জাতীয় সংবাদ

বিপ্লব কুমারের দেশ ছাড়া খবরের সত্যতা মেলেনি

প্রবাহ রিপোর্ট : লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম সীমান্ত দিয়ে পাচারকারীদের সহায়তায় অবৈধভাবে ভারতে পালিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার। একটি অডিও ক্লিপ ফাঁসের পর এমন ‘গুজবে’ ভাসছে দেশ। বিষয়টি গুজব নাকি সত্যি-এ ব্যাপারে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রতিনিধি। তবে এ বিষয়ে নূন্যতম সত্যতা জানাতে পারেনি কেউ। জানা গেছে, দহগ্রাম সীমান্তের নিরাপত্তাব্যবস্থা অত্যন্ত শক্ত। সেখানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ৪টি চেকপোস্ট রয়েছে। এ জায়গা দিয়ে পালিয়ে পাওয়া খুব সহজ বিষয় নয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে। সেই ক্লিপের সূত্র ধরে স্থানীয়রা পাটগ্রাম ব্র্যাক ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক পঙ্কজ কুমার মদনকে আটক করে পুলিশে দেয়। পুলিশ পঙ্কজকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অডিও ক্লিপের কোনো সত্যতা পায়নি। পরে পঙ্কজকে ডাকামাত্র হাজির হওয়ার শর্তে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মইনুল ইসলামবলেন, আমরা শুধু মঙ্গলবার শুনছি। কানাঘুষা করছে লোকজন। তবে এরকম কোনো ঘটনার সত্যতা আমরা পাইনি। দহগ্রাম তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ এনায়েত উল্যাহ বলেন, মূলত এটা গুজব। আমার সঙ্গে পাটগ্রাম থানার ওসিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কথা হয়েছে। এই ঘটনার কোনো সূত্র পাওয়া যাচ্ছে না। পাটগ্রাম উপজেলায় কাজ করা একাধিক সাংবাদিকবলেন, মূলত মঙ্গলবার একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। পরে পাটগ্রাম থানা পুলিশ একজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। যে অডিও ক্লিপটা ভাইরাল হয়েছিল সেটার সত্যতা পাওয়া যায়নি। থানা হেফাজতে থাকা ওই ব্যক্তিকে পুলিশ ছাড়াও বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। নিশ্চিতভাবে কোনো তথ্য পায়নি পুলিশ। এমন গুজব ছড়িয়ে দেশেই বিপ্লব কুমার সরকারের নিরাপদে থাকার কৌশল হতে পারে এটি। বিষয়টি নিয়ে পাটগ্রাম থানার ওসি আবু সাঈদ চৌধুরী গত বুধবার রাতে বলেন, অডিও রেকর্ডসহ এই ঘটনার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে ব্র্যাক ব্যাংকের ওই কর্মকর্তার আপাতত কোনো সম্পৃক্ততা আমরা পাইনি। বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে কাজ করছি। প্রসঙ্গত, টাকাসংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত বুধবার বিকালে পাচারকারী শুভ (৩০) রংপুরে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়েন। ওই সময় রংপুরের স্থানীয় বিএনপির নেতারা মোবাইল ফোনে পাটগ্রামের তাদের দলীয় কয়েকজন নেতার সঙ্গে শুভর ব্যাপারে কথা বলেন। এ সময় শুভও তাদের কথোপকথনে যোগ দেন। কথা বলার একপর্যায়ে শুভ বলেন, মঙ্গলবার রাতে পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকারকে দহগ্রাম সীমান্তপথ দিয়ে ভারতে পার করে দেওয়া হয়েছে। মোবাইল ফোনে কথার সূত্র ধরে আরও জানা যায়, ব্র্যাক ব্যাংকের পঙ্কজ ও দহগ্রামের আকছেদুল, মমিন, লম্বা শাহীন, ফারুক, রাজিব, শামীম ও মকছেদুলের সহায়তায় বিপ্লবকে সীমান্ত পার করে দেওয়া হয়। বিপ্লবকে জলঢাকা মীরগঞ্জের মিঠু, নিশাদ ও রুবেল পাটগ্রামে আনতে সহায়তা করে। সীমান্ত পার করার সময় দেড় লাখ টাকা নেওয়া হয়। এ বিষয়ে শুভ ও তার বাবা ওসমান গণির সঙ্গে কথা বলতে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button