নগরীর সবজি বাজার অসহনীয়!

# ভারী বর্ষণে ফসল নষ্টের কারণে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি : অভিযোগ ক্রেতাদের #
# সবজি কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন নি¤œ ও স্বল্প আয়ের মানুষ #
মোঃ আশিকুর রহমান ঃ নগরীর সবজি বাজারগুলোতে অস্থির অবস্থা বিরাজ করছে। বিগত কয়েকদিন ধরে সবজি দাম উর্ধ্বমুখি। বাজারে আসা ক্রেতারা সবজি কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। নগরীর সবজি বাজার ঘুরে জানা গেছে, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কৃষকের ক্ষেত ডুবে গেছে, যে কারণে কৃষকের উৎপাদিত সবজি ব্যাপক পরিমানে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। একই সাথে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে স্থানীয় এলাকার ঘের পাড়ের সবজির নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে বাজারে বর্তমানে সবজির সরবরাহ চাহিদার তুলনায় কম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাজারে আসা ক্রেতারা বলছেন, বাজারে যে কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্য কিনতে গেলে তার পেছনে সিন্ডিকেট আছে। কয়েকদিন টানা বৃষ্টি হলে ভারী বৃষ্টিপাত, গরমের সময়ে তাপদাহ শুরু হলে, খড়ার কারণে সবজির ক্ষতি এসব কারণ সারা বছর লেগে থাকে। এ সকল কারণ পুজি করে ব্যবসায়ীরা সারা বছর দিব্বি ব্যবসা করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) নগরীর সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন ১২০ টাকা, উচ্ছে ৯০ টাকা, পাতা কপি ৯০ টাকা, ফুলকপি ১২০ টাকা, বরবটি সীম ১২০ টাকা, কঁচুর লতি ৮০ টাকা, কঁচুরমুখি ৭০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৬০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকা, শষা ৮০ টাকা, পটল ৭০ টাকা, পেপে ৪০ টাকা, কুশি ৭০ টাকা, পুইশাক ৫০ টাকা, লালশাক ৮০ টাকা, ঢেড়শ প্রতি কেজি ৮০টাকা, লাউ প্রতি পিছ ৬০ টাকা, জালি প্রতি পিছ ৭০ টাকা, কলা প্রতি হালি ৬০টাকা, ওল ৮০ টাকা, ধুন্দল ৬০, টমেটো ১৫০ টাকা, গাজর ২০০ টাকা, কাঁচামরিচ ২৫০ টাকা, বিক্রি হচ্ছে। থেমে নেই পেয়াজ ও আলুর দামও।
নগরীর খুচরা বাজারের একাধীক ব্যবসায়ীরা জানিয়েছে, বিভিন্ন জেলা শহর হতে খুলনার বাজারে সবজি সরবরাহ হয়ে থাকে। একই সাথে খুলনার স্থানীয় অঞ্চলগুলো হতেও সবজি সরবরাহ হয়ে থাকে নগরীর পাইকারী বাজার গুলোতে। মুকামে বর্তমানে সবজি বাড়তি দামে কেনা লাগছে, কারণ কয়েকদিনের লাগাতার বৃষ্টির কারনে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, ফলে বাজারে চাহিদার তুলনায় বর্তমানে সবজির সরবরাহ কিছুটা কম। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, পাইকারী বাজার হতে যে দামে সবজি কিনি, ক্রেতাদের নিকট কেজি প্রতি ৮/১০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করি, তার মধ্যে তো খরচ-খরচা আছে।
অপরদিকে বাজারে আসা ক্রেতা সাধারনত জানিয়েছেন, বিক্রেতা যে অজুহাতে সবজির বাড়তি দাম নিচ্ছে এটা রীতিমতো ডাকাতিরই মতো। কারন একটু বৃষ্টি বেশি হলে কৃষকের ক্ষেত নষ্টের কারনে ফসল ডুবে গেছে, বৃষ্টি না হলে পানির অভাবে ফসল হচ্ছে না। একটা না একটা অজুহাত দেখিয়ে তারা সারা বছরই ক্রেতাদের জিম্মি করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাজার সঠিক মনিটরিং না হওয়ার কারনেই এমন অবস্থা বলে ক্রেতাদের দাবি। ক্রেতা সোহেল রানা জানান, সবজি বাজারে যথেষ্ট আমদানী বা সরবরাহ রয়েছে, তবে দাম আকাশ ছোয়া। ৬০/৭০ টাকার নিচে কেজির কোনো সবজির দাম নেই। এক’শ টাকা নিয়ে সবজি বাজারে ঢুকলে মাত্র দু’প্রকার সবজিও কেনা যাচ্ছে না, আর মাছ-মাংস, চাল-ডাল তো পরেই থাকলো। সাধারন মানুষ বাচবে কি করে? দাম বাড়তির কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতাদের অজুহাতের শেষ নেই। নানা অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের চোখে ধূলা দিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে সমান তালে। অপর ক্রেতা সুমন জানান, বাজারে কাচা সবজির গায়ে যেন আগুন লেগেছে। সামান্য কাচা মরিচ তাও ২৫০ টাকা কেজি। অন্যান্য সবজিও একই অবস্থা, দাম বেশি। আমরা সাধারণ নি¤œ আয়ের মানুষ যাবো কোথায়? বাজার করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি।
সবজি ব্যবসায়ী মিঠু জানান, আমরা খুরচা বিক্রিতারা পাইকারী বাজার হতে যে দামে সবজি কিনি, খরচ-খরচা বাদে কেজি প্রতি ৮/১০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করি। কারন সেই ভোর রাত হতে দিনজুড়ে তীব্র গরমের মধ্যে বসে সবজি বিক্রি করি। বাজারে সবজির দাম একটু বাড়তি, মুকামে বর্তমানে সবজি বাড়তি দামে কেনা লাগছে বলে জানিয়েছেন ব্যপারীরা। কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টির কারণে নষ্ট হয়েছে অনেক ক্ষেতের ফসল। বর্তমানে চাহিদার তুলনায় ফসলের উৎপাদন বেশ কমেছে। কেসিসি’র বাজার সুপার শেখ শফিকুল হাসান জানান, উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা, বাজার মনিটরিং করে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।