান, প্রথম বছরেই গাছ প্রতি ৬০-৭০ কেজি ফল উৎপাদন হয়ে থাকে। পরবর্তীতে গাছের বয়সের সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদন বাড়তে থাকে। খুলনা বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নড়াইল, যশোরসহ স্থানীয় অঞ্চলগুলোতে এই কুল চাষের ব্যপক জনপ্রিয়ত রয়েছে এবং দিন দিন চাহিদা বাড়ছে।
কুল চাষি সাহিদুল জানান, চারা রোপণ, চারপাশে ঘেরা ও পরিচযার্ দিয়ে এক বিঘা জমিতে প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আশা করছি, প্রথম বছরেই প্রায় দেড় হতে দুই লাখ টাকার কুল বিক্রি করতে পারব। অন্য কুলের থেকে এই কুলের চাহিদাও বেশি রয়েছে বাজারে। দৌলতপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-সহকারী উদ্যান কর্মকর্তা মোঃ আক্তারুজ্জামান জানান, বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে কাশ্মীরি আপেল কুল। খুলনা বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নড়াইল, যশোরসহ স্থানীয় অঞ্চল গুলোতে এই কুল চাষের ব্যপক জনপ্রিয়তা রয়েছে এবং দিন দিন চাহিদা বাড়ছে। অন্য দেশী ফলের মতোই এই ফলে রয়েছে নানা পুষ্টি ও গুনাগুন। অল্প শ্রম ও বিনিয়োগে অধিক লাভবান হওয়া যায় বলে চাষাবাদে চাষিদা বাড়ছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button