জাতীয় সংবাদ

শেখ হাসিনা আশ্রয় নিলেও ভারতের সঙ্গে আমাদের সমস্যা হবে না : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রবাহ রিপোর্ট : অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, ছাত্র-জনতা আন্দোলনে উৎখাত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের আশ্রয় নিলেও বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির কোনো সমস্যা হবে না।পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় গতকাল সোমবার বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তৌহিদ।এরপর সাংবাদিকদের তিনি ব্রিফ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।সাংবাদিকদের ব্রিফের সময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের আশ্রয়ে থাকলেও দুই দেশের মধ্যে কোনো টানাপোড়েন হবে কিনা, প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। উত্তরে তিনি বলেন, উনি ভারতে থাকলেও ওই দেশের সঙ্গে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। কেননা, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অনেক বড় বিষয়। দুই দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বার্থের। বন্ধুত্বেরও। বন্ধুত্বের মধ্যেও স্বার্থ থাকে।অন্তর্বর্তী সরকারের নিয়ন্ত্রণ বিদেশি কোনো দেশের হাতে আছে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, বাইরের কারও নিয়ন্ত্রণে নেই। যে কাউন্সিল এখন দায়িত্বে আছে; আমি কিন্তু এটাকে ক্ষমতার সরকার হিসেবে একেবারে ব্যবহার করতে চাই না। একটা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ দায়িত্ব পালন করে আমরা সরে যাব।তিনি বলেন, যে কাউন্সিল আছে, আমি নিশ্চিত করতে পারি এর মধ্যে কেউ অন্য কারও জন্য বিড করছে না। সবাই বাংলাদেশের জন্য বিড করছে। কেউ অন্য কোনো দেশের জন্য বিড করছে না। আমার নলেজে যেটা আছে সেটা আমি বলতে পারি। আমার নিজের ব্যাপারে তো নিশ্চয়তা দিতে পারি, কিন্তু অন্যান্যের ব্যাপারে নিশ্চয়তা.. না। কিন্তু আমি যা দেখেছি, আমি মোটামুটি নিশ্চিত কেউ কোনো দেশের হয়ে বিড করছে না।পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টার কূটনীতিক ব্রিফিংয়ে ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় ৬৪ জনের মতো কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন। এসময় ঢাকায় বিদেশি কূটনীতিকরা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েতৌহিদ হোসেন জানান, কূটনীতিকরা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জানিয়ে পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা। তবে কূটনীদিকদের কেউ আক্রান্ত হয়নি। রাষ্ট্রদূতদের বাসভবনে সিকিউরিটি নেই। এটা আমি তাদের নিশ্চয়তা দিয়েছি যে, এক থেকে দুই দিনের মধ্যে অনেক কিছু ঠিক হয়ে যাবে, যেহেতু পুলিশ এরইমধ্যে রাস্তায় নামা শুরু করেছে।উপদেষ্টা বলেন, রাষ্ট্রদূতদের ডাকা হয়েছে। সরকার কোন প্রেক্ষাপটে এসেছে এসব বিষয়ে বলা হয়েছে। আমরা আমাদের উদ্দেশ্য বলেছি। একটা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে পরিবর্তন এসেছে, সেটা যারা এনেছে তাদের কিছু দাবি-দাওয়া আছে। তাদের চাওয়া কোনো বৈষম্য থাকবে। এ সরকার এ উদ্দেশে কাজ করছে।তিনি বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা চেয়েছি। তারা এগিয়ে এসেছেন। আমরা বলেছি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় এবং বহুপাক্ষিক যুক্ত হতে চাই। সবক্ষেত্রে জাতিসংঘসহ সবার সঙ্গে। রোহিঙ্গা ইস্যু, বিনিয়োগের ব্যাপারে কিছু প্রশ্ন এসেছে। আমরা বলেছি তারা যেন হতাশ না হয়। এত বড় একটা পরিবর্তন হয়েছে, কিছু তো সময় লাগতে পারে।ব্রিফিংয়ে কূটনীতিকরা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জানিয়ে পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা। তবে কূটনীদিকদের কেউ আক্রান্ত হয়নি। তাদের চ্যান্সারী, রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে সিকিউরিটি নেই। এটা আমি তাদের নিশ্চয়তা দিয়েছি যে, এক থেকে দুইদিনের মধ্যে অনেক কিছু ঠিক হয়ে যাবে, যেহেতু পুলিশ এরইমধ্যে রাস্তায় নামা শুরু করেছে। তৌহিদ হোসেন বলেন, একজন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, যুবকরা এত বড় একটা কাজ করল। আগামী যেন যুবকদের মধ্যে যেন একটা নেতৃত্ব আসে। আমি বলেছি, দুজন ছাত্র কাউন্সিলে আছে। তাদের অনেকের মানবাধিকার নিয়েৃ। আমরা বলেছি, মানবাধিকার নিয়ে সিরিয়াস।সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ফিরেয়ে আনার পাশাপাশি এ সরকারের মেয়াদ নিয়ে কূটনীতিকরা কোনো প্রশ্ন করেছেন কিনা-জানতে চাইলে পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কোনো প্রশ্ন আসেনি। কাজেই এটা এখন আমরা বাদ দেই। নির্বাচনের বিষয়ে একটি শব্দও হয়নি। আমি পরিষ্কার করে দিয়েছি বিষয়টা। এ সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, একটা নির্বাচন অনুষ্ঠান করে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। এ নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।তিনি বলেন, আমরা সময়ের ব্যাপারে বলছি না। ছাত্ররা কি আগের অবস্থানে ফিরে যাওয়ার জন্য জীবন দিয়েছে? তাদের কিছু চাওয়া আছে। কিছু রিফর্মের প্রয়োজন পড়বে। আমরা যেটুকু সময়ের প্রয়োজন পড়বে ঠিক সেই সময়টুকু, বেশি থাকব না, কমও থাকব না। রিফর্মগুলো অন্তত পথে এনে দিয়ে যেতে হবে। সবকিছু কেউ করে দিয়ে যেতে পারবে না ছাত্রদের যে চাওয়া সেটা যেন পথে এনে দিয়ে যাওয়া যায়।বিদায়ী সরকারের পরিকল্পনায় থাকা বন্ধু দেশগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন এনগেজমেন্ট আটকে যাওয়ার প্রশ্নে পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ঠিক এ মহূর্তে আমরাৃ। আমরা কিন্তু কোনো কিছু থেকে সরে যাব এমন না। যারা সঙ্গে যে চুক্তি আছে বা কমিটমেন্ট আছে আন্তর্জাতিক পযায়ে বা দ্বিপক্ষীয় ব্যাপারে সেগুলো কিন্তু যে কমিটমেন্ট বাংলাদেশ করেছে অবশ্যই আমাদের রক্ষা করতে হবে। যেখানে আমাদের মনে হয় স্বার্থ ক্ষুণœ হয়েছে সেখানে আমাদের স্বার্থদেখা হবে।কূটনীতিকরা এ সরকারের মেয়াদ নিয়ে কোনো চাওয়া ছিল কিনা-জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, বিদেশি বন্ধুরা এ বিষয়ে কোনোকিছু জানতে চায়নি।এর আগে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়েছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বপেয়েছেন এম তৌহিদ হোসেন।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button