জামালপুর ও চট্টগ্রাম কারাগারে বিক্ষোভ : ৬ বন্দি নিহত

জামালপুরে ৬ বন্দি নিহত, ব্যাপক গোলাগুলি, উভয় কারাগার সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে
প্রবাহ রিপোর্ট : জামালপুর ও চট্টগ্রামে জুম্মার নামাযের পর বন্দিরা বিদ্রোহ করলে ব্যাপক গোলাগুলি করতে হয় কারারক্ষীদের। জামালপুর জেলা কারাগারে বিক্ষোভের ঘটনায় ছয় বন্দি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন চার কারারক্ষীসহ অন্তত ১৪ জন। নিহতরা হলেন-আরমান, রায়হান, শ্যামল, ফজলে রাব্বি বাবু, জসিম ও রাহাত। তারা সবাই কারাবন্দি। সেনাবাহিনীর সহায়তায় বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে জেল সুপার আবু ফাত্তাহ এতথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে, গত গত বৃহস্পতিবার দুপুরে জামালপুরে কারাবন্দিরা তাদের থাকার জায়গায় আগুন দিয়ে একটি ফটক ভেঙে ফেলেন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি ছুড়তে থাকেন। কারাগার এলাকা ঘিরে রাখেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। জেলা কারাগারের জেলার আবু ফাতাহ জানান, গত গত বৃহস্পতিবার আসামিরা দুই ভাগে বিভক্ত হন। তাদের একটি পক্ষ মুক্তির জন্য বিদ্রোহ করেন। পরে দুই পক্ষ মারামারি শুরু করেন। পরে ওই বিদ্রোহী গ্রুপ প্রথম ফটক ভেঙে কারাগার থেকে বের হয়ে যান। এ সময় দ্বিতীয় ফটক খুলে দেওয়ার জন্য জেলার আবু ফাতাহ ও করারক্ষীদের ওপর আক্রমণ করেন তারা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কারারক্ষীদের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কারাগারে অবস্থান নেন। তিনি আরও বলেন, ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
অপরদিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বিদ্রোহ করেছেন কয়েদিরা। পরে সেনাবাহিনী ও কারারক্ষীদের যৌথ প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো মাসুদ রহমান বলেন, জুমার নামাজের পর কিছু কয়েদি বিদ্রোহ করে। এসময় কারাগারে পাগলা ঘণ্টা বাজানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের পক্ষ থেকে ফাঁকা গুলি করা হয়। সেনাবাহিনীর সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। কারাগারের ভেতর সেনাবাহিনী অবস্থান করছে। এসময় কতজন আহত হয়েছে, তা এখনও বলা যাচ্ছে না। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের গেইটে দায়িত্বরত কয়েকজন কারারক্ষী বলেন, দুপুরে নামাজ পড়া শেষে হঠাৎ কারাগারের একাধিক ভবনে কয়েদিরা বিদ্রোহ শুরু করেন। তারা কারাগারে ভেঙে বের হওয়ার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি করা হয়েছে। বিদ্রোহ দমনে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়। ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়েছে সেনাবাহিনী। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। লালদিঘীর পাড় এলাকার বাসিন্দারা জানান, জুমার নামাজের পর কেন্দ্রীয় কারাগারে ব্যাপক গুলির শব্দ শোনা যায়। বাইরে থেকেও কিছু মানুষ কারাগারের প্রধান ফটক ভাঙার চেষ্টা করে। এসময় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ৫ আগস্ট বিকেলে কেন্দ্রীয় কারাগারে হামলার চেষ্টা করা হয়। পুলিশ ও কারারক্ষীরা হামলা প্রতিরোধ করেন। বর্তমানে কারাগারে প্রায় ৪ হাজারের বেশি বন্দী রয়েছে।