জাতীয় সংবাদ

৫৭ বিচারপতির অপসারণ ও সাবেক প্রধান বিচারপতিদের গ্রেপ্তারের দাবি

প্রবাহ রিপোর্ট : আওয়ামী লীগের শাসনামলের গত ১৫ বছরের সাবেক প্রধান বিচারপতিদের গ্রেপ্তার; বর্তমান প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের ৭ বিচারপতি ও হাইকোর্ট বিভাগের ৫০ বিচারপতিকে পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন আইনজীবীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সাধারণ আইনজীবীদের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ-সংক্রান্ত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব। তারা গতকাল বৃহস্পতিবারই বিতর্কিত ও দলবাজ বিচারপতিদের তালিকা প্রকাশ করার কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যের শুরুতে আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদসহ অন্যান্যের স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের আপামর জনগণ সে সময়ের প্রধান বিচারপতি সাহবুদ্দিন আহমেদকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসাবে গ্রহণ করেছিল এবং তার ওপর জনগণ আস্থা রেখেছিল। কিন্তু গত ৫ আগস্ট দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরেই বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির বাসভবন, বিচারপতি ভবন জনরোষাণলের শিকার হয়। এ ছাড়া গত ১৫ দিন ধরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সারা দেশের আদালত ভবন জনগণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়, যা গত ২০০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার ঘটলো। তিনি আরও বলেন, গত ১৬ বছর ধরে দেশের আপামর জনগণ এই আওয়ামী লীগের বিচার বিভাগের কাছ থেকে কোনো বিচার পায়নি। বরং সরকারের সব অন্যায় ও পাপের সহযোগী হয়েছে প্রধান বিচারপতিদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ। তিনি বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এ.বি.এম. খায়রুল হক, মো. মোজাম্মেল হোসেন, সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ গত ১৫ বছরের দলবাজ বিচারপতি। আইনজীবীদের দাবি, সমাজ এইসব সংবিধান লঙ্ঘনকারী প্রধান বিচারপতিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আদালতে বিচার করতে হবে। এ সময় ‘রাজপথে আন্দোলন করে কি কোর্টের রায় পরিবর্তন করা যায়’ প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের এ উক্তির কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। রিটটি শুনতে অস্বীকৃতি জানানোয় বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহ সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় মামুন মাহবুব প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতি এবং হাইকোর্ট বিভাগের ৫০ বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করেন। পাশাপাশি সৎ, দক্ষ, নিরপেক্ষ যোগ্য ব্যক্তিদের বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার দাবি করেন। এছাড়াও সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, শেখ ফজলে নুর তাপস, সদ্য পদত্যাগকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিমকোর্ট বারের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির, দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খানসহ ১২ আইনজীবীকে সামাজিকভাবে বয়কট ও অসহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি। সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের বিচার দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মহসীন রশিদ, অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল, অ্যাডভোকেট গোলাম রহমান, অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী, ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম প্রমুখ।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button