জাতীয় সংবাদ

১৬ হাজার টাকার জন্য মুদিদোকানিকে গলাকেটে হত্যা

প্রবাহ রিপোর্ট ঃ লাশ উদ্ধারের তিনদিনের মধ্যে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে চাঞ্চল্যকর মুদি দোকানি রইস উদ্দিন (৫৫) খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। মুদি দোকানীর কাছে থাকা মাত্র ১৬ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের উদ্দেশে তাকে গলাকেটে হত্যা করা হয়। হত্যায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তি জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এ হত্যাকা-ে ব্যবহৃত ছুরি এবং নিহত ব্যক্তির দুটি মুঠোফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সকালে শাহজাদপুর থানার ওসি মোঃ আসলাম আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, বুধবার উপজেলার নলুয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসময় হত্যাকা-ে ব্যবহৃত রক্তমাখা লুঙ্গি, চাকু ও রইস উদ্দিনের ট্রাউজার উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- উপজেলার নলুয়া গ্রামের আজিজ আলী ম-লের ছেলে মামুন হোসেন (২৮) ও জুগ্নীদহ পশ্চিমপাড়ার মৃত রানু শেখের ছেলে জয়নাল শেখ (৫০)। নিহত রইস উদ্দিন একই উপজেলার কাঙলাকান্দা নলুয়া গ্রামের বাসিন্দা। গত ১৮ নভেম্বর বিকেলে নলুয়া বটতলা এলাকায় ডোবা থেকে নিহত রইস উদ্দিনের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, রইস উদ্দিন প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে চলে গেলে তিনি আর বিয়ে না করে একাই থাকতেন এবং নিজেই রান্না করে খেতেন। প্রতিদিন সকাল ৬টায় নলুয়া বটতলা এলাকায় তার দোকান খুলতেন এবং রাত ১০টায় বন্ধ করে বাড়ি যেতেন। গত ৩ নভেম্বর যথারীতি সকাল ৬টায় দোকানে গেলেও আর বাড়িতে ফেরেননি। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান না পেয়ে ছেলে দুলাল হোসেন ৮ নভেম্বর থানায় জিডি করেন। নিখোঁজের ১০ দিন পর ১৮ নভেম্বর নলুয়া বটতলা এলাকায় শফিকুলের ডোবা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ছেলে দুলাল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা তদন্তের এক পর্যায়ে গত বুধবার সন্দেহভাজন আসামি মামুন ও জয়নালকে আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যমতে টয়লেট থেকে নিহতের দুটি ফোন, মামুনের বাড়ি থেকে রইস উদ্দিনের ট্রাউজার, বাড়ির পাশের ডোবা থেকে রক্তমাখা লুঙ্গি ও হত্যাকা-ে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করা হয়। ওসি মোঃ আসলাম আলী বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা হত্যাকা-ের দায় স্বীকার করেছেন। মামুন পেশায় নির্মাণ শ্রমিক ও জয়নাল একজন ভবঘুরে। তারা দুজনেই মাঝে মধ্যে রইসের দোকানে বসে আড্ডা দিতেন। আর্থিক সংকট থাকায় আসামি মামুন ও জয়নাল রইসের টাকা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী মামুন একটি চাকু সংগ্রহ করেন এবং ৩ নভেম্বর রাত ১০টা থেকে তারা রইসকে অনুসরণ করে। ওসি আরও বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে রইসের ভাড়া বাড়িতে গিয়ে তাকে ডেকে বাইরে বের করেন। এরপর জয়নাল তাকে চেপে ধরে এবং মামুন চাকু দিয়ে গলাকেটে হত্যা করে। হত্যার পর গামলায় করে রক্ত তুলে টয়লেটে ফেলে দেয় এবং রইসের ফোন দুটিও ফেলে দেয়। মামুনের রক্তমাখা লুঙ্গি ও চাকু বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলে দেয়। রইসের ঘরের ভেতরে ঢুকে তোষকের নিচে থাকা ১৬ হাজার টাকা দুজনে ভাগ করে নেয়। এরপর মামুন রইসের লাশ একটি বস্তার মধ্যে ঢুকিয়ে শফিকুলের ডোবায় ফেলে দেয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button