বাগেরহাটে প্রেসক্লাব ও উপজেলা পরিষদে ভাঙচুর

পৌরসভার প্রধান গেটে তালা
বাগেরহাট প্রতিনিধি ঃ বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষ ও বাগেরহাট প্রেসক্লাবে ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে এবং পৌরসভার প্রধান গেটে তালা দিয়ে দেয়া হয়েছে। রবিবার সকালে ও দুপুর ওই ঘটনা ঘটে। রবিবার সকাল থেকে একদল লোক পৌরসভার সামনে তারা মেয়রের খোঁজ করলেও ভাঙচুরের কোন ঘটনা ঘটেনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার সকালে বাগেরহাট জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি ও ষাটগম্বুজ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফকির তারিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল লোক সদর উপজেলা পরিষদে প্রবেশ করেন। তারা উপজেলা চেয়ারম্যানের কেক্ষে ঢুকে ভাংচুর করে এবং সেখানে থাকা আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধানের ছবিসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীদের ছবি ও বেশ কিছু দাপ্তরিক ফাইল বাইরে নিয়ে আসে। পরে পরিষদের সামনের সড়কের উপর আগুন ধরিয়ে দেয় ও চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়।এ সময় উপজেলা পরিষদের চত্বরে তাঁর সাথে থাকা নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া একটি বক্তব্যের ভিডিও ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এতে বলতে শোনা যায়, ‘বাংলাদেশের মানুষকে ন্যায়ভিত্তিক সেবা দেওয়ার জন্য আপনারা প্রস্তুত থাকেন। উপজেলার বিনা ভোটের সন্ত্রাসী চেয়ারম্যান যেখানে পাবেন গনধোলাই দেওয়া হবে। (সদর উপজেলার) ১০ ইউনিয়নের যে সন্ত্রাসী চেয়ারম্যান, যারা আমাদের নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষকে থানা পুলিশে সোপর্দ করে মিথ্যা মামলা দিয়ে এলাকার সমস্ত মানুষকে অতিষ্ট করেছে তাদের যেখানে পাবেন মারপিট করে আইনের হাতে সোপর্দ করবেন। এদিকে দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করতে আসেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিমের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। এ সময় ওই নেতাদের সাথে থাকা কয়েককর্মী প্রেসক্লাবে একটি কক্ষ ও করিডোরে থাকা কিছু ছবি ভাঙচুর করে ও প্রেসক্লাব থেকে ফেলে দেয়। সেখানে উপস্থিত এক সাংবাদিক বলেন, বেলা একটার দিকে বিএনপির নেতৃবৃন্দসহ শতাধিক লোকজন নিয়ে প্রেসক্লাবে আসেন। এ সময় প্রেসক্লাব ভাবনের দোতালায় ঢুকে করিডোর দিয়ে যাওয়ার সময় বিভিন্ন সময়ের ছবি ভাংচুর শুরু করে। তারা প্রেসক্লাব ভবনের ভিত্তিপ্রস্ত স্থাপনের ছবি, উদ্বোধন, বিদেশ সফর ও অনুদান প্রদানকারীদের ছবি ও সভাপতি-সম্পাদকের নাম ফলক ভাংচুর করা হয়। অপরদিকে, সকাল থেকে বিএনপির বেশ কিছু নেতাকর্মী বাগেরহাট পৌরসভায় অবস্থান নেন পৌর মেয়র খান হাবিবুর রহমানের খোঁজে। তবে তারা কোন ভাংচুর করেনি। পৌরসভার কর্মচারিদের কাজেও বাঁধা দেননি তারা। তবে মেয়রের কক্ষে প্রবেশের চেষ্টা করেন বলে জানা যায়। এছাড়া এর আগে শরনখোলা প্রেসক্লাব, ফকিরহাট প্রেস ক্লাব ও চ্যানেল আই টিভির বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি অধ্যাপক মাহাফিজুর রহমানের বসত বাড়ী ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে। আর ৫ আগষ্ট থেকে ১৮ আগষ্ট পর্যন্ত বাগেরহাট জেলায় শত শত মাছের ঘের, হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ীঘর ভাংচুর লুট এবং অনেকের গোয়ালঘর থেকে গরু লুট করে নিয়ে গেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ সব বিষয়ে বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম বলেন, উস্কানি মূলক যে বক্তব্য আসছে সেটি স্ব স্ব ব্যক্তির নিজের। দলীয়ভাবে এমন বক্তব্যের কোন সুযোগ নেই। এই বক্তব্যের দায় দল নিবে না। এছাড়া উপজেলা পরিষদের ঘটনায় হামলার যথাযথ প্রমাণ ছবি, ভিডিও থাকলে সেটি কেন্দ্রে পাঠিয়ে অবগত করবেন বলে জানান তিনি। অপরদিকে বিভিন্ন স্থান এর ঘের দখল-লুটের ঘটনায় ঢালাও ভাবে বিএনপিকে অভিযোগ না করে সুনির্দিষ্ট ঘেরের ঠিকানা, মালিকানা উল্লেখ করতে বলেন তিনি। আর প্রেসক্লাবের অনাকাংখিত ঘটনার সমাধান দুপুরেই হয়েছে বলে জানান তিনি।