বিলডাকাতিয়ার জলাবদ্ধতা নিরসনে শৈলমারী গেটের পলি অপসারণ শুরু

# দেরীতে উদ্যোগ নেয়ায় কৃষকদের ক্ষোভ #

স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনার ঐতিহ্যবাহী বিলডাকাতিয়ার জলাবদ্ধতা নিরসনে শৈলমারী রেগুলেটরের মুখে পলি অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুটি ‘লং বুম ভেকু’ দিয়ে গেটের মুখে পলি অপসারণের কাজ শুরু করেছে খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ড। জানা যায়, এক সময়ের প্রবল খরস্রোতা শৈলমারী নদীর অস্তিত্ব বর্তমানে হুমকির মুখে পড়েছে। পলি ভরাট হয়ে প্রায় সমতল ভূমিতে রূপ নিয়েছে। নদীর সাথে সংযুক্ত অধিকাংশ স্লুইজ গেটের জল কপাট বন্ধ হয়ে গেছে। যার ফলে এ নদী সম্পর্কিত ডুমুরিয়া ও বটিয়াঘাটা এলাকায় জলাবদ্ধতা যেন নিত্য দিনের সাথী হয়ে পড়েছে। গত কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিতে আবারো জলাবদ্ধতার ইঙ্গিত দিচ্ছে প্রকৃতি। ইতিমধ্যে অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। তাই রেগুলেটরের জল কপাট চালু করার লক্ষে পলি অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ডুমুরিয়া উপজেলা পানি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক জিএম আমান উল্লাহ জানান, ‘গেটের মুখে পলি অপসারণের কাজ আরো আগে করার প্রয়োজন ছিলো। তাহলে জলাবদ্ধতার হুমকিতে পড়তে হতো না। যদিও শৈলমারি রেগুলেটরে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন দু’টি পাম্প চালু হয়েছে প্রায় দেড় মাস আগে। কিন্তু বৃহৎ এই অঞ্চলের পানি নিষ্কাশন পাম্প দিয়ে সম্ভব না। প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করাটা খুবই কঠিন। অতিদ্রুত গেটের জল কপাট চালু করার ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে শ্রাবণে ভারি বৃষ্টিপাত হলে এই অঞ্চল ভেসে যাবে। ইতিমধ্যে রংপুর, আড়ংঘাটা, ডাকাতিয়া, খর্ণিয়া ও রুদাঘরা ইউনিয়নের অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।’ স্থানীয় ব্যবসায়ী প্রফুল্ল কুমার রায় জানান, যখন থেকে পাম্প চালু হয়েছে তখন থেকে পলি অপসারণের কাজ করতে হতো। তাহলে পাম্পের পানির স্রোতে পলি কেটে নদীর গভীরতা তৈরি হতো। কিন্তু এখন বর্ষার সময় দ্রুত গেট সচল করতে না পারলে নি¤œাঞ্চল আবারো তলিয়ে যাবে।
বিল ডাকাতিয়ার কৃষক বাকি উল্লাহ ঢালী বলেন, বিলে স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে এবার কেউ ধান চাষ করেনি। তবে অনেকে ঘেরে মাছ চাষ করলেও বৃষ্টির পানিতে তা ডুবে গেছে। তার নিজের দু’টি ঘের রয়েছে। তাও পানিতে ডুবে গেছে। এতে তার প্রচুর ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে এখন আর পানি সরিয়ে লাভ কি ক্ষতি যা হওয়ার তা তো আগেই হয়ে গেছে। সরকারের পক্ষ থেকে বিলের পানি সরানোর জন্য আগে ভাগে উদ্যোগ নেয়া উচিত ছিল বলে তিনি জানান।
খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডি আতিকুর রহমান জানান, বিল ডাকাতিয়ার জলাবদ্ধতা নিরসনে ৩৫ কিউসেক ক্ষমতা সম্পন্ন দু’টি পাম্প সর্বদা চালু রয়েছে। তাছাড়া গেটের মুখে ভরাটকৃত পলি অপসারণের জন্য দুটি লং বুম স্কেভেটর দিয়ে খনন কাজ শুরু করা হয়েছে। দু’এক দিনের মধ্যে ভাসমান স্কেভেটর আসবে। পলি অপসারণ হলে গেটের জল কপাট খুলে দেয়া হবে।
তিনি আরো বলেছেন, প্রায় ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দের ‘শৈলমারি নদী খনন’ প্রকল্পটি পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষমান রয়েছে। ওই প্রকল্পের মধ্যে শৈলমারি রেগুলেটরে আরো ৩টি এবং রামদিয়া রেগুলেটরে ২টি একই ক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প বরাদ্দ রয়েছে।
বেলার বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, বিল ডাকাতিয়ার জলাবদ্ধতা দুর করতে তারা কাজ করছেন।