পরিত্যক্ত এ্যাসফল্ট প্লান্ট এখন বিষাক্ত সাপ আর মাদকসেবীদের নিরাপদ আশ্রয়

# দুই যুগ ধরে সিটি কর্পোরেশন দখলে থাকলেও এখন বনজঙ্গল আর জরাজীর্ণ স্তূপ #
স্টাফ রিপোর্টার ঃ নগরীর বয়রাস্থ বাস্তহারা-গোয়ালখালী কেডিএ বাইপাস সংলগ্ন এলাকার বয়রা হাউজিং আবাসিক এলাকায় নাগরীক সেবার জন্য নির্ধারিত পার্ক এর জায়গাটিতে দুই যুগ ধরে দখলে রয়েছে খুলনা সিটি কর্পেরেশন। এছাড়া মেয়র আসে মেয়র চলে যায় তারপরও ছোট ছেলে মেয়েদর জন্য পার্ক আর হচ্ছেনা। যেখানে নিয়মবর্হিভূ ভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল এ্যাসফল্ট প্লান্ট। তবে এখন চিত্র ভিন্ন। পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখা বনজঙ্গলে পরিপূর্ণ জায়গাটি। এছাড়া এই এ্যাসফল্ট প্লান্ট এর জায়াগায় দেখা মিলে বিষাক্ত সাপ আর মাদকসেবীদের নিরাপদ আশ্রয় । মূলত গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নিকট হতে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নাগরীক সুবিধার জন্য আবাসিক এলাকায় পার্ক নির্মাণের জন্য জায়াগাটি নির্ধারণ করেন। জাতীয় গৃহায়ন (হাউজিং) কর্তৃপক্ষ ১৯৯৬ সালের ১৫ মে উক্ত আবাসিক এলাকাটি খুলনা সিটি কর্পোরেশনের কাছে ২০৩ (৩) নম্বর স্মারকের মাধ্যমে হস্তান্তর করে। এটি হস্তান্তরের মাত্র তিন বছরের মাথায় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন কর্তৃপক্ষ সেখানে এ্যাসফল্ট প্লান্ট স্থাপন করে। পরবর্তিতে খুলনা সিটি কর্পেরেশন পার্ক এর জায়গা দখল করে স্থাপন করা হয়েছে এ্যাসফল্ট প্লান্ট। যা বিগত প্রায় দুই যুগ ধরে উক্ত স্থানে এ্যাসফল্ট প্লান্ট হিসেবে দখল রয়েছে। এছাড়া এ্যাসফল্ট প্লান্টের কার্যক্রম শুরু হলে আশেপাশের সেখানে বসবাসরত বাসিন্দাদের চরম অস্বস্তিকর মধ্যে পড়ে। এ্যাসফল্ট প্লান্ট থেকে কালো ধোঁয়া ও ডাষ্ট বের হতে শুরু করে। আশপাশের লোকজন একদিকে যেমন শব্দ দূষণে ভোগে তেমনি পাথরের টুকরা ও ধূলাবালিতে মারাত্মক পরিবেশ দূষণের শিকার হয়। এসব কারণে বাসিন্দাদের অনেকে এ্যাজমাসহ নানাবিধ কঠিন রোগে আক্রান্ত হতে শুরু করে বলেও এলাকাবাসী জানান। এমতাবস্থায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে খুলনা সিটি কর্পোরেশন হাউজিং এষ্টেট, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার লিখিত আবেদন জানিয়ে পার্কটি দখলমুক্ত করার দাবি জানানো হয়। পরবর্তিতে এ্যাসফল্ট প্লান্ট অন্য জায়গায় স্থান্তর করলেও পড়ে থাকে এ্যাসফল্ট প্লান্টের অবকাঠোমো। যা দীর্ঘদিন যাবৎ ফেলে রাখায় এখন বন জঙ্গল আর বিষাক্ত সাপ আর মাদক সেবীদের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত। এছাড়া জায়গাটিতে রক্ষনাবেক্ষনের জন্য নেই কোন নিরাপত্তার ব্যবস্থা। যা নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ হালিম হোসেন বলেন, আবাসিক এলাকায় নেই কোন পার্ক। আর গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সিটি কর্পোরেশন জায়গাটি নিয়েছিল যে একটি পার্ক হবে। প্রথম হলো পাথর ভাঙ্গা মেশিন এ্যাসফ্ল্ট প্লান্ট এখন সরে গেছে । এখানে মাদক সেবীদের আড্ডা আর অসামাজিক কাজ চলছে। আশেপাশে রয়েছে স্কুল, মাদ্রাসাসহ প্রায় এক দেড় হাজারের মত বসবাসকারী নাগরীক রয়েছে। তাদের শিশুদের বিনোদনের জন্য নেই কোন পার্ক। এভাবে জায়গাটি ফেলে রাখার কারণে মশার উপদ্রব বাড়ছে। আমরা দ্রুত এখানে পার্ক নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষর কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। ছোট ছেলে-মেয়েরা এই পার্ক এর জন্য বিনোদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ বিষয়ে খুলনা জাতীয় গৃহায়ন (হাউজিং) এর নির্বাহী প্রকৌশলি মোঃ মোর্শেদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা আরও দুই যুগের আগে এই বয়রা আবাসিক বি-ব্লকের জায়গাটি খুলনা সিটিকর্পেরেশনের কাছে নাগরীক সুবিধা জন্য হস্তান্তর করেছি। এখন এই জায়গার মালিকানা আমাদের নেই। খুলনা সিটি কর্পোরেশন পার্ক করবে বলে জানিয়েছিল এখন তারা কি করবে না করছে আমরা কোন ব্যবস্থা নিতে পারছিনা। এ বিষয়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো: হেলাল মাহমুদ শরীফের বলেন, আমি যেহেতু নতুন এ বিষয়ে কোন কিছু জানিনা । তারপরও আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি ।