খুমেক হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ মেশিনারিজ ও যন্ত্রাংশসহ গুরুত্বপূর্ণ ৫১ প্রকার জিনিসপত্র অচল
আজ হাসপাতাল পরিদর্শনে আসছেন স্বাস্থ্য সচিব

৪টি এক্স-রে মেশিনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে একটি নষ্ট
কামরুল হোসেন মনি ঃ খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের মেডিকেল মেশিনারি ও যন্ত্রপাতিসহ গুরুত্বপুর্ণ ৫১ প্রকার জিনিসপত্র অচল হয়ে আছে। যার কারণে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আছে জনবল সংকটও। হাসপাতালে এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আজ শনিবার খুমেক হাসপাতালে পরিদর্শনে আসছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের স্বাস্থ্য সচিব মো: জাহাঙ্গীর আলম।
এ ব্যাপারে খুমেক হাসপাতালের নবাগত পরিচালক ডা: গৌতম কুমার পাল বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। কোথায় কি গুরুত্বপুর্ণ মেশিনারিজ ও যন্ত্রণাংশ অচল আছে তা আমি সঠিকভাবে বলতে পারবো না। এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ৫০০ শয্যার তুলনায় জনবল সংকট আছে। সে তুলনায় রোগীর চাপও তিনগুণের মতো। এসব বিষয়ে আমরা সচিবের কাছে তুলে ধরবো। যাতে দ্রুত জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা: মো: হুসাইন শাফায়াত বলেন, সফর সূচি অনুযায়ী আজ (শনিবার) স্বাস্থ্য সচিব মো: জাহাঙ্গীর আলম খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সকাল সাড়ে ১১টায় পরিদর্শনে আসবেন। এরপর তিনি হাসপাতালের চিকিৎসক নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সাথে মতবিনিময় মিলিত হবে। তিনি বলেন, হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যা ও জনবল ও অকেজো যন্ত্রাংশ মেরামতসহ নানান বিষয় নিয়ে স্বাস্থ্য সচিবের কাছে তুলে ধরা হবে।
খুমেক হাসপাতালের সূত্র মতে, দীর্ঘ দিনের ব্যবহারে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের মেডিকেল মেশিনারিজ ও যন্ত্রাংশসহ গুরুত্বপূর্ণ ৫১ প্রকার জিনিসপত্র অচল হয়ে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ এ সব অচল মেশিনারিজ ও যন্ত্রাংশের মধ্যে রয়েছে, ৫টি আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন, ২টি এক্স-রে মেশিন, ২৫টি নেবুলাইজার মেশিন, ৬০টি অক্সিজেন মিটার, ৩টি অক্সিজেন ফ্লো মিটার, ২টি মাইক্রোস্কোপ, ৫টি ব্লাড ব্যাংক রেফ্রিজারেটর, ৫টি এনেসথেসিয়া মেশিন, ৩টি ল্যাপারেস্কোপি মেশিন, ৬টি আইসিইউ ভেন্টিলেটার, ১২টি কার্ডিয়াক মনিটর, ৬টি আইসিইউ বেড, ৮টি ওটি টেবিল, ২টি ওটি লাইট, ১৮টি পালস অক্সিমিটার, ৬টি ডায়াথারমি মেশিন, ৩টি অটোক্লেভ মেশিন, ১১টি সাকার মেশিন, ৪টি ইসিজি মেশিন, ২টি জেনারেটর, ২২টি এসি ও ২টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর। ব্যবহার অনুপযোগী এ সব গুরুত্বপূর্ণ মেডিকেল মেশিনারিজ ও যন্ত্রাংশের কারণে চিকিৎসাসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সম্প্রতি এগুলো মেরামতের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল ইলেকট্রো-মেডিকেল ইকুইপমেন্ট মেইনটেন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের (নিমিউ অ্যান্ড টিসি) উপসচিব বরাবর খুমেক হাসপাতালের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এ সব মেশিনারিজ সচল করা গেলে রোগীদের আরো ভালোভাবে চিকিৎসা সেবা দেওয়া যাবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মনে করছেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক্স-রে বিভাগের ইনচার্জ মো: আলতাফ হোসেন বলেন, এক্স-রে বিভাগের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, জনবল সংকট। এখানে পদের সংখ্যা ৯টি। সেখানে আছে মাত্র তিনজন। প্রতিদিন ১০০ থেকে দেড়শ রোগীর এক্স-রে করতে হয়। মাত্র তিনজনের পক্ষে রোগীদের সামলাতে হিমশিম খেতে হয়। এরপর রয়েছে রিপোর্ট তৈরির ব্যাপার । তিনি জানান, চারটি এক্স-রে মেশিনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে একটি নষ্ট হয়ে আছে। রোগীদের চাপের কারণে জরুরিভাবে এখানে আরো এক্স-রে মেশিনের প্রয়োজন।