যশোর জেলা পরিষদের ৬০ হাজার টাকা মূল্যের রেন্ট্রি গাছ চুরির বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে

মোঃ মোকাদ্দেছুর রহমান রকি যশোর থেকে ঃ
জেলা পরিষদের মালিকানাধীন ৬০ হাজার টাকা মূল্যের রেন্ট্র্রিগাছ চুরি হওয়া নিয়ে খোদ জেলা পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে নানা গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমে গাছ বিক্রি করে দিয়ে তা ধরা পরার পর নিজে বাঁচার জন্য খোদ গাছ ক্রেতা দু’জনকে বলি দিতে একটু দ্বিধা করা হয়নি। তাছাড়া,গাছের মূল অংশ হাতে পেয়েও তা উদ্ধারে তেমন কোন ভূমিকা না রাখায় ঘটনাটি চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। তাছাড়া, যে পদ মর্যাদা ব্যবহার করে বাদি হয়ে কোতয়ালি থানায় মামলা করেছেন এমন পদ জেলা পরিষদে আছে কিনা তা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানেন না। তবে গাছ চুরির বিষয় দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা পরিষদের কয়েকজন কর্মচারী জানান,গত ৮ সেপ্টেম্বর রোববার দুপুর আনুমানিক আড়াইটার সময় যশোর সদর উপজেলার শেখহাটি-তালবাড়ীয়া পাকা সড়কের পাশে তরফ নওয়াপাড়া মৌজায় যশোর জেলা পরিষদের মালিকানাধীন সড়কের সীমানার মধ্যে সরকারীভাবে রোপণ করা বড় ধরনের ১টি রেন্ট্রিগাছ অবৈধভাবে ও চুরি করে কাটা হচ্ছে এমন খবরের ভিত্তিতে তৎক্ষনিকভাবে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ জানতে পেরে ওই দিন বিকাল ৩ টায় জেলা পরিষদের বৃদ্ধ সংরক্ষনের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মচারী দাবিদার আশরাফ হোসেনসহ জেলা পরিষদের ৪ জন উক্ত গাছের কাছে পৌছান। সেখানে পৌছানোর পর বাদি জানতে পারেন সদর উপজেলার শেখহাটি গ্রামের ইব্রাহীম বিশ^াসের কাছ থেকে একই গ্রামের আশরাফুল ইসলাম রেন্ট্রি গাছটি ৪০ হাজার টাকায় কেনেন। যা বাদি ও তার লোকজনের সামনে ৫/৬ জন শ্রমিক গাছটি কাটছে। বাদি মামলায় উল্লেখ করেন,বাদি ঘটনাস্থলে পৌছানোর আগেই রেন্ট্রিগাছটির মূল্যবান বড় বড় ডাল ও জ¦ালানী অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে গেছে। অবৈধভাবে ও প্রকাশ্যে চুরি করে কাটা রেন্ট্রি গাছটির মূল গুড়ি,লগ ঘটনাস্থলে পড়ে থাকায় বাদি জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোঃ আছাদুজ্জামানকে না জানিয়ে জেলা পরিষদ ভবনে না এনে ঘটনাস্থলের আশপাশে স্থানীয় লোকজনের কাছে জিম্মায় প্রদানের চেষ্টা করলেও আসামীদের ভয়ে কেউ জিম্মায় গ্রহন করেননি বলে বাদি মামলায় উল্লেখ করেন। অথচ জেলা পরিষদের একজন কর্মচারীর বাড়ি ঘটনাস্থলের অদূরে। সূত্রগুলো বলেছেন, বাদি জেলা পরিষদের একজন ইলেকট্রিশিয়ান পদে কর্মরত। মামলায় বাদি উল্লেখ করেন জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা লুৎফর রহমান, সার্ভেয়ার আল আমিন ও জেলা পরিষদের দারোয়ান কাম- কেয়ার টেকার আসাদুল ইসলামকে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছালেও অন্য দু’জন কাউকে বাদি না করে ইলেট্রিশিয়ান আশরাফ হোসেন বাদি হয়ে ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। কোতয়ালি থানার মামলা নং ৩০,তারিখ ১০/০৯/২৪ ইং ধারা ৩৭৯/৪২৭ পেনাল কোড। উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালি থানার এসআই অনুপ কুমার দাস। মামলা হওয়ার গত ২৪ ঘন্টায় এজাহার নামীয় আসামী ইব্রাহিম বিশ^াস ও আশরাফুল ইসলামকে গ্রেফতার করতে পারেনি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। তাছাড়া, গাছটির মূল গুড়ি ও লগ ৯ সেপ্টেম্বর রাতে ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ কাজের সাথে জেলা পরিষদের কেউ জড়িত নইলে গাছের মূল অংশ ঘটনাস্থলে থাকলেও উদ্ধার করে হেফাজতে না আনায় ঘটনার ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহের সৃষ্টি করেছেন। রেন্ট্রি গাছ চুরি সংক্রান্ত ব্যাপারে জেলা পরিষদের প্রাধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আছাদুজ্জামানের কাছে এ প্রতিবেদক জানতে চাইলে তিনি বলেন,গাছ চুরি সংক্রান্তর ব্যাপারে জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী ওহিদুজ্জামান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত লুৎফর রহমানকে সদদ্য করে দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। তারা রিপোর্ট দেয়ার পর জেলা পরিষদের কেউ গাছ চুরির সাথে জড়িত প্রমান হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।