জাতীয় সংবাদ

‘চোখে গুলিবিদ্ধ সবার সফল অস্ত্রোপচার দেশেই হয়েছে’

প্রবাহ রিপোর্ট : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চোখে গুলিবিদ্ধ সবার সফল অস্ত্রোপচার দেশেই সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চক্ষু চিকিৎসকরা। গতকাল রোববার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) রেটিনা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত র‌্যালি ও আলোচনা সভায় তারা এ কথা বলেন। তাদের মতে, বাংলাদেশে চোখের অস্ত্রোপচারের যন্ত্রপাতি ও ব্যবস্থাপত্রের সব সুযোগ-সুবিধা আছে। চোখের ভিট্রিও-রেটিনা সার্জারির আধুনিকায়নে বিশ্বের অন্যান্য দেশ ও বাংলাদেশ সমানভাবে এগিয়ে চলছে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল ওয়াদুদ, কমিউনিটি চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শওকত কবির, বাংলাদেশ ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. তারিক রেজা আলী, বাংলাদেশ ভিট্রিও রেটিনা সোসাইটির মহাসচিব ডা. শাহনুর হাসান, বাংলাদেশ ভিট্রিও রেটিনা সোসাইটির পাবলিকেশন সেক্রেটারি ডা. মোহাম্মদ আফজাল মাহফুজউল্লাহ প্রমুখ। এ সময় তাদের বক্তব্যে রেটিনা বিষয়ে রোগ নির্ণয়ে রেটিনোপ্যাথি স্ক্রিনিংয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়, সেইসঙ্গে সাধারণ জনগোষ্ঠী ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে রেটিনা চিকিৎসার প্রসারের ওপর জোর দেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, বর্তমান প্রেক্ষাপট এ রেটিনায় রক্তক্ষরণ ও রেটিনাল ডিট্যাচমেন্ট নিয়ে অনেক রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আঘাতজনিত রেটিনাল ডিটাচমেন্টের বেশিরভাগ রেটিনাগুলোর আঘাতপ্রাপ্ত। এ ক্ষেত্রে কয়েকটি বিবেচ্য বিষয় হলো- কতদিন আগে চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, চোখের কোন অংশে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, কত দূরত্বে চোখে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, ঐ মুহূর্তে চোখে চশমা বা সানগ্লাস পরিহিত ছিল কি না, বর্তমান অক্ষি কোটরের কাঠামো স্বাভাবিক আছে কি-না, চোখের বর্তমান দৃষ্টিশক্তি কি অবস্থায় আছে, চোখের ইন্ট্রা অকুলার প্রেশার স্বাভাবিকের চেয়ে কম বা বেশি আছে কি-না ইত্যাদি। এছাড়াও এক্সরে এবং সিটি স্ক্যানের মাধ্যমেও গুলির উপস্থিতি ও অবস্থান নির্ণয় করা যায়। তারা বলেন, রেটিনা চোখের একটি গুরুত্বপূর্ণ পাতলা পর্দা অংশ যা দশটি লেয়ার দ্বারা তৈরি। এটি আলোকে নিউরাল সিগন্যালে রূপান্তরিত করার জন্য দায়ী যা মস্তিষ্কে দৃষ্টি হিসাবে ব্যাখ্যা করে। এটি ক্যামেরার ফিল্মের মতো কাজ করে, ছবি ধারণ করে এবং অপটিক নার্ভের মাধ্যমে মস্তিষ্কে পাঠায়। তবে পৃথিবীতে যেসব কারণে অন্ধত্ব হয়, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি তার অন্যতম কারণ। বক্তারা আরও বলেন, ডায়াবেটিসে হার্ট, চোখ এবং কিডনির ওপর প্রভাব পড়ে সব থেকে বেশি। ডায়াবেটিসের প্রভাবে অন্ধত্ববরণও করতে পারেন, যাকে বলা হয় ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি। ডায়াবেটিস চোখের সব অংশের তুলনায় রেটিনায় বেশি ক্ষতি করে। হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ এও রেটিনার ক্ষতি হয়ে থাকে যা হাইপারটেন্সিভ রেটিনোপ্যাথি নামে পরিচিত। এছাড়াও বয়সজনিত রেটিনার ক্ষয় যা এআরএমডি বা এজ রিলেটেড ম্যাকুলার ডিজেনারেশন নামে পরিচিত, এ বিষয়েও জনসচেতনতা সৃষ্টি জরুরি। জানা গেছে, প্রতি বছর রেটিনার রোগ সচেতনতায় সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে বিশ্ব রেটিনা দিবস পালিত হয়। এর অন্যতম উদ্দেশ্য রেটিনা রোগ ও চিকিৎসা সচেতনতা সৃষ্টি। প্রতিবারের মতো দিবসটি উপলক্ষে বিএসএমএমইউ ছাড়াও জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, বারডেম জেনারেল হাসপাতাল, ইস্পাহানি ইসলামিয়া আই ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, লায়ন্স আই ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ও অন্যান্য চক্ষু হাসপাতালে র‌্যালিসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button