আসন্ন শীতে দেশে গ্যাস সংকট তীব্র হওয়ার শঙ্কা

প্রবাহ রিপোর্ট : আসন্ন শীতে দেশে গ্যাস সঙ্কট তীব্র হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। বর্তমানে চাহিদার বিপরীতে এক হাজার মিলিন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে। ঘাটতির কারণে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে সক্ষমতার চেয়ে অর্ধেক উৎপাদন হচ্ছে। শিল্প-কারখানার উৎপাদন গ্যাস সঙ্কট ব্যাহত হচ্ছে। তাছাড়া রাজধানীর অনেক স্থানেই আবাসিক খাতে গ্যাস থাকে না। বিদ্যমান এমন পরিস্থিতির মধ্যে শীত মৌসুমে সব খাতেই গ্যাসের চাপ কমে যায়, তখন সঙ্কট আরো তীব্র হবে। পেট্রোবাংলা সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, শীতে তাপমাত্রা কমে পাইপলাইনে তরল পদার্থ জমে গ্যাস প্রবাহের চাপ কমে যায়। তাছাড়া দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে সরবরাহ কমে যাওয়া এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) কম আমদানির কারণে সরবরাহ ঘাটতি তৈরি হয়। যদিও ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশীয় উৎপাদনের সঙ্গে এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে। তবে তা দিয়েও পুরো চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে না। দেশে গ্যাসের চাহিদা অন্তত ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। সেখানে দেশীয় ক্ষেত্রগুলো থেকে উত্তোলিত গ্যাস এবং আমদানিকৃত এলএনজি মিলিয়ে দৈনিক ২ হাজার ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট সরবরাহ করা যাচ্ছে। ফলে প্রায় ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট ঘাটতি থাকছে। শীত এলে গ্যাসের ব্যবহার বাড়ায় ঘাটতিও বাড়ে। সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ, শিল্প, সার ও বাণিজ্যিক খাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের জন্য স্পট মার্কেট থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৬ কার্গো এলএনজি কেনার জন্য সরকার অনুমোদন দিয়েছে। অক্টোবর মাসে স্পট মার্কেট থেকে ৫ কার্গো এলএনজি ক্রয়ের পরিকল্পনাও ছিল। তবে প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রতিষ্ঠান কোটেশন দাখিল না করায় ক্রয়কারী কর্তৃপক্ষ কোটেশনগুলো বাতিল করে। তবে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত গ্যাসের স্বাভাবিক সরবরাহ নিশ্চিতে অন্তত ১০৫ কার্গো এলএনজি আমদানি করতে হবে। তাতে সরকারকে অন্তত ১৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। সরকারি-বেসরকারি গ্রাহকদের কাছে গ্যাসের প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। অথচ পেট্রোবাংলা যাদের গ্যাস সরবরাহ করে তারা নিয়মিত বিল পরিশোধ করলে আমদানি করে সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হতো। সূত্র আরো জানায়, প্রতিদিনই কোনো না কোনো এলাকা থেকে গ্যাস না পাওয়ার অভিযোগ পাচ্ছে তিতাস। শিল্পাঞ্চল থেকেও এমন অভিযোগ জানানো হচ্ছে। কিন্তু পেট্রোবাংলা থেকে সরবরাহ না পেলে তিতাস গ্যাস দিতে পারছে না। এদিকে এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন) মো. কামরুজ্জামান জানান, শীতে সবসময়ই গ্যাসের ব্যবহার বেড়ে যায়। ফলে সংকটটা প্রকট মনে হয়। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত আরো ১১ কার্গো এলএনজি আমদানি করে গ্যাসের জোগান নিশ্চিত করার পরিকল্পনা করেছে সরকার। হয়তো সেটাও পর্যাপ্ত হবে না। অন্যদিকে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ জানান, পর্যাপ্ত এলএনজি আমদানি ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে এবার শীতেও গ্যাসের সংকট হতে পারে। পেট্রোবাংলার সঙ্গে কথা বলে চাহিদার কথা জানানো হয়েছে। আশা করা যায় তারা সরকারের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।