কোটা-শিক্ষকদের আন্দোলনে ভর করবে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের
প্রবাহ রিপোর্ট : চলমান কোটাবিরোধী ও শিক্ষকদের আন্দোলনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি এখন শিক্ষকদের আন্দোলনের ওপর ভর করবে। আবার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করবে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, এখন জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। কে শোনে জাতিসংঘের কথা? গতকাল শনিবার রাজধানীর বেইলি রোডে শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য ও গবেষণা কেন্দ্রে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সাত দিনব্যাপী পাহাড়ি ফল মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। বিএনপি খালেদা জিয়াকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে আন্দোলনের ইস্যু খুঁজছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, নিজেদের কোনো অস্তিত্ব নেই। নির্বাচনে যায়নি। আন্দোলনে ব্যর্থ। এখন বিএনপির কাজই হচ্ছে অন্যান্যের ইস্যুর ওপর ভর করা। কোটাবিরোধী আন্দোলনের বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা তো (কোটা) কোর্টের রায়ের ব্যাপার। আমরা তো কোথাও এই কোটা রাখিনি। আমাদের ব্যবস্থা ছিল কোটামুক্ত। আদালতে কারা মামলা করেছে? আদালতের রায়। সেখানে আমাদের কী বলার আছে? সরকারের কী দোষ? সরকার তো এটা করেনি। খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। কে শোনে জাতিসংঘের কথা? গাজায় ইসরায়েল শোনে? দেশে দেশে যুদ্ধ। জাতিসংঘের কথায় কী যুদ্ধ বন্ধ হয়েছে? জাতিসংঘ দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। এটা আইনের ব্যাপার। আইনমন্ত্রী খোলাসা করেছেন। আমি নতুন করে কিছু বলতে চাই না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জনসংহতি নেতা সন্তু লারমার সঙ্গে বৈঠক করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, তাকে বলেছি শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন সম্পন্ন হতে সময় লাগবে। কারণ সেখানে মূল সমস্যা হচ্ছে ভূমি। এর সমাধান অত সহজ না। তা ছাড়া গত ১৬ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রাম বদলে গেছে। যেদিকে যাই শুধু উন্নয়ন চোখে পড়ে। আজ পাহাড়ি এলাকায় সীমান্ত সড়ক হচ্ছে। সেনাবাহিনী কাজট করেছে। শেখ হাসিনা থাকলে আপনাদের সব সমস্যার সমাধান হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুর এই পলিসি শেখ হাসিনার পলিসি। এই পলিসি আমরা ফলো করি। ভারত আমাদের ৭১ সালের পরীক্ষিত বন্ধু। ’৭১ সালের রক্তের রাখী বন্ধনে আমাদের এই সম্পর্ক আবদ্ধ। এ সময় মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সৈন্যদের সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন কাদের। একইসঙ্গে ছিটমহল বিনিময়, আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা বিজয়সহ বিভিন্ন কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দুঃসময়ের বন্ধুদের আমরা ভুলে যেতে পারি না। তিনি বলেন, সম্পর্ক ভালো থাকলে আলাপ আলোচনা করে সমাধান করা যায়। আর এসব সমাধান কেন হয়েছে, ২৫ বছরের মৈত্রী চুক্তি। এই চুক্তিকে তারা (বিএনপি) বলছে গোলামির চুক্তি। তো আমরা কী পেলাম? খালি হাতে ফিরেছি? খালি হাতে আগে ফিরিনি, এবারও ফিরিনি। প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর নিয়ে কাদের বলেন, চীনের সঙ্গে আমাদের অংশীদারত্ব আছে উন্নয়নের। ভারত আমাদের রাজনৈতিক বন্ধু। চীন উন্নয়নের বন্ধু। আমাদের চট্টগ্রামের দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র টানেল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কর্ণফুলি টানেল। এটা কে করে দিয়েছে? চীনারা। ঢাকা-চট্টগ্রাম ফোর লেনের যে রাস্তা দিয়ে আসেন এ উন্নয়ন ও রাস্তার নির্মাণ করেছে সিনো হাইড্রো। গতকাল (গত শুক্রবার) পদ্মা সেতুর যে সমাপনী অনুষ্ঠান হলো, এই পদ্মা সেতুর মেইন ব্রিজ ও রিভার চেঞ্জিং দুটি কোম্পানিই চীনের। তারা আমাদের পদ্মাসেতু করে দিয়েছে। মেট্রোরেলের জন্য জাপান সাহায্য করেছে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমার উন্নয়নের জন্য যেখানে সুযোগ-সুবিধা পাবো তা কেন নেবো না? আমার তো সাহায্য দরকার। যেখানে সাহায্য দরকার সেখানে আমি সাহায্য কেন নেবো না? এতে কারও কারও গা জ¦লে, কেউ কেউ অন্তর জ¦ালায় জ¦লছে। কেন পদ্মা সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল রেল হয়ে গেল। এটা অনেকের অন্তর জ¦ালা। অন্তর জ¦ালায় যারা মরে তাদের এসব প্রশ্নের জবাব দিতে চাই না। প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরকে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে যাচ্ছে, বিএনপির এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে আমরা যাই না। বিএনপির সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান বলেছিলেন নিজেদের এত টাকার দরকার কি? এত টাকা নিজেরা খরচ করলে বিদেশি টাকা পাওয়া যাবে না। ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে প্যারিস কনসোর্টিয়াম বারবার হাজির হতো বিএনপির অর্থমন্ত্রী। তাদের মুখে বড় বড় কথা শোভা পায় না। তিনি বলেন, নতজানু করা হয়? মেরুদ-হীনরা নতজানু হয়। বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা কোনোদিনও নতজানু হবেন না।