খুলনায় ভোক্তা অধিকারের অভিযান : ১৭ প্রতিষ্ঠানকে ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা জরিমানা

# জনস্বার্থে অভিযান অব্যহত রাখার আশ^াস সংশ্লিস্টদের #

স্টাফ রিপোর্টার : খুলনার নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রন রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়াধীন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় ও খুলনা বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন জেলা কার্যালয় সমূহ নিয়মিত বাজার তদারকিসহ অভিযান অব্যহত রয়েছে। ওই ধারাবাহিকতায় সোমবার (১০ নভেম্বর) ভোক্তা অধিকারের ১১ টিম তদারকিমূলক অভিযান পরিচালনা করে। এসময়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসমূহের বাজার দর ও ক্রয় ভাউচার যাচাই করা হয় এবং সকল ব্যবসায়ীকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রির নির্দেশনা দেয়া হয়। তদারকিকালে সরকার নির্ধারিত মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয় এবং কেউ সরকার নির্ধারিত মূল্যের থেকে বেশি মূল্য নিলে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুশিয়ারি দেন সংশ্লিস্টরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে গেছে, খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ সেলিমের নেতৃত্বে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানার সবুজবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে শেফা মেডিকেল কে যথাযথ পন্য সরবরাহ না করার অপরাধে ১০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক দিনারা জামানের নেতৃত্বে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানার এম এ বারি সড়ক এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ প্রক্রিয়ায় খাদ্য উৎপাদন করার অপরাধে আল্লার দান হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট কে ৩ হাজার টাকা, খান ফার্মেসি কে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ সংরক্ষণ ও বিক্রয় করার অপরাধে ১ হাজার ৫ শত টাকা এবং হেলথ কেয়ার হোমিও সেন্টার কে যথাযথ পন্য সরবরাহ না করার অপরাধে ২ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়।

খুলনা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ওয়ালিদ বিন হাবিব এর নেতৃত্বে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে মেসার্স ভাই ভাই স্টোরকে যথাযথ পন্য সরবরাহ না করার অপরাধে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। মাগুরা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ সজল আহম্মেদ এর নেতৃত্বে সদর উপজেলার ডেফুলিয়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে মেসার্স মনিরুল স্টোরকে পণ্যের মোড়ক যথাযথ ব্যবহার না করা, মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা ও মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য সংরক্ষণ ও বিক্রয় করার অপরাধে ১০হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সাতক্ষীরা জেলা কার্যালয়ে সহকারী পরিচালক মোঃ মেহেদী হাসান তানভীর এর নেতৃত্বে সদর উপজেলার পাটকেলঘাটা বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে আল মদিনা ফুড প্রোডাক্ট কে অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন করার অপরাধে ৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কুষ্টিয়া জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ মাসুম আলী এর নেতৃত্বে সদর উপজেলার ভাদালিয়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে কুমারখালি মিষ্টান্ন ভা-ারকে পণ্যের মোড়ক যথাযথ ব্যবহার না করা ও মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করার অপরাধে ৩ হাজার টাকা এবং নাহিদ ফার্মেসিকে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ সংরক্ষণ ও বিক্রয় করার অপরাধে ২ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়।
যশোর জেলা কার্যালয়ে সহকারী পরিচালক মোঃ সেলিমুজ্জামানের নেতৃত্বে সদর উপজেলার বড় বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভোজন বিলাশ রেস্তোরাঁ কে অবৈধ প্রক্রিয়ায় খাদ্য উৎপাদন করার অপরাধে ১০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। ঝিনাইদহ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নিশাত মেহের এর নেতৃত্বে সদর উপজেলার আরাপপুর বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ প্রক্রিয়ায় খাদ্য উৎপাদন করার অপরাধে মরিয়ম এন্টারপ্রাইজ কে ৩ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। নড়াইল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জনাব শামীম হাসান এর নেতৃত্বে সদর উপজেলার রূপগঞ্জ বাজারে অভিযান চালিয়ে মেসার্স মুকুল এন্টারপ্রাইজকে পণ্যের মোড়ক যথাযথ ব্যবহার না করা ও মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য সংরক্ষণ ও বিক্রয় করার অপরাধে ২ হাজার টাকা এবং মেসার্স রং বিতান কে পণ্যের মোড়ক যথাযথ ব্যবহার না করার অপরাধে ২ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। মেহেরপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুল হাসান এর নেতৃত্বে সদর উপজেলার সদর বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে পণ্যের মোড়ক যথাযথ ব্যবহার না করা, মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা ও মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য সংরক্ষণ ও বিক্রয় করার অপরাধে মেসার্স লাভলু স্টোর কে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। বাগেরহাট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শরিফা সুলতানা এর নেতৃত্বে চিতলমারী উপজেলার চিতলমারী বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ পণ্য বিক্রয় করার অপরাধে সিয়াম কসমেটিকসকে ২ হাজার টাকা, সোহেল কসমেটিকসকে ৩ হাজার টাকা এবং রমজান কসমেটিকসকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। তদারকিকালে সরকার নির্ধারিত মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয় এবং কেউ সরকার নির্ধারিত মূল্যের থেকে বেশি মূল্য নিলে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুশিয়ারি দেন সংশ্লিষ্টরা। অভিযান চলাকালে ব্যবসায়ীদেরকে সচেতন করার পাশাপাশি বাধ্যতামূলকভাবে মূল্য তালিকা দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন ও ক্রয়-বিক্রয় ভাউচার সংরক্ষণ এবং নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রি করার নির্দেশনা দেয়া হয়। অভিযানে ১৭ টি প্রতিষ্ঠানকে ১ লক্ষ ৫ হাজার ৫ শত টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয় । জনস্বার্থে অভিযান অব্যাহত রাখার আশ্বাস সংশ্লিস্টদের।
এ ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মাদ সেলিম জানান, খুলনার বাজারে আমাদের নিয়মিত তদারকিসহ অভিযান অব্যহত আছে। ভোক্তার অধিকার লঙ্ঘিত করলে ওই ব্যবসায়ী বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা হিসাবে জরিমানা আরোপসহ আদায় করা হচ্ছে। খুলনার বাজার সমূহে কোনো ব্যবসায়ী বা প্রতিষ্ঠান সরকার প্রদত্ত নিয়মনীতির বাইরে ব্যবসা পরিচালনা করলে তাদের ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। জনস্বার্থে আমাদের কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।