প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি: পিএসসি চেয়ারম্যান
প্রবাহ রিপোর্ট : নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ প্রসঙ্গে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন বলেছেন, যাদের নাম উঠে এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হলে পিএসসি সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিএসসির ভবনে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে সিআইডির হাতে পিএসসির দুই উপ-পরিচালক, এক সহকারী পরিচালকসহ ১৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। জড়িত অন্যান্যের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চলছে বলে সিআইডি জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, যে অপরাধ করার অভিযোগ উঠেছে, তা প্রমাণ হলে পিএসসির এখতিয়ারভূত সব ধরনের সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে আমরা প্রস্তুত। এ ক্ষেত্রে আমরা কাউকে ছাড় দেব না। একটি বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদনে গত এক যুগ ধরে বিসিএসসহ অন্যান্য নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ প্রসঙ্গে সোহরাব হোসাইন বলেন, টিভিতে প্রচারিত প্রতিবেদনটি তদন্ত কমিটিকে দেওয়া হয়েছে। তারা সবটা নিয়েই তদন্ত করবে। এদিকে সকালে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. আজাদ রহমান জানিয়েছেন, গত সোমবার রাতে সিআইডির পক্ষ থেকে পল্টন থানায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন আইনে একটি মামলা (নং ১৫) দায়ের করা হয়। মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ১৭ জনকে। আসামির সংখ্যা দেখানো হয়েছে অর্ধশতাধিক। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে সরকারি কর্ম কমিশনের যুগ্মসচিব আবদুল আলীম খানকে। সদস্য সচিব করা হয়েছে পিএসসির পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুল হককে। এ ছাড়া সদস্য করা হয়েছে পিএসসির পরিচালক দিলাওয়েজ দুরদানাকে। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার সকালে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. আজাদ রহমান বলেন, গত সোমবার রাতে সিআইডির পক্ষ থেকে রাজধানীর পল্টন থানায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন আইনে এই মামলা (নং ১৫) দায়ের করা হয়। মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ১৭ জনকে এবং আসামির সংখ্যা অর্ধ শতাধিক দেখানো হয়েছে। আজাদ রহমান বলেন, প্রশ্নফাঁসে জড়িতদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চলছে। অভিযানে এখন পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে ও পলাতকদের গ্রেপ্তারে পল্টন থানায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই মামলায় গ্রেপ্তার ১৭ জনকে গতকাল মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করা হবে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের রিমান্ড চাওয়া হবে বলেও জানান তিনি। সিআইডি সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন পিএসসির উপ-পরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান ও অফিস সহায়ক (ডিসপাস) সাজেদুল ইসলাম। এছাড়াও রয়েছেন- সাবেক সেনা সদস্য নোমান সিদ্দিকী, ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের রাজনীতি করা এবং বর্তমানে মিরপুরের ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশীদ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসান, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন ও সায়েম হোসেন ও বেকার যুবক লিটন সরকার। এছাড়াও সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যানের গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী ও তার ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদিকে সংগঠনের নীতি ও নৈতিকতা পরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত থাকায় ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে সোহানুর রহমান সিয়ামকে।