স্থানীয় সংবাদ

কেসিসির প্রভাবশালী সহকারি কনজারভেন্সী অফিসার এ্যানী দুর্নীতির দায়ে সাসপেন্ড

মেয়রের সাথে সম্পর্ক থাকায় তিনি ছিলেন বেপরোয়া

স্টাফ রিপোর্টারঃ খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রভাবশালী সহকারি কনজারভেন্সী অফিসার নুরুন্নাহার এ্যানীকে দুর্নীতির দায়ে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বুধবার কেসিসির সচিব সানজিদা বেগম স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে তাকে এই সাসপেন্ড করা হয়। অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়, রেশমা খাতুন নামের একজন নারীকে কেসিসির মাস্টাররোলে চাকুরি দেয়ার কথা বলে লক্ষাধীক টাকা ঘুষ নেয়। ওই নারীকে মাস্টাররোলে চাকুরি না দিয়ে আউট সোসিং-এ চাকুরি দেয়। এ সময় ওই নারীকে মাসে ৩০ দিনের কাজ করিয়ে মজুরী দেয় ১৫/২০ দিনের। এছাড়া গত ২০ আগস্ট বিকেল ৪টায় কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ক ও প্রতিনিধিরা এ্যানীর দুর্নীতির নিয়ে কথা বলেন। একই সাথে এ দুর্নীতির দায়ে তাকে চাকুরি থেকে বরখাস্ত করার জন্য অনুরোধ করেন। এছাড়া নুরুন্নাহার এ্যানী মশক নিধনের যন্ত্রপাতি, তেল, মালামাল রুমে তালাবদ্ধ রেখে অননুমোদিত ভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার ফলে কনজারভেন্সী শাখার কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। পরে বাধ্য হয়ে রুমের তালা ভেঙ্গে কনজারভেন্সী মালামাল বের করে কার্যক্রম সচল করা হয়। এছাড়া এ্যানীর বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগের কারণে সিটি কর্পোরেশনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়। এমতাবস্থায় ্যখুলনা সিটি কর্পোরেশন ্য(কর্মকর্তা ও কর্মচারি) চাকুরি বিধিমালা ১৯৯৩ এর ৩৮ (ক) (খ) ও (গ) ধারায় বর্ণিত দায়িত্ব পালনে অবহেলা, অসদাচরণ, পলায়নের কারণে চাকুরি থেকে সাময়ীক বরখাস্ত করা হলো। তার বিরুদ্ধে বিভাগয়ি মামলা দায়ের করা হয়েছে। কর্মকর্তারা অভিযোগ করে বলেন, সাবেক মেয়র তালুকদার আঃ খালেকের সাথে সহকারি কনজারভেন্সী অফিসার নুরুনাহার এ্যানীর ভাল সম্পর্ক থাকায় তিনি ধরাকে ষড়া জ্ঞান করতেন। তিনি সকল নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অবৈধভাবে সরকারি টাকায় তিনবার বিদেশ সফরে যান । ক্ষমতার অপব্যবহার কাকে বলে তা এ্যানী কার্যক্রম প্রমাণ করে। কেসিসির বিভিন্ন প্রকল্পের প্রশিক্ষণ ও কর্মশালায় জোরপূর্বক অংশ গ্রহণ করতেন। বয়রা মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা থাকার সুবাধে তিনি মেয়রকে প্রভাবিত করতেন। মশক নিধন তেল চুরির দায়ে পরপর তিনটি মামলা হয়। প্রতিটি ঘটনার সাথে তিনি জড়িত বলে মামলার আসামীরা জানান। কিন্তু তিনি মেয়রের কাছের লোক হওয়ায় তার অপরাধের ব্যাপারে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না। তিনি কেসিসিতে লোক নিয়োগ দিতেন। কিন্তু নিজ হাতে টাকা নিতেন না। তার স্বামী ওয়াসার সহকারি প্রকৌশলী মারুফুল হকের মাধ্যমে টাকা নিতেন। চাকুরি প্রার্থীরা তার স্বামীর কাছে টাকা জমা দিয়ে দরকষাকষি করতেন। বিগত দিনে চাকুরি না দিতে পেরে কেসিসির গ্যারেজে তুলকালাম ঘটনার জন্ম দিয়েছে এই এ্যানী। কনজারভেন্সী কাজে প্রয়োজনীয় মালামাল নিজে ঠিকাদার সেজে তা ক্রয় করে সরবরাহ করতেন। তার চাকুরিতে দাবিকৃত সনদ না দিয়ে অন্য সনদ দিয়ে চাকুরি নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। নিজ বোন আজমিরাকে অনিয়মভাবে নিজের পিয়ন হিসেবে চাকুরি দিয়েছেন এ্যানী। তার চাকুরি দশম গ্রেডে হওয়ায় তিনি পিওন পাওয়ার যোগ্য নন। মেয়রের সাথে সুসম্পর্ক থাকায় তিনি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে ্ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতেন। এমন কি তিনি নিজ রুমে এসি লাগানোর জন্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। এ্যানী যে রুমটি ব্যবহার করছেন তাও জোর করে দখলে নেন তিনি। ওই রুমে ভিএস দপ্তরের পরীক্ষার ছিল। অথচ আইন অনুযায়ী তিনি এসি পান না। সবাই তার ভয়ে তটস্থ থাকতো। তবে এ্যানী এসব টাকা নেয়ার ব্যাপারে অস্বীকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button