ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের দৌরাত্মে অতিষ্ট রোগীরা
# খুলনা জেনারেল হাসপাতালে বাড়ছে অনিয়ম #
শেখ ফেরদৌস রহমান : খুলনা সরকারী হাসপাতাল ও প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে শুরু করে চিকিৎসকদের ব্যাক্তিগত চেম্বার পর্যন্ত চোখে পড়ে ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধি কর্মিদের দৌরাত্ম। চিকিৎসকের রুম থেকে রোগী বের হলে রোগীর ব্যবস্থাপত্রের ছবি তুলছেন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা। তবে তারা বাড়াবাড়ি করলেও নিরব ভুমিকায় হাসপাতাল প্রশাসন। এসব কোম্পানির প্রতিনিধিরা যা করছেন সেটি নীতিগত বা আইনত বৈধ কিনা আছে কিনা? তারা তা জানেনা। এটা তাদের চাকুরী আর প্রতিদিনের ছবি পাঠিয়ে দিতে হয় এসব ওষুধ কোম্পানির উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট। মূলত প্রতিনিধি কর্মিরা ঠিকঠাক মত দায়িত্ব পালন করছে কিনা। পাশাপাশি চিকিৎসকদের নিকট তার কোম্পানির কতটুকু মূল্য আছে সেই বিষয়টি যাচাই বাচাই করার জন্য। প্রতিনিধিরা সকলে কম বেশি উচ্চ শিক্ষিত যুবক ও নারী । তবে ওষুধ কোম্পানির বিভিন্ন উপটৌকন আর মাসিক চুক্তি অর্থে প্রভাবে পড়ে শক্তিশালী উচ্চ মাত্রা এন্টিবায়োটিক লিখে দিচ্ছেন কতিপয় অসাধু চিকিৎসক। সরেজমিনে দেখা যায়, খুলনা জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে এসছেন রোগী স্বজন আহমদ আলী তিনি বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে এসেছি হাসপাতালে বর্হিবিভাগে ১২ নং কক্ষ থেকে বের হলেই চার থেকে পাঁচজন যুবক এবং তার সাথে দুই জন নারী আছে তারা আমার স্ত্রীর ব্যবস্থাপত্র এক প্রকার হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে ছবি তুলছেন। এসব সহ্য করা যায় একজন ছবি তুলছে আবার তাকে দেখে অন্য প্রতিনিধিরা দৌড়ে আসছে। এবিষয়ে কথা হয় খুলনার সচেতন নাগরিক আরাফাত ইসলামের সাথে তিনি বলেন, দেশে প্রায় কয়েক শত ওষুধ কোম্পানি আছে। আর এই কোম্পানি গুলোর কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে অপ্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থাপত্র লিখছে কতিপয় অসাধু চিকিৎসক। এতে করে ওষুধ কোম্পানির বিক্রি বাড়ছে অন্য দিকে লাভবান হচ্ছেন চিকিৎসক। আর প্রক্ষান্তরে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ধনী ,দরিদ্র সকল শ্রেণীর রোগীরা। ব্যবস্থাপত্রে যত বেশি প্রয়োজনীয় বা অপ্রয়োজনীয় ওষুধ লেখা হচ্ছে তার থেকে তার কমিশন, উপটৌকন বা ভ্রমণ বাণিজ্যও হচ্ছে। তবে এই পেশাগত অনৈতিকতায় রোগীর যে মারাতœক শারীরিক ও আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে সে বিষয়ে তিনি মোটেও তোয়াক্কা করছেন না তার নিজের লাভটাই তার কাছে মুখ্য বিষয়। এবিষয়ে নাম প্রকাশ না করবার শর্তে একটি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি বলেন, ভাই আমরা যারা যুক্ত আছি তাদের চাকরির গ্যারান্টি এক মিনিটও নেই। প্রতি মাসে সেলস্ টার্গেট বাড়ছে, টার্গেট পূরণ না হলে স্যালারি আটকে দেয়া অথবা কম স্যালারি পাওয়ার মত ঘটনা ঘটছে। কোন ছুটি নেই বললেই চলে শুক্রবার বেশিরভাগ ডাক্তারের চেম্বার বন্ধ থাকলেও আমাদের কাজ কোন বন্ধ নেই। তাছাড়া ওষুধ লেখানোর জন্য ডাক্তারদের ব্যক্তিগত কাজ করা এমনকি মোটরসাইকেলে তাদের লিফ্ট দেয়া লাগে কি করব । এবিষয়ে খুলনা ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ শেখ মোহাম্মাদ কামাল হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি । এছাড়া ওষুধ কোম্পানিদের জন্য সপ্তাহে দু’দিন শনিবার ও বুধবার ডিউটি টাইম শেষ হলে চিকিৎসকের সাথে সাক্ষাত করতে পারবে।