জাতীয় সংবাদ

জনপ্রতিনিধির ভোটে রাষ্ট্রপতিঃ দুবারের বেশি মেয়াদ নয় প্রধানমন্ত্রীর

# নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ #

প্রবাহ রিপোর্টঃ বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক একবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না বলে প্রস্তাব করেছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। সেই সঙ্গে স্থানীয় প্রতিনিধিদের সরাসরি ভোটে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তাব করেছে কমিশন। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার কাছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন পুরো নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের নয় পৃষ্ঠার সুপারিশ জমা দেয়। এতে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে এমন সুপারিশ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনঃ সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সর্বোচ্চ দুই টার্মে সীমিত করা। সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে দুইবার নির্বাচত প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের অযোগ্য করা। একই ব্যক্তি একই সঙ্গে যেন দলীয় প্রধান, প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা হতে না পারেন তার বিধান করা এবং দ্বৈত প্রতিনিধিত্বের সুযোগ বন্ধ করা। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনঃ দলনিরপেক্ষ, সৎ, যোগ্য ও সুনামসম্পন্ন ব্যক্তির রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার বিধান করা। জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষের সদস্য এবং স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচিত প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর নির্বাচকম-লীর ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার বিধান করা। কার্যকর সংসদের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংসদ সদস্যদের প্রত্যাহারের বিধান করা। সংসদ সদস্যদের সুযোগ-সুবিধাঃ সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত গাড়ি, আবাসিক প্লট, সব ধরনের প্রটোকল ও ভাতা পর্যালোচনা ও সংশোধন করা। একটি ‘সংসদ সদস্য আচরণ আইন’ প্রণয়নের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের বাৎসরিকভাবে সম্পদের হিসাব প্রদান এবং স্বার্থের দ্বন্দ্বের বিষয়সমূহ ঘোষণা করা। সংবিধান লঙ্ঘন করে সংসদ সদস্যদের স্থানীয় উন্নয়নে জড়িত থাকার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের আনোয়ার হোসেন বনাম বাংলাদেশ মামলার রায় কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা এবং ভবিষ্যতে সংসদ সদস্যদেরকে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টার পদ থেকে অপসারণ করা। সংসদ সদস্যদের জন্য বিশেষ প্রটোকলের অবসান করা। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ/গণমাধ্যমঃ নিশ্চল পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেওয়া, যাতে পর্যবেক্ষকরা সারাদিন কেন্দ্রে থাকতে পারে, কিন্তু ভোটকক্ষে সার্বক্ষণিকভাবে নয়। নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাকে প্রাক্-নির্বাচনকালীন পর্যবেক্ষণের অফিসিয়াল অনুমতি প্রদান করা। পক্ষপাতদুষ্ট ভুয়া পর্যবেক্ষক নিয়োগ বন্ধ করা। ব্যক্তি পর্যায়ে পর্যবেক্ষক নিয়োগের বিধান চালু করা । পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন ভবিষ্যতে নির্বাচন ভালো করার জন্য কাজে লাগানোর বিধান করা। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধাপগুলো সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষক সংস্থার জন্য সুস্পষ্ট করা। সরকারের পরিবর্তে কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেওয়া। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রদত্ত বৈধ কার্ডধারী সাংবাদিকদের সরাসরি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ, দিনে মোটর সাইকেল ব্যবহার করার অনুমতি প্রদান করা। নির্বাচনী আচরণবিধিঃ ব্যানার, তোরণ ও পোস্টারের পরিবর্তে লিফলেট, ভোটার-প্রার্থী মুখোমুখি অনুষ্ঠান, পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ও সরকারি গণমাধ্যমে প্রচারের সম-সুযোগ প্রদানের বিধান করা। সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪ মেনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণার বিধান করা। ১৯৯০ সালের তিনজোটের রূপরেখার মতো রাজনৈতিক দলের জন্য আচরণবিধি প্রণয়ন করা।কমিশনের সুপারিশগুলো দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর সংস্কার কার্যক্রম শুরু করবে অন্তবর্তী সরকার।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button