মোড়েলগঞ্জে কৃষক হত্যার ঘটনায় অবশেষে আদালতে মামলা দায়ের

বাদীকে হুমকি
বাগেরহাট প্রতিনিধি ঃ বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার চিংড়াখালী ইউনিয়নের ইউপি সদস্যের বাড়ীতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও মারপিট করে কৃষক বাবুল বক্্র (৪৭) কে হত্যার ঘটনায় অবশেষে আদালতে মামলা হয়েছে। নিহতের ১০ দিন পরে আদালতের নির্দেশে শুক্রবার রাতে মোরেলগঞ্জ থানা পুলিশ মামলাটি এজাহার হিসাবে গ্রহন করে। ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১৫-২০জনকে আসামী করে নিহতের ভাইয়ের স্ত্রী জাহানারা বেগম বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। চাঞ্চল্যকর এ হত্যার ঘটনায় থানা পুলিশ মামলা না নেওয়ায় গেল ২৮ আগস্ট বাগেরহাট জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করেন জাহানারা বেগম । নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে ২৯ আগস্ট ওই আদালতের বিচারক মোঃ কামরুল আজাদ মোরেলগঞ্জ থানাকে ৩ দিনের মধ্যে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৬ (৩) ধারা অনুযায়ী মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন। এদিকে মামলা হলেও, বিপাকে পড়েছেন মামলার বাদী ও নিহতের স্বজনরা। আসামীরা প্রতিনিয়ত বাদী ও স্বজনদের হুমকী দিয়ে চলেছেন। চাঞ্চল্যকর কৃষক বাবুল বক্্র হত্যা মামলার আসামীরা হলেন, মোরেলগঞ্জ উপজেলার দক্ষিন চিংড়াখালী এলাকার মোঃ দুলাল বক্্র (২৮), মোঃ মামুন বক্্র (৩৮), মোঃ আবু বক্কার হাওলাদার (৩৬), মোঃ হাচেন হাওলাদার (৪০), মোঃ স্বপন শিকদার (৪৮), মোঃ রমিজ শিকদার ওরফে অপু (৩০) ও মোঃ নাইম খান (২৪)। খুন হওয়া কৃষক মো. বাবুল বক্্র দক্ষিন চিংড়াখালী গ্রামের মৃত মুনসুর বক্্েরর ছেলে ও চিংড়াখালী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ বাদল বক্্েরর ভাই। তার স্ত্রী , ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। মামলার বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ৫ আগস্ট রাতে আসামীরা নিহতের ভাই ইউপি সদস্য বাদল বক্্েরর বাড়িতে লুট করতে আসে। খবর শুনে বাবুল বক্্র বাদলের বাড়ির দিকে রেওনা দেন। লুট শেষে ফেরার পথে আসামীরা বাবুল বক্্রকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে পিরোজপুর হাসপাতালে পরে তার অবস্থা আরও অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিউতে থাকা অবস্থায় ২০ আগস্ট) রাতে মারা যান বাবুল। পরের দিন বিকেলে নিজ বাড়িতে তার দাফন সম্পন্ন হয়। নিহতের ভাই ইউপি সদস্য বাদল বক্্র বলেন, গত ৫ আগষ্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ওই দিন দিবাগত রাত পৌনে ১২ টার দিকে চরগোপালপুর আমার স্ত্রী সংরক্ষিত সদস্য জাহানারা বেগমের বাড়িতে দুলাল বক্্র, স্বপন শিকদার ও মামুন বক্্েরর নেতৃত্বে ২৫-৩০ জনের একটি দূর্বৃত্ত দল পূর্বশত্রুতার জের ধরে ঘরের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে হামলা ও ভাংচুর চালায়। হামলাকারীরা ঘরে থাকা স্বর্ণলংকার, নগদ টাকা, ৮৫ বস্তা সুপারীসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। যাওয়ার পথে আমার বড় ভাই বাবুল বক্্রকে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। পরে আমার ভাই মারা যায়। আমি আমার ভাইয়ের মৃত্যুর বিচার চাই। মামলার বাদী ও সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য জাহানারা বেগম বলেন, আমাদের বাচাঁতে গিয়ে তিনি মারা গেলেন। আমরা থানায় ঘুরেও মামলা করতে পারিনি। আদালতের নির্দেশে পুলিশ মামলা নিলেও, এখনও কোন আসামী গ্রেপ্তার করেনি। উল্টো আসামীরা মামলা তুলে নিতে আমাদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দীন বলেন, আদালতের নির্দেশে আমরা মামলা গ্রহন করেছি। আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।


