স্থানীয় সংবাদ

সাতক্ষীরা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের ডিডি হাশেম আলী বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

# বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম-সা:সম্পাদক #
# দুর্র্ণীতির মাধ্যমে গড়েছে অঢেল সম্পদ

স্টাফ রিপোর্টার ঃ সাতক্ষীরা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: হাশেম আলীর বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ পাওয়া গেছে। বঙ্গবন্ধু পরিষদ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের শাখার অনুমোদিত কমিটির ১৯নং তালিকায় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছে তার নাম। এই ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সাতক্ষীরা জেলাতইে রয়েছেন ৮ বছর। নেতৃত্ব দিয়েছেন বদলী বানিজ্য, কমিশন বানিজ্য এবং খুলনা বিভাগের মাদক চোরাচালানের অর্থ ভাগবাটোয়ারের। কালো টাকা সাদা করার কৌশল হিসেবে সরকারি চাকরি অবস্থায় খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে হালিমা ডেইরি ফার্ম এবং হালিমা পোল্ট্রি ফার্ম নামে করেছেন দুটি ট্রেড লাইসেন্স। গোপনে আরও একটি বিয়েও করেছেন বলে জানা যায়। বঙ্গবন্ধু পরিষদে তার নামের তালিকা ও আয়কর জমা দেওয়া রিটার্ণ কাগজ ও তার নামে ট্রেড লাইসেন্স কপি এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: হাশেম আলী এ প্রতিবেদককে বলেন, বঙ্গবন্ধু পরিষদে তিনি কেউ না। সরকারি চাকরি থাকা অবস্থায় নিজের নামে ট্রেড লাইসেন্স ও ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন কি না জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। এছাড়া তিনি দ্বীতিয় বিয়ের কথাও অস্বীকার করেন। তার এসব বক্তব্য নেওয়ার পরই হাশেম আলী বিভিন্ন জায়গায় দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী সরকার আমলে বঙ্গবন্ধু পরিষদে তার নাম স্থান পাওয়ার পর থেকেই গত কয়েক বছরে শেখ মো: হাশেম আলী কোটি টাকার সম্পত্তি গড়েছেন। নামে-বেনামে গড়েছেন অঢেল সম্পত্তি। যার ইনকাম ট্যাক্সের বৈধতা দেখাতে করেছেন ট্রেড লাইসেন্স। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে হালিমা ডেইরি ফার্ম এবং হালিমা পোল্ট্রি ফার্ম নামে করেছেন দুটি ট্রেড লাইসেন্স। কিন্তু বাস্তবে এমন কোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। অর্থ সম্পত্তি গড়েছেন নিজের নামে , স্ত্রীর নামে এবং ভাইদের নামে।
জানা গেছে, সাতক্ষীরা জেলায় হাশেমের ইশারায় চলে মাদক ব্যবসা। ফেনসিডিল, ইয়াবা এবং ট্যাপেন্ডাল ট্যাবলেটের অবৈধ ব্যবসার অদৃশ্যমান নিয়ন্ত্রক হাশেম আলী। হাশেম আলী নিজেই শেল্টার দেন মাদক ব্যবসায়ীদের। মাদক ব্যবসায়ীদের শেল্টার দিয়ে অনেক টাকা উপার্জন করেছেন। যা দিয়েই গড়েছেন অঢেল সম্পত্তি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মকর্তারা বলেন, শেখ মো. হাশেম আলী একজন রাঘব বোয়াল কর্মকর্তা। এক সাতক্ষীরা জেলাতেই তিনি দীর্ঘ প্রায় ৮ বছর ধরে রয়েছেন । তাকে বদলী করলেও ৪-৫ মাস না জেতেই সাতক্ষীরায় ফিরে আসেন। তার বিরুদ্ধে কখনো অভিযোগ দিয়ে লাভ হতো না। উল্টো অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে নেওয়া হতো ব্যবস্থা। এ কারনে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে কেউ চান না। ওই কর্মকর্তা বলেন. উর্ধতন কর্তৃপক্ষের লোকজনই বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভয়ে আতংকে থাকেন। আর সে পরিষদের হর্তাকর্তা হাশেম আলী। মন্ত্রনালয় দিয়েই এ পরিষদের সিন্ডিকেট চলতো। অন্য কর্মকর্তারা তো মামুলি বিষয় তাদের কাছে। তিনি বলেন, দেখুন এমন অনিয়ম এবং দুর্নীতি সারাদেশ জুড়ে হয়েছে। তবে হাশেম আলী নিজেই চার-পাঁচটা জেলার মাদক ব্যবসার সিন্ডিকেট চালিয়ে গেছেন। দপ্তরের কেউ তার পথের কাটা হলে হাশেম সাহেব ঢাকায় গেলেই সব ঠিক হয়ে যেতো। এমনকি বদলী বানিজ্যের সাথে তিনি ওতপেপ্রভাবে জড়িত ছিলেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এএসআই নুরুজ্জামানের মাধ্যমে মাগুরা , যশোর, খুলনা , ঝিনাইদহ এবং সাতক্ষীরা জেলা নিয়ন্ত্রন করেন হাশেম আলী। খুলনা বিভাগকে নিয়ন্ত্রন করতে নুরুজ্জামানের কর্মস্থল মাগুরা জেলায় হলেও তাকে খুলনা বিভাগীয় মাদক নিয়ন্ত্রনের দপ্তরে বসিয়েছেন হাশেম আলী। পরে এ বিষয়েও পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর পরই ওই হাশেম আলীর তদবিরে এএসআই নুরুজ্জামানকে খুলনায় অফিসে কাজ করার অনুমতি দেন কর্তৃপক্ষ। ঢাকার প্রধান কার্যালয় থেকে প্রেরিত সকল খবর নুরুজ্জামানের মাধ্যমে পান হাশেম আলী। হাশেম আলীর ভয়ে কয়েকটি জেলার কর্মকর্তারই আতঙ্কিত থাকেন। মাদকের বড় চোরাচালান কোন দপ্তর ধরলেও হাশেমের কথায় ছেড়ে দিতে হতো। কেউ না শুনলে তাকে বদলী হয়ে অন্যত্র চলে যেতে হতো। হাশেম আলীর চোখে কেউ খারাপ হলেই তাকে হয়রানির শিকার হতে হয়। আর অন্যান্য জেলার ফিল্ডের অবৈধ টাকা কালেকশনের ভাগ নুরুজ্জামানের মাধ্যমেই হাশেম আলী পান।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button