প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা শ্রমিকদের
সাইফুল্লাহ তারেক, আটরা গিলাতলা প্রতিনিধি ঃ খুলনার একের পর এক বন্ধ হয়ে যাওয়া বেসরকারি জুট মিলের হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারীর পরিবারের দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে। মিলের শ্রমিক কলোনিতে চলছে বোবা কান্না। মিরেরডাঙ্গা শিল্প এলাকার এ্যাজাক্স জুট মিলটি ২০১৪ সালের ২২ মে বন্ধ হয়ে যায়। মিল বন্ধ হওয়ার ৮ বছর অতিবাহিত হলেও মিল মালিকের কাছ থেকে চুড়ান্ত পাওনা বুঝে পাইনি শ্রমিকরা। এ্যাজাক্স জুট মিল শ্রমিক নজরুল ইসলাম বলেন, নিজের জীবন-যৌবন পার করলাম মিলে। কাজ করে শেষ বয়সে এসে কাজ করার ক্ষমতা নেই। মালিকের কাছে ৬ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে।টাকাটা দিলে অন্য কিছু করে খেতে পারতাম। ৫ জনের সংসার। বড় ছেলে দিনমজুরির কাজ করে। ওর ওপর সংসার নির্ভর। করোনার কারণে বড় ছেলেটার কাজও বন্ধ। কয়েকদিন ধরে বাড়িতে চুলা জ্বলে না। শিরোমনি শিল্পাঞ্চলের মহসেন জুট মিলটি দীর্ঘ ১৩ মাস লে-অফ থাকার পর ২০১৪ সালের ১৭ই জুলাই মিলটি বন্ধ ও মিলের ৬৬৭ জন শ্রমিক-কর্মচারী ছাঁটাই করে মিল কর্তৃপক্ষ। শ্রমিক কর্মচারীদের প্রায় ১০ কোটি টাকা বকেয়া পাওনা রয়েছে। নানা অজুহাতে মিলের মালিক শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করছেন না। মহসেন জুট মিলের শ্রমিক মোঃ বাবুল শেখ বলেন এখন বয়স হয়েছে বাইরে কাজ করার শক্তি নেই অনেক আশা ছিলো মিল থেকে টাকা পেলে বাড়ির সামনে একটা ছোট মুদি দোকান দিয়ে সেখান থেকে যা আয় হবে তা দিয়ে সংসার চালাবো মিল মালিক আজ ,কাল করে প্রায় ৮ বছর পার করে দিলো তারপরও আমি আমার পাওনা ৪ লক্ষ টাকা বুঝে পেলামনা । খুলনার মহসেন, সোনালী, এ্যাজাক্স, জুট স্পিনার্সসহ ব্যক্তিমালিকানা জুট মিলের হাজার হাজার শ্রমিক বর্তমানে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন।মিরেরডাঙ্গা শিল্প এলাকার সোনালি জুট মিলটি বেশ কিছুদিন বন্দ থাকলেও বর্তমানে মিলটি আংশিক চালু রয়েছে। কয়েক কোটি টাকা পাওনা রয়েছে সোনালী জুট মিল শ্রমিক-কর্মচারীদের মিল মালিকের কাছে। শিরোমনি বিসিক শিল্প এলাকার জুট স্পিনার্স মিলটি ২০১৬ সালে বন্ধ হয়। মিলটিতে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ১২০০ শ্রমিক কাজ করতেন। শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া পাওনা রয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। বেসরকারি পাট, সুতা, বস্ত্রকল শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক গোলাম রসুল খান বলেন, একের পর এক কলকারখানা বন্ধের পর শ্রমিকরা অন্য পেশায় গিয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করলেও করোনার কারণে সে পথও বন্ধ হয়ে গেছে। বেসরকারী জুট মিল শ্রমিকদের সমস্যা নিরসনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এ শ্রমিক নেতা । খুলনা বিভাগীয় শ্রম পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, বেসরকারী জুট মিল শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ইতিমধ্যে নানা উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে ইতিমধ্যে আফিল জুটমিল মালিক শ্রমিকদের চুড়ান্ত পাওনা পরিশোধ করা শুরু করেছে । এছাড়া খুব দ্রততম সময়ের মধ্যে মহসেন জুটমিল শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ হবে বলেও তিনি জানান , এবং অতি দ্রুত বেসরকারি জুট মিলের শ্রমিকরা যাতে সরকারি খাদ্য সহায়তা পান সে ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে ।