খুলনা সদর হাসপাতালে দালাল চক্রের উৎপাত বাড়ছে

সহযোগীতায় কতিপয় অসাধু চিকিৎসকও স্টাফ
শেখ ফেরদৌস রহমান ঃ খুলনা জেনারেল হাসপাতালে আবারও বেড়েছে দালালদের উৎপাত। আর এসব দালালদের পাশাপাশি সরাসরি জড়িত কতিপয় অসাধু চিকিৎসক, ওয়ার্ডবয়। এমন অভিযোগ থাকলেও কর্তৃপক্ষ এক প্রকার কিছু জানে না। নাম না প্রকাশ করার শর্তে হাসপাতালের একজন দালাল বলেন, আমি একা কাজ করছিনা। আমাদের সাথে পুরুষ ও মহিলা দালাল আছে। এছাড়া কতিপয় গাইনী চিকৎসকদের কক্ষ থেকে খুলনা সন্ধানী ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও মাইক্রোল্যাব থেকে পরীক্ষা করতে ডিসকাউন্ট লিখে পাঠিয়ে হচ্ছে। এমনকি হাসপাতালটিতে সরকারী খরচে পরীক্ষা সুযোগ থাকলেও দায়িত্বরত ওয়ার্ডবয়রা কমিশনের মাধ্যমে রোগীদের দালালদের হাতে তুলে দিচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায় খুলনা সদর হাসপাতালে মুল প্রবেশ ফটকের সামনে দালালদের অপেক্ষা। কোন রোগী হাতে টিকিট থাকলে তার সাথে আলাপচারিতায় ব্যস্ত হতে। এমনকি সুন্দর কথার জাদুতে নিয়ে যাওয়া হয় বেসরকারী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। আর একবার নিলে কয়েকহাজার টাকার বিল। এমনই অভিযোগ করেন খুলনা রূপসা পালেরহাট এলাকার বাসিন্দা জাহানারা বেগম তিনি বলেন, আমি খুলনা সদর হাসপাতালে অর্থোপেডিক্স বিভাগে যাই পায়ের ব্যাথার জন্য। চিকিৎসক আমাকে এক্স-রেসহ কয়েকটি রক্তের পরীক্ষা করার পরামর্শ করে। আমি হাসপাতালে চত্বর পর্যন্ত যেতেই পিছন থেকে একজন ব্যক্তি আমার কাছ থেকে টিকিট নিয়ে দেখে বলে আমাদের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কম খরচে পরীক্ষা করা যাবে। সব মিলিয়ে খরচ আছে আড়াই হাজার টাকার মত। আপনি আমাকে পনেরেশ টাকা দিলে আমি পরীক্ষা করে দিব। এছাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর অবহেলার কারণে এদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে বলে মনে করেন সচেতন মহল। আমি তার কথা মত যাই খুলনা মা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সেখানে পরিক্ষা করার জন্য । আমি জানতে পারি এই পরীক্ষা খুলনা সদর হাসপাতালে মাত্র চারশত দশ টাকায় করা যেত। এছাড়া অভিযোগ আছে খুলনা সদর হাসপাতালের ১৬ নং এক্স-রে কক্ষে দায়িত্বরত আউটসোর্সিং কর্মচারীদের মাধ্যমে রোগীদের বাহিরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠিয়ে দিতে। এমনকি হাসপাতালটিতে এক্স-রে করার সুযোগ থাকলেও দায়িত্বরত কর্মচারী বলেন, আমাদের হাসপাতালে এই পরীক্ষা বন্ধ আছে। এমনই মিথ্যা তথ্য দিয়ে রোগী পাঠিয়ে দেওয়া। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎকদের কক্ষের সামনে দায়িত্বরত এ্যাসিস্টেন্ট আর খোদ দালাল একই জায়গা বসে থাকে। যে কারণে রোগীরা অনেক সময়ে দালালদেরকে মনে করে মনে হয় হাসপাতালের স্টাফ। আর দালালদের মাধ্যমে সরাসরি কমিশন পকেটে চলে আসে হাসপাতালে দায়িত্বরত কর্মচারীদের কাছে। তবে সব কিছ দেখলেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না খুলনা জেনারেল হাসপাতাল প্রশাসন। এ বিষয়ে খুলনা সিভিলসার্জন ডাঃ সবিজুর রহমান বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানিনা । এমনকি এর আগে আমাকে কেউ বলে নি। আমি এমন অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নিব। আমি কাউকে কোন প্রকার ছাড়া দিব না।