বোল্ড অ্যান্ড লাউড স্ট্যান্ডের জন্য বিএনপিকে ধন্যবাদ : হাসনাত

প্রবাহ রিপোর্ট : বিএনপিকে ধন্যবাদ জানালেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। গতকাল রোববার নিজের ভেরিভায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে বিএনপিকে ধন্যবাদ জানান তিনি। হাসনাত তার পোস্টে লিখেছেন, ‘এমন বোল্ড অ্যান্ড লাউড স্ট্যান্ডের জন্য বিএনপিকে ধন্যবাদ।’ পোস্টের মন্তব্যের অংশে বিএনপির একটি বিবৃতি শেয়ার করেছেন তিনি। জানা যায়, গতকাল রোববার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে বিবৃতিটি পাঠ করে শুনিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ‘দুনিয়া কাঁপানো ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানের মুখে কুখ্যাত গণতন্ত্রের ঘাতক শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের স্বস্তি-শান্তির অভাবনীয় স্বর্ণদ্বার উন্মোচিত হয়েছে। দেশের চতুর্দিকে গণতন্ত্রে উত্তরণের সম্ভাবনায় জন উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। দেড় দশকের জগদ্দল পাথর অপসারণ হয়েছে মানুষের স্কন্ধ হতে।’ ‘জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই যখন একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন তখন বাংলাদেশের দেড় দশকের সন্ত্রাসী মাফিয়ালীগের রক্তাক্ত তা-বে সুষুপ্তিতে থাকা ভারত সরকার সর্বস্ব হারানোর বেদনাবিদ্ধ অস্থিরতা আর অস্বস্তি বিস্ময়কর রকমের প্রকট হয়ে উঠেছে। শেখ হাসিনার পতন হজম করতে পারছে না ভারত সরকার। শেখ হাসিনার পতনে তাদের অন্তরে ভয়ংকর অনল দহন। এর কারণ অতিমাত্রায় দাদাগিরি করার ফলে ভারতের সঙ্গে তার প্রত্যেক প্রতিবেশীর সম্পর্ক তলানিতে। শুধু হাসিনার ঘাড়ে সওয়ার হয়ে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব স্থাপন করেছিল বাংলাদেশের ওপর। ভারত বাংলাদেশকে আশ্রিত রাজ্যের মতো বিবেচনা করতো। সেই আশ্রিত রাজ্য হাত ফসকে গেছে।’ ‘বিগত ১৫ বছর হাসিনাকে সামনে রেখে ভারত বাংলাদেশকে কার্যতঃ দখল করে নেয়ার চেষ্টা করেছিল। এখন বাংলাদেশকে আবার কীভাবে তাদের করতলে নেওয়া যায়, সেই লক্ষ্যেই তারা নীলনকশা করছে। ভারতের সরকার মনে করে, বাংলাদেশকে অষ্টম সিস্টার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা গেলে তাদের সেভেন সিস্টার্স নিরাপদ থাকবে। চানক্য ভারতের বশংবদ ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন ও পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকেই মোদি ও তার গদি মিডিয়া বহুমাত্রিক ষড়যন্ত্র এবং-অপপ্রচার চালিয়ে আসছে। তারা চরম হতাশা-আহাজারিতে নিমজ্জিত। তাদের আচরণ ক্রমশ স্পষ্টত অসুপ্রতিবেশীসুলভ, অস্বাভাবিক এবং একদেশদর্শী। একজন স্বৈরাচারের পতন নিয়ে কোনো দেশের এমন আহাজারি বিশ্বে বিরল। ভারতের কতিপয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বানোয়াট গল্প প্রচার ও প্রোপাগান্ডা চালিয়ে সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়ে চলেছে। ভারতীয় সাম্প্রদায়িক শাসকগোষ্ঠী ও হাসিনার যৌথ ইন্ধনে ভারতীয় কিছু উগ্র হিন্দত্ববাদী গণমাধ্যম এমন অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে।’ ‘বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতের বর্তমান বয়ান মিথ্যার ধোঁয়াজাল দিয়ে ঘেরা। ভারত অন্তর্গত দিক থেকেই বাংলাদেশ বিদ্বেষী। এদের মধ্যে মানবিক নৈতিকতার ছিটেফোটাও নেই। এই কারণে বাংলাদেশের মানুষের নিজস্ব ইতিহাস ঐতিহ্য ও স্বাভাবিক বিকাশে বিশ্বাসী দেশের জনগণ ও জাতীয় নেতাদের প্রতি বিরুপ ধারণা পোষণ করে।’ ‘আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, দুই/তিন দশকে পূর্বে এদেশের এক মহান জাতীয়তাবাদী নেতা ও স্বাধীনতার ঘোষক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যা করার জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা একটি ফাইল ইনিশিয়েট করে। এর কিছুদিন পরে সরকার পরিবর্তিত হয়ে শ্রী মোরার্জী দেশাইয়ের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলে তিনি ফাইলের কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। পরে আবার শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ক্ষমতাসীন হলে ফাইলটির কার্যক্রম চালু হয়ে এবং এর কিছুদিন পরে ১৯৮১ সালের ৩০ মে জিয়াউর রহমান নিহত হন। ভারতেরই একটি পত্রিকা সানডেতে এর ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সাংবাদিক সুব্রামনিয়ম প্রতিবেদনটি রচনা করেন। সুতরাং আওয়ামী লীগ ব্যতিরেকে বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই ভাল চোখে দেখে না।’