সম্পাদকের চোখে দেখা ৫ই আগস্টের বিকেল

মোঃ আশরাফ-উল-হক, সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক প্রবাহ
স্টাফ রিপোর্টারঃ ৬৯’র ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুথান জননেতা মাওঃ ভাসানীর নেতৃত্বে দেখেছি (তখনও আমি সাংবাদিক)। সারাদেশে জননেতা মাওঃ ভাসানীর নেতৃত্বে সে সময়ে শ্লোগানে মুখরিত ছিল “জ্বালো জ্বালো আগুন জ্বালো, দিকে দিকে আগুন জ্বালো।” পাকিস্তানী পুলিশের আক্রমণের মুখে বাংলার দামাল ছেলেরা আর জনতা বিজয়ের কেতন ছিনিয়ে এনেছিল। ট্যাংকারের রঙিন গরম পানি, টিয়ার গ্যাস আর গুলির মুখে এই ছাত্র-জনতাই পর্বতের মত দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। তারই ফলশ্রুতিতে সেই রক্তের পথ বেয়ে আমরা পেলাম হায়নার কাছ থেকে ছিনিয়ে আনা ৭১’র বিজয়। সৃষ্টি হলো একটি নতুন রাষ্ট্র আমার এই বাংলাদেশ। ৭৫’র দেখলাম সামরিক অভ্যুথান, পরে এলো দেশব্যাপী স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী জনতার সংগ্রাম। সারাদেশ বিচ্ছিন্ন হলো রাজধানী থেকে। স্বৈরাচার এরশাদের পতন হলো জনতার বিজয় হলো। যাত্রা শুরু হলো স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশের। এরপর বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদল তথা আ’লীগের সশস্ত্র সংগ্রাম । শুরু হলো লগি বৈঠার খুনের মহড়া। প্রধান বিচারপতির কার্যালয়ে হলো হামলা। এরপর দেখলাম ২০২৪ সালের সারাদেশে ছাত্রদের কোটা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন। যা দেশের মানুষের আবেগকে আন্দোলিত করেছিল। এই ন্যায্য আন্দোলনের পক্ষে যুক্ত হয় রাজনৈতিক, পেশাজীবী সংগঠন, আপামর সাধারণ জনগণের অকুন্ঠ সমর্থন ও অংশ গ্রহণ। সৃষ্টি হলো নতুন দিন, বিশ্বের মাঝে মাথা তুলে দাঁড়ালো। স্বপ্নের গণতন্ত্রের যাত্রা হলো শুরু ৫ই আগস্ট। ্আন্দোলনে ঢাকা এ্ই মুহুর্তে স্বচোখে দেখিনি। দেখেছি পুরানো চেনা জানা খুলনা নগরীর নতুন রূপ। পড়ন্ত বিকেলে শহর ঘুরে দেখলাম মানুষের বিজয় ্উল্লাস। সেখানে উপস্থিতি ছিল ছাত্র-যুবক জনতার বাধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পূর্ব ও পরে খুলনা শহরে মানুষের এমন ঢল কেউ কখনও দেখেনি। এ যেন এক নতুন স্বাধীনতা। এ স্বাধীনতার জন্য দিতে হয়েছে সহ¯্র মানুষের জীবন। আমরা কোন দিনই তাদের জীবন ফিরিয়ে দিতে পারবো না। এই বীর শহিদদের স্মৃতি চিরদিন থাকবে জাতির অন্তরে। আমরা এই শহিদদের প্রতি জানাই সশ্রদ্ধসালাম। এই গণতন্ত্রের রূপকার ছাত্র সমাজকে জানাই আন্তরিক মুবারকবাদ। জাতি তোমাদের ত্যাগ ও ঋণের কথা কোন দিন ভুলবে না। তোমরাই সেই সূর্য্য সন্তান। জাতির ভবিষ্যত। আমরা তাকিয়ে আছি তোমাদের দিকে। এগিয়ে যাও সামনের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপে।