জাতীয় সংবাদ

সাবেক এমপি আনারের দেহাংশের সঙ্গে আংশিক মিলেছে মেয়ের ডিএনএ

প্রবাহ রিপোর্ট: কলকাতায় উদ্ধার দেহাংশ ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের কি না, তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন ছিল ডিএনএ পরীক্ষার। সে অনুযায়ী, কলকাতায় এসে ডিএনএ নমুনা দিয়েছিলেন আনার কন্যা মুমতারিন ফেরদৌস ডোরিন। জানা গেছে, উদ্ধার করা মাংস ও হাড়ের সঙ্গে আংশিক মিলেছে তার মেয়ে ডোরিনের ডিএনএ। সরকারিভাবে বিবৃতি না দিলেও পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি সূত্রে এ তথ্য মিলেছে। একইভাবে এ ঘটনা নিশ্চিত করেছে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনও। গত ১২ মে ভারতে আসেন বাংলাদেশের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। তিনি ওঠেন পূর্ব পরিচিত গোপাল বিশ্বাসের পশ্চিমবঙ্গের বরাহনগরের বাড়িতে। পরদিন ১৩ মে চিকিৎসা করাতে যাবেন বলে গোপালের বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু ওইদিন রাতেই নিউটাউনের সঞ্জীভা গার্ডেনের বহুতল আবাসনের একটি ফ্ল্যাটে হত্যার শিকার হন তিনি। জানা যায়, হত্যাকা-ের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন প্রবাসী মার্কিন নাগরিক আখতারুজ্জামান শাহীন। অভিযোগ, তার নির্দেশেই কসাইখ্যাত জিহাদ হাওলাদারসহ চারজন আনোয়ারুল আজিম আনারকে ওই আবাসনে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এ ঘটনায় সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার হওয়া অন্যতম অভিযুক্ত বাংলাদেশি নাগরিক সিয়াম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, আনারকে হত্যা এবং দেহাংশ লোপাটের কাজে যুক্ত ছিলেন তিনি। নিউটাউনের ওই আবাসনের সিসিটিভি ফুটেজ সামনে এলে তাতেও সিয়ামকে দেখা গিয়েছিল। জিহাদ ও সিয়ামকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আনারের শরীর থেকে মাংস আলাদা করে সেগুলোকে ক্যারিব্যাগে রাখা হয় পরে সেই লাশের টুকরো পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ভাঙ্গড় ব্লকের কৃষ্ণমাটি খাল এলাকায় ফেলা হয়। পরে ওই খাল সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু হাড় উদ্ধার করে পুলিশ। যা দেখে সিআইডি কর্মকর্তা ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান ছিল, সেগুলো মানুষের হাড়। পরে সঞ্জীভা গার্ডেনের ওই আবাসনের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয় প্রায় চার কেজি মাংস। উদ্ধারকৃত ওই মাংস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে। সেখানকার প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব পুরুষ দেহাংশ। সেই দেহাংশ আনারের কি না, তা নিশ্চিত হতেই ডিএনএ পরীক্ষা জরুরি ছিল। সেক্ষেত্রে অনেক আগেই নিহত আনারের কন্যা মুমতারিন ফেরদৌস ডোরিন কলকাতায় আসার কথা থাকলেও নানা কারণে তা পিছিয়ে যায়। অবশেষে গত নভেম্বর মাসেই কলকাতা এসে সিআইডি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য তার কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তদন্তকারী সংস্থা। গত ২৩ মে জিহাদ এবং ৭ জুন সিয়ামকে গ্রেপ্তারের পর আগস্ট মাসে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাত জেলা আদালতে প্রায় এক হাজার ২০০ পাতার চার্জশিট জমা পড়ে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দ-বিধির ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ), ৩০২ (অপরাধমূলক নরহত্যা), ২০১ (তথ্য-প্রমাণ লোপাট) এবং ৩৪ (সংঘবদ্ধভাবে অপরাধমূলক কাজ সংঘটিত করা) এবং ১৪ ফরেনার্স আইনে মামলা হয়।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button