স্থানীয় সংবাদ

আড়ংঘাটা থানা সংলগ্নে গভীর রাতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি!

# রাতে ওই এলাকায় পুলিশীর তৎপরতা থাকা সত্ত্বেও ডাকাতির ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী #
# সংঘবদ্ধ ডাকাত সদস্যরা ৩১লাখ টাকার স্বর্ণালংকারসহ নগদ অর্থ লুট করে নিয়ে গেছে #

স্টাফ রিপোর্টার ঃ নগরীর আড়ংঘাটা থানা সংলগ্নে গাইকুড় কেডিএ আবাসিক এলাকায় বুধবার গভীর রাতে ওই এলাকার দলিল লেখক মো. সাফায়েত হোসেন (রাজু)’র বাড়ীর দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের গ্রীল কেটে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে সংশ্লিষ্ট থানায় অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন ডাকাতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। সংঘবদ্ধ ডাকাতেরা গ্রীল কেটে ওই পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে ৩১ লক্ষ ৩৩ হাজার ৫’শ টাকা মালামাল (স্বর্ণলংকার ও নগদ অর্থ) লুট করে নিয়ে পালিয়ে যায়। আড়ংঘাটা থানা এলাকায় রাতে পুলিশের ব্যাপক তৎপরতা থাকা সত্ত্বেও ওই ডাকাতির ঘটনা ঘটায় এলাকাবাসীর মধ্যে একদিকে যেমন চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে এলাকাবাসী পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তারা জানিয়েছেন, গাইকুড় কেডিএ আবাসিক সংলগ্নে আড়ংঘাটা থানা পুলিশের অবস্থান। এখানে সর্ব সময় পুলিশের উপস্থিতি থাকে। পুলিশের অবস্থান থাকা সত্ত্বেও এতো বড় ডাকাতির ঘটনা ঘটে গেল, এটা মেনে নেওয়া মতো নয়। তাহলে আমরা কতটুকু সুরক্ষিত? তবে পুলিশ বলছে, তারা ইতোমধ্যে ওই ডাকাতির ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার প্রচেষ্টা অব্যহত রেখেছে।
মামলার বাদী জানান, বুধবার দিবাগত রাতে তিনি তার বাড়ীর দ্বিতীয় তলায় নিজ রুমে শুয়ে ছিলেন। ওই দিন দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে হঠাৎ তার রুমে ৩/৪ জন দেশীয় অস্ত্রে সুসজ্জিত মুখোশধারী ডাকাত তার ঘরের ভেতর প্রবেশ করে। তারা (ডাকাতেরা) তাৎক্ষনিক মামলার বাদী সাফায়েত হোসেনের হাত বেঁধে ফেলে। পর্যায়ক্রমে তাকে (বাদীকে) সাথে নিয়ে তার ছোট বোন, মেয়ে ও বোনের হাত বেধে দো-তলার একটি রুমে নিয়ে যায়। তারা বলে আমরা ডাকাত, কোনো প্রকার শব্দ করবেন না। বাদীর স্ত্রীর প্রচন্ড অসুস্থ থাকায় কেবলমাত্র তার হাতটি বাধেনি তাছাড়া পরিবারের বাকি সব সদস্যদের হাত বেধে রাখে। এরপর তারা (ডাকাতেরা) একে একে বাদীর স্ত্রী, মেয়ে, বোন ও বোনের বান্ধবীর গায়ের স্বর্নালংকার খুলে নেয়। স্বর্ণালংকার লুটের পর বাদীর লকার, আলমারী ও মানিব্যাগ হতে নগদ টাকাসহ স্বর্ণালংকারও হাতিয়ে নেয়। সংঘবদ্ধ ডাকাতেরা বাদীর বাড়ী হতে ৩১ লক্ষ ৩৩ হাজার ৫’শ টাকা মালামাল (স্বর্ণলংকার ও নগদ অর্থ) লুট করে। লুটকৃত মালের মধ্যে নগদ অর্থ ৭ লক্ষ ৪৮ হাজার ৫’শ টাকা এবং ২১ ভরি ৮ আনার স্বর্নালংকার রয়েছে। ওই ঘটনার সময় ৩/৪ জন ডাকাত বাদীর দো-তলায় লুটের কার্যক্রম চালায়, ২/৩ জন নীচ তলায় দাঁড়িয়ে ছিল এবং বাকিরা ঘরের বাইরের অবস্থান করছিল। ডাকাতেরা স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুটের পর নিচে নেমে পোশাক পরিবর্তন করে পালিয়ে যাই। তাদের বয়স আনুমানিক ২০/৩০ বছরের মধ্যে হবে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার বাদী পুলিশ প্রশাসনের প্রতি দ্র্রুত সময়ের মধ্যে ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ডাকাতির কাজে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি লুটকৃত মালামাল উদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছেন।
ওই এলাকার বাসিন্দা জাহিদ জানান, আমরা সাধারন মানুষ। আমাদের জানমালের সুরক্ষার দায়িত্ব পুলিশের। দুঃখ জনক বিষয় গত বুধবার দিবাগত রাতে একদল ডাকাত এসে আড়ংঘাটা থানা পাশে থাকা সত্ত্বেও ডাকাতি করে প্রচুর স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ লুট করে নিয়ে গেছে। এ ঘটনা মেনে নেওয়ার মতো নয়। থানা পাশে থাকা সত্ত্বেও এ ঘটনা কিভাবে ঘটে গেল, তাহলে আমরা কতটুকু সুরক্ষিত? মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে ডাকাতির ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত শুরু করেছি এবং প্রযুক্তিগত সহয়তার মাধ্যমে ওই ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতারে সক্ষম হবো বলে আশাবাদী। আসামী গ্রেফতারসহ লুটকৃত মালমাল উদ্ধারে অভিযান অব্যহত আছে।
আড়ংঘাটা থানা অফিসার ইনচার্জ কাজী কামাল হোসেন জানান, আড়ংঘাটা থানাধীন গাইকুড় কেডিএ আবাসিক এলাকায় যে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে ওই খবর শোনা মাত্রই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। ইতোমধ্যে ওই ঘটনায় বাড়ীর মালিক অজ্ঞাতনামা ডাকাতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। আমরা ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছি। আশাবাদী দ্রুত সময়ের মধ্যে ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারসহ লুটকৃত মালামাল উদ্ধারে সক্ষম হবো।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button