সলিমুল্লাহ মেডিকেলে ৯ শিক্ষক নিষিদ্ধ : ২৪ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

প্রবাহ রিপোর্ট : কোটা সংস্কার আন্দোলনে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ২৪ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ডাকা শান্তি সমাবেশে যোগ দেওয়ায় ৯ জন শিক্ষককে ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত বুধবার প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী এবং শিক্ষকরা আওয়ামী লীগ সমর্থক চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সদস্য। সভায় অধ্যক্ষকেও বদলির সুপারিশ করা হয়েছে। অধ্যক্ষ ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৬ জুলাই সলিমুল্লাহ মেডিকেলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়। আহত ছাত্রছাত্রীদের দাবির ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন ও সুপারিশের ভিত্তিতে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল শাস্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বড় অপরাধে ইন্টার্ন ডা. তন্ময়, ডা. সাব্বির ও শিক্ষার্থী শাকেরকে হল ও ক্যাম্পাস থেকে ১০ বছরের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। বহিরাগত ডা. সার্দেকুল, ডা. দুর্জয়, ডা. জয়, ডা. সার্ফিনাজ, ডা. শহীদুলকে আজীবনের জন্য অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। সভায় অভিযুক্ত বহিরাগত ও ইন্টার্নরা কোনো ধরনের অনারারি প্রোগ্রাম (পোস্ট গ্র্যাজুয়েট বা ট্রেইনিং প্রোগ্রাম) বা চাকরি নিয়েও এ কলেজে আসতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শিক্ষার্থী আলিফ, প্রাপ্ত, আনিস, নওশীদকে হল ও ক্যাম্পাস থেকে তিন বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। ইন্টার্ন ডা. ফাহিম ও ডা. আজিজকে হল ও ইন্টার্নশিপ থেকে তিন বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। বহিরাগত ডা. শাফিন, ডা. নুরুজ্জামানকে তিন বছরের জন্য অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। গুজব ছড়ানো ও পরোক্ষভাবে ভীত প্রদর্শনের দায়ে ছাত্র নওশীন, ঋতিকা, কেয়াকে সব ছাত্রীনিবাস ও ইন্টার্ন হল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার ও মুচলেকা দিতে হবে। বহিরাগত ডা. সাগরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। গুজব রটানোর জন্য প্রমাকে সব ছাত্রীনিবাস ও ইন্টার্ন হল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয় ও তাকে মুচলেকা দিতে হবে। পরোক্ষভাবে বহিরাগত উসকানিদাতা ডা. মজনু মিয়া, ডা. মাইদুল, ডা. রাতুল, ডা. আসাদুজ্জামান, ডা. নবাবকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। এছাড়া গত ১৬ জুলাই হামলার ঘটনায় ইউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সুদীপ দাশগুপ্ত, মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবদুস ছাত্তার সরকার, সহযোগী অধ্যাপক ডা. আমিরুজ্জামান সুমন এবং শান্তি সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য অধ্যক্ষ শাহাদাত, উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক আকাইদুজ্জামান, অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র সাহা, অধ্যাপক অজয় কুমার সরকার, সহকারী রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. প্রহ্লাদ পালকে বদলির জন্য সুপারিশপত্র পাঠানোর সিদ্ধান্তি হয়। সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. নাজমুন নাহার রোজীকে বদলির জন্য কর্তৃপক্ষ সুপারিশপত্র পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।।