কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল করতে পারবে

প্রবাহ রিপোর্ট : কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করতে পারবে আজ বৃহস্পতিবার থেকে। প্রতিদিন যেতে পারবেন দুই হাজার পর্যটক। তবে পর্যাপ্ত বুকিং না থাকায় আজ বৃহস্পতিবার এ রুটে জাহাজ নাও চলতে পারে। সংশ্লিষ্ট অনেকে বলছেন, পর্যাপ্ত যাত্রী না পেলে পহেলা ডিসেম্বর এ রুটে জাহাজ চালু করা হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করে কমিটির আহ্বায়ক ও কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত এবং জাহাজ চলাচলের বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে কক্সবাজার শহরে জাহাজ চলাচলের ঘাট নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি নাফ নদীতে ডুবোচর জেগে ওঠার কারণে নাব্যতা সংকট এবং মিয়ানমার সীমান্তে গোলাগুলির কারণে টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। শুধু কক্সবাজার শহর থেকে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে কক্সবাজার শহরের বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে প্রতিদিন জাহাজ ছাড়া হবে। সেন্টমার্টিনে পর্যটন নিয়ন্ত্রণে সরকারের গঠিত কমিটির প্রথম সভায় গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর আগে গত সোমবার জেলা প্রশাসকের কাছে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের জন্য কেয়ারি সিন্দাবাদ নামে একটি জাহাজকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম ) নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, জেলা প্রশাসকের কাছে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের জন্য কেয়ারি সিন্দাবাদ আবেদন করেছিল। জাহাজটি যাচাই-বাছাই শেষে কক্সবাজার শহর থেকে যাওয়ার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড লিমিটেডের কক্সবাজারের ইনচার্জ নুর মোহাম্মদ ছিদ্দিকী বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে লিখিত অনুমতি পেয়েছি। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ১ ডিসেম্বর থেকে জাহাজ চলাচল শুরু করা হবে। তবে এর আগে যাত্রী হলে সেন্টমার্টিন ছেড়ে যাবে। বর্তমানে জাহাজ নুনিয়াছড়া ঘাটে অবস্থান করছে। এদিকে গত ১৯ নভেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান স্বাক্ষরিত পৃথক অফিস আদেশে সেন্টমার্টিনের পর্যটন নিয়ন্ত্রণে কমিটি গঠন এবং একই সঙ্গে কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল নিয়ে কিছু দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কর্মপরিধি হিসেবে বলা হয়েছে, সেন্টমার্টিনগামী জাহাজে ওঠার আগে এন্ট্রি পয়েন্টে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের তৈরি করা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করে ট্রাভেল পাস নিতে হবে। ট্রাভেল পাসধারী পর্যটকদের অনুমোদিত জাহাজে ভ্রমণ নিশ্চিত করবে গঠিত কমিটি। পর্যটক ও অনুমোদিত জাহাজে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন ব্যাগ ও একবার ব্যবহার যোগ্য প্লাস্টিকের পণ্য পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পর্যটকরা সেন্টমার্টিন দ্বীপে পৌঁছার পর কোন হোটেলে থাকবেন, তা লিপিবদ্ধ করা হবে। জাহাজ ছাড়ার স্থানে ও সেন্টমার্টিনের এন্ট্রি পয়েন্টে পর্যটকদের জন্য করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়ে বিলবোর্ড স্থাপন করা হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয় সার্বিক বিষয় ও যোগাযোগ সমন্বয় করবে। প্রতিবছর সরকারের পক্ষ থেকে অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত ছয় মাস টেকনাফ-সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। বাকি ছয় মাস সাগর উত্তাল থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়। কাজের সুবিধার্থে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ কমিটিতে নতুন করে পাঁচজন সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নতুন সদস্যরা হলেন, দ্বীপে চলাচলকারী জাহাজ মালিক সমিতির সভাপতি, সেন্টমার্টিন হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি, কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি, কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের (টুয়াক) সভাপতি এবং কক্সবাজার প্রেসক্লাব সভাপতি।