খুমেক হাসপাতালের চিকিৎসকদরে জোর করে পদত্যাগ বাধ্য করানো বির্তকিত ডা: মোস্তফা কামাল বহাল তবিয়তে

আতঙ্কের মধ্যে অফিস করছেন ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক
স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনা মেডিকেল কলেজ ( খুমেক) হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ডা: আক্তারুজ্জামানকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে তিনটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য করানো সেই ডা: মোস্তফা কামাল এখনো বহাল তবিয়াতে আছেন। তার বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা। গত মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালের কার্ডিওলোজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা: মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটায়। একই দিনে ৪১ চিকিৎসককে অবাঞ্ছি ও কালো তালিকা করেন। এ ঘটনার পরের দিন বুধবার (৪সেপ্টেম্বর) প্রায় অর্ধশত চিকিৎসকরা হামলা ও জোর করে পদত্যাগ করানোর ভয়ে হাসপাতালে আসেননি। ফলে ওই দিন চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। এরপরেই ড্যাব খুমেক ও হাসপাতাল শাখা এবং ড্যাব খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি ও নিন্দা জানিয়েছেন। একই সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দেলনের সহ-সমন্বয়ক সাজিদুল ইসলাম বাপ্পিও বিবৃতি প্রদান করেন।
খুমেক হাসপাতালের সূত্র মতে, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলোজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে চলতি দায়িত্বে নিয়োজিত ডা: মোস্তফা কামাল নিয়মিত হাসপাতালে আসছেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় পুনরায় এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে অনেকেই অভিমত। কারন ড্যাব খুলনার নেতৃবৃন্দরা ওই দিন হাসপাতালের অনাকাঙ্খিত ঘটনার কারণে ডা: মোস্তফা কামালের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো লোকজনের মারফতে উপ-পরিচালককে বলা হয়, সে যেনো হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে চলে যায়, তা না হলে কিন্তু সমস্যা হবে।
এ ব্যাপারে খুমেক হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ডা: আক্তারুজ্জামান বলেন, আমি একপ্রকার আতংকের মধ্যে দিয়েই অফিস করছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার কাছ থেকে জোর করে তিনটি কাগজে স্বাক্ষর করে নেওয়া সেই কাগজটি ফেরত দেওয়া হয়নি। এমনকি ওই ঘটনার বিষয়ে ডা: মোস্তফা কামাল কোন ধরনের অনুতপ্ত প্রকাশ করেনি। ওই দিন হাসপাতালে মেডিকেল কলেজের যেসব শিক্ষার্থীদের নিয়ে ডা: মোস্তফা কামাল আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে কাজগুলো করছে তারও কোন সুরাহ হয়নি। তিনি বলেন, পুনরায় যে এরকম ঘটনা ঘটবে না তার কি গ্যারেন্টি আছে। কারণ দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি।
হাসপাতালের সূত্র মতে, ডা: মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে হাসপাতালে এক ডাক্তারের চেম্বার ভাংচুর ও তাকে লাঞ্ছিত অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে এ বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়া হয়।
এদিকে হাসপাতালে ওই ঘটনার বিষয়ে বৃহত্তম আমরা খুলনাবাসী এক বিবৃতি উল্লেখ করেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩ সেপ্টেম্বর কেউ কেউ ব্যক্তি স্বার্থ, হাসপাতালের পরিবেশকে অশাস্ত এবং চিকিৎসা সেবা ব্যহৃত করতে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের চিহিৃত করে দ্রুত ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছিলেন।
এ ব্যাপারে বুধবার রাত সোয়া ৯টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলোজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে চলতি দায়িত্বে নিয়োজিত ডা: মোস্তফা কামালকে তার ব্যবহৃত মোবাইলে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ( ৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে মেডিকেল কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থীকে নিয়ে উপস্থিত হয় কার্ডিওলোজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মোস্তফা কামাল। তিনি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত এমন ৪১ জন চিকিৎসক একটি তালিকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে এতে আতংকে ভয়ে ৩টি কাগজেই স্বাক্ষর করেন ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আক্তারুজ্জামান। এই ৪১ জন চিকিৎসকের মধ্যে পরিচালক, উপ-পরিচালক, সহকারী পরিচালক, আরএস, আরএমও, রেজিস্ট্রারসহ গুরুত্বপূর্ণ সকল পোষ্টের চিকিৎসক রয়েছেন।