মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আরবের বুকে বৈপ্লবিক সংস্কার সাধন করে বিশ্বের ইতিহাসে অতুলনীয় খ্যাতি অর্জন করেন

খুলনা বারের সীরাতুন্নবী (সা.) এর আলোচনা সভা
খবর বিজ্ঞপ্তি ঃ খুলনা বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপ রেজিস্ট্রার মাওলানা গুলজার হুসাইন বলেন, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন একজন মহান সমাজ সংস্কারক। প্রাক- ইসলামী যুগে আরবের সামাজিক অবস্থা ছিল অত্যন্ত শোচনীয়। গোত্র কলহ, যুদ্ধ-বিগ্রহ, মারামারি, হানাহানি, সামাজিক বিশৃঙ্খলার নৈরাজ্য পূর্ণ অবস্থার মধ্যে নিপতিত ছিল গোটা সমাজ। তিনি বলেন, সামাজিক সাম্য-শৃঙ্খলা, ভদ্রতা, সৌজন্যবোধ, নারীর মর্যাদা ইত্যাদির কোনো স্থায়িত্বই ছিল না। জঘন্য দাসত্ব প্রথা, সুদ, ঘুষ, জুয়া- মদ, লুন্ঠন, ব্যভিচার, পাপাচার, অন্যায়-অত্যাচারের চরম তান্ডবতায় সমাজ কাঠামো ধসে পড়েছিল, এমন এক দুর্যোগময় যুগে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর আবির্ভাব। তিনি আরবের বুকে বৈপ্লবিক সংস্কার সাধন করে বিশ্বের ইতিহাসে অতুলনীয় খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি সেই অন্ধকারাচ্ছন্ন সমাজকে নবুওতের আলোকে উদ্ভাসিত করেন। সীরাতুন্নবী (সা.) উদযাপন কমিটি খুলনা বার কর্তৃক আয়োজিত বর্তমান বিশ্বে সমাজ সংস্কারক রাসুল (সা.) শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। এ্যাডভোকেট এম এম মুজিবুর রহমান এর সভাপতিত্বে এবং এ্যাডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্লা এর পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথি মাওলানা আব্দুল গফফার। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতি এর সাবেক সভাপতি ও আইনজীবী পরিচালনা পরিষদের সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট শেখ নুরুল হাসান রুবা। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- এ্যাডভোকেট সরদার রজব আলী, এ্যাডভোকেট লষ্কর শাহ আলম। উপস্থিত ছিলেন- এ ভোকেট জি এম আমান উল্লাহ, এ্যাডভোকেট আনছার উদ্দিন, এ্যাডভোকেট মোঃ আকরাম হোসেন, এ্যাডভোকেট সরদার লিয়াকত আলী, এ্যাডভোকেট আইয়ুব আলী শেখ, এ্যাডভোকেট আওছাফুর রহমান, এ্যাডভোকেট খান লিয়াকত আলী, এ্যাডভোকেট ইদ্রিস আলী, এ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান মালী ও এ্যাডভোকেট শামসুল হক প্রমুখ। বক্তারা বলেন, সমগ্র আরবদেশ জঘন্য পাপ ও অজ্ঞানতার অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। এই অন্ধকারাচ্ছন্ন সমাজে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)সাম্য অকৃত্রিম ভ্রাতৃত্ব এবং বিশ্বমানবতার ভিত্তিতে যে এক উন্নত ও আদর্শ সমাজব্যবস্থার প্রবর্তন করেন পৃথিবীর ইতিহাসে তার কোনো নজির নেই। তার প্রবর্তিত সমাজে গোত্রের বা রক্তের সম্পর্কের চেয়ে ঈমানের বন্ধনই ছিল মজবুত ঐক্যের প্রতীক। তিনি অন্ধ অভিজাত্যের গৌরব ও বংশ মর্যাদায় গর্বের মূল নির্মমভাবে কুঠারাঘাত হানেন এবং সাম্য ও ন্যায় এর ভিত্তিতে আদর্শ সমাজ কাঠামো প্রস্তুত করেন। বক্তারা আরও বলেন, মানুষের মাঝে শ্রেষ্ঠ সেই ব্যক্তি, যিনি আল্লাহর সবদিকে অনুগত ও মানুষের সর্বাধিক কল্যাণকামী। তার সমাজ ব্যবস্থায় উঁচু-নিচু, ধনী-দরিদ্র, কালো সাদার বৈষম্য রইল না। মানুষে মানুষে সকল প্রকার অসাম্য ও ভেদাভেদ দূরীভূত করে মানবতার অতুজ্জ্বল আদর্শে সমাজ বন্ধন সুদৃঢ় করেন। আরবের ইতিহাসে রক্তের পরিবর্তে শুধু ধর্মের ভিত্তিতে সমাজ গঠনের ইহাই প্রথম দৃষ্টান্ত।