সম্পাদকীয়

প্রসঙ্গ: মহান বিজয় দিবস

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাঁতি পরাধিনতার তার শেকল ভেঙ্গে প্রথম স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করে। ২৪ বছরের নাগপাশ ছিন্ন করে জাতির ভাগ্যকালে দেখা দেয় এক নতুন সূর্যদয়। প্রভাত সূর্যের রক্ত ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের এ পর্যন্ত থেকে ও প্রান্তে। সমন্বয়ে একটি ধ্বনি যেন নতুন বার্তা ছড়িয়ে দেয়; জয় বাংলা বাংলার জয়, পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল, রক্ত লাল রক্ত লাল। মহামুক্তির আনন্দ ঘোর এ দিনে নতুন উল্লাস জাতিকে প্রান সঞ্চার করে সজীবতা এনে দেয়। যুগ যুগ ধরে শোষিত বঞ্চিত বাঙালি চোখে আনন্দ অশ্রু আর ইস্পাত কঠিন দৃয়তা নিয়ে যায় সামনে। আদি বাঙাালিত সাংস্কৃতিক ও আর্থ-সামাজিক জীবন এবং ক্রমাবিকাশের চুরান্ত পর্যায়ে এসে বাঙালির শৌর্য-বীজ হান আর একবার দপ করে জ¦লে উঠে। প্রথম আগুন জ¦লেও ৫২’র একুশে ফেব্রুয়ারী। ফাগুনের আগুনের ভাষা আন্দোলনের দাবি আর উন্মতাল গনমানুষের মুষ্ঠিবদ্ধ হাত একাকার হয়ে যায় সেদিন। ভাষার জন্য প্রথম বলিদান বিশ^বাসি অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করে। সেই থেকে শুরু হয়ে যায় বাঙালির শেকল ভাঙ্গার লড়াই। পাকিস্থানিদের সঙ্গে হিসেব নিকেশের হালখাতার শুরুতেই রক্তের আঁচড় দিয়ে বাঙালির শুরু করে তার অস্তিত্বের লড়াই। পলাশীর আম্রকাননে হারিয়ে যাওয়া সেই সিরাজদৌলা আবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান পূর্বে এ লড়াইয়ে সেনাপতি হিসেবে আবির্ভুত হন। বাঙ্গালি জাতির হাজার বছরের শীর্ষবীর্য ও বিরত্তে¦র অভিস্মরনায় গৌরবের দিন আমাদের মহান বিজয় দিবস। এদিন সারা বিশে^ বীরের জাঁতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ১৯৭১ সাল। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখন্ডের নাম জানান দেয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬ ছয় দফা ৬৯’র গনঅভ্যূূত্থান, ৭১ এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষন ২৫ মার্চের হনহত্যা শুরু হলে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা, ১৭ এপ্রিল মুজিব নগর সরকার গঠন এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে ৩০ লাখ শহীদ ও দু’ লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক সেনাদের আত্মসম্পর্নের মধ্যে দিয়ে চুড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়েছে। অর্ধ শতাব্দির চেয়ে বেশি সময় বাংলাদেশ স্বাধীন। কিন্তু ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান কমেনি। সময়ের ব্যবধানে দেশের অর্থ -বিদেশ পাচার হচ্ছে। দরিদ্র মানুষজন আরো দরিদ্র হচ্ছে। দেশে বড় প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। কিন্তু চলতি সময়ে নিত্য পণ্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকানো যাচ্ছে না। তবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকার কানাহীন মানুষের ঠিকানা তৈরী করে দিয়েছেন। তবে জাতীয় নির্বাচন দিয়ে গ্রহণযোগ্য পন্থা এখনো গাড় তোলা যায়নি। এগিয়ে সরকার বিরোধী দলের পারস্পরিক বিষেদাগার চলছেই। কাজেই স্বাধীনতার সুফল ঘরে ঘরে পৌছে দেওয়ার বড়ইটা চলমান। আমরা মনে করি দেশের জনগন ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে পারলে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি কেউ ঠেকাতে পারবে না। আজ বাংলাদেশ বিশেষ উন্নয়নের মডেল। তাই সব পক্ষের উচিত নিজেদের দুরত্ব কমিয়ে দেশের কল্যাণেকাজ করা। আর তা যতো তাড়াতাড়ি হবে, ততোই মঙ্গল।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button