স্থানীয় সংবাদ

প্রকাশ্যে ভাঙ্গাড়ি ব্যবসার নেপথ্যে চোরাই মালের বাণিজ্য

মাদকসেবীদের বড় একটি অংশ চুরির সাথে জড়িত

সাইফুল্লাহ তারেক , আটরা গিলাতলা প্রতিনিধি ঃ ভাঙ্গারি ব্যবসাকে কেন্দ্র করে চলছে চোরাই মালের জমজমাট বাণিজ্য। এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসীর। ফুলে-ফেঁপে উঠছে নগরীরর মানিকতলা ও ফুলবাড়ীগেট এলাকার এসব ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীরা। এসব ব্যবসায়ীদের সহযোগীরা রাতের আঁধারে গ্যাসের রাইজার, বাসা-বাড়ির বৈদ্যুতিক সার্ভিস লাইনের তার, টিউবওয়েল, টিউবওয়েলের মাথা-হাতল, বাড়ির আওতার টিন, বাড়ি নির্মাণসামগ্রী ও পরিত্যক্ত আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম চুরি করে দোকানিদের কাছে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করছে।প্রকাশ্যে ব্যবসার নামে ভাঙ্গারির দোকানগুলোতে এসব চোরাইমাল কেটে টুকরা টুকরা করে অন্যসব সরঞ্জামের সাথে মিশিয়ে রাখা হয়। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, খুলনার মানিকতলা, রেলিগেট, সেনপাড়া, মহেশ^রপাশা আনাচে কানাচে, ওলি-গলিতে গড়ে উঠেছে ভাঙ্গারি মালামাল কেনাবেচার দোকান। এইসব ভাঙ্গারি দোকানিদের সহযোগিতা ও দাদনের টাকা নিয়ে এলাকাভিত্তিক গড়ে উঠেছে একাধিক ছোট-বড় চোরের দল। মূলত এখানকার মাদকসেবীদের বড় একটি অংশ চুরির সাথে জড়িত বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। দিনে-দুপুরে এসব চোরাই মালামাল বেচাকেনা হলেও প্রশাসন রহস্যজনক কারণে ভাঙ্গারি ব্যবসা নজরদারির ব্যবস্থা নিচ্ছে না। নগরীর মানিকতলার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী বলেন, চুরির মাল ছাড়া প্রকৃত ভাঙ্গারি ব্যবসা করা খুবই কঠিন। আর সবাইকে ম্যানেজ করে চলে এই ব্যবসা। তিনি আরো জানান, একেকজন ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীর অধীনে ৮ থেকে ১০ জন ফেরি ব্যবসায়ী থাকেন এবং বেশ কিছু চোরও দাদন দিয়ে লালন পালন করা হয়।এ বিষয়ে খানজাহান আলী থানা এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইজ্ঞিল কাজী বলেন ‘কিছু মাদকসেবী বাড়ি থেকে যখন নেশার টাকা যোগাড় করতে পারে না, তখন মালামাল চুরি করে ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেয়।গিলাতলা যুব সংঘের সাধারন সম্পাদক মোঃ মাসুম বিল্লাহ বলেন, ভাঙ্গারির দোকানিদের সাথে অসংখ্য চোরের সখ্যতা রয়েছে। কারণ ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীদের লাভের অংশই আসে এইসব চোরাই মাল থেকে।একাধিক সুত্রে জানা যায় নিয়ম অনুযায়ী ভাঙ্গারির দোকানের নামে কোনো ট্রেড লাইসেন্স দেয়া হয় না। পুরাতন মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের লাইসেন্স দেয়া হয়।এ বিষয়ে খানজাহান আলী থানার ওসি মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন চুরির অভিযোগ করা হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া থানা এলাকার তালিকাভুক্ত বেশ কয়েকজন চোরকে ইতিমধ্যে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরন করা হয়েছে। চোর, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স তিনি আরো বলেন, ভাঙ্গারি দোকানগুলো নজরদারিতে আছে, এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে। আর মাদকের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেতে এর প্রতিরোধে সবাইকে পারিবারিকভাবে সচেতন হতে হবে। মাদকমুক্ত এলাকা গড়তে হলে নিজের ঘর থেকে আন্দোলন শুরু করতে হবে। আর থানা এলাকার প্রতিটি ঘরে ঘরে মাদকের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুললেই মাদকমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। আমরা যদি মাদকের বিরুদ্ধে সবাই সোচ্চার হই ও ঘরে ঘরে মাদক বিরোধী আন্দোলনে শামিল হই তবে আমরা মাদকের বিরুদ্ধে জয়ী হব।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button