গাবুরা পুরো একটি ইউনিয়নে কোথাও নেই পিচের রাস্তা ভোগান্তিতে ৪৮ হাজার মানুষ
এম আব্দুর রহমান বাবু শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি ঃ শ্যামনগরে প্রত্যন্ত অঞ্চল গাবুরা আইলা, সিডর, আমফান, বুলবুল সহ বিভিন্ন সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্লাবিত হয়েছে পুরো এই ইউনিয়ন। এই গাবুরার ১টি ইউনিয়ন কোথাও নেই পিচের রাস্তা। শ্যামনগর উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার আয়তন ৩৩ বর্গ কিলোমিটার। এ ইউনিয়নে ৭ হাজার ৪৯১টি পরিবারের ৪৮ হাজার মানুষের বসবাস। উপজেলার সবচেয়ে জনবহুল ইউনিয়ন হওয়া সত্ত্বেও গাবুরার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত বাজে অবস্থা। সরজমিনে জানা যায়, এই ইউনিয়নে কোথাও নেই পাকা সড়ক। দু’একটি ইটের সড়ক ছিল। সেগুলোরও ইট উঠে গেছে। সেতু-কালভার্ট নেই। ইউনিয়নের ১৫ গ্রামে যাতায়াতের সব রাস্তা মাটির। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ হয়না। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে যোগাযোগব্যবস্থা। রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ দিয়ে চলতে গেলে গা শিউরে ওঠে বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে । এর বেশিরভাগই ভেঙে নদীতে চলে গেছে। স্থানীয় বহু মানুষ জানান, এখন বৃষ্টির সময় কাদামাটি দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। জুতা পড়ে রাস্তায় চলা যায় না। প্রতিনিয়ত সরকারের বিভিন উন্নয়নের কথা শুনলেও চোখে দেখি না। আমাদের রাস্তাঘাটের কোনো উন্নয়ন হয়নি। ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রিয়াসাত হোসেন বলেন, আমাদের ইউনিয়নই মনে হয় দেশের একমাত্র ইউনিয়ন যেখানে কোনো পিচের রাস্তা নেই। বেড়িবাঁধই আমাদের প্রধান রাস্তা। তাও খুবই জরাজীর্ণ। সারাদিন বৃষ্টি হচ্ছে রাস্তায় হাটার মতো অবস্থা নেই। একই ইউনিয়নের গাইনবাড়ি গ্রামের বাদশা আলম জানান, আমাদের দুঃখ-কষ্ট, দুর্ভোগের কথা কেউ শুনে না। আমাদের ভোগান্তির কথা কাউকে বলে বোঝানো যাবে না, নিজ চোখে দেখতে হবে। আমরা ঠিকমতো হাটবাজারে যেতে পারি না। আমাদের ছেলেমেয়েরা খুবই কষ্ট করে স্কুল-কলেজে যায়। এভাবে কত কাল কষ্ট করতে হবে কে জানে। ইউনিয়নের সোরা গ্রামের হুদা মালি বলেন, ২০০৯ সালে আইলার আগে কিছু পাকা রাস্তা থাকলেও আইলায় ধসে গেছে। তারপর থেকেই ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। একটি এলাকার উন্নয়নের প্রধান শর্ত- ওই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন। আমরা ইউনিয়নবাসী সেটি থেকে বঞ্চিত। গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবিয়ার মেম্বার বলেন, ৪৮ হাজার মানুষের বৃষ্টির মধ্যে কাদামাটি দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এলাকায় রাস্তাঘাট নেই। তবে একসময় ছিল। হরিশখালি-পার্শ্বেমারী, চাঁদনিমুখা-চৌদ্দরশিতে ইটের রাস্তা ছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, বুলবুল ও আম্পানে গোটা ইউনিয়ন ডুবে যাওয়ায় রাস্তাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এখন চলাচলের রাস্তা নেই। ইউনিয়নের কোথাও পাকা সড়ক নেই। রাস্তাঘাট ভালো রাখতে হলে আগে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে।