নগরীতে পাচারের স্বর্ণের বার ছিনতাই, পাচারকারিসহ লবণচরা থানার ৩ পুলিশ আটক
রক্ষক যখন ভক্ষক

স্বর্ণ চোরাচালানকারী ব্যাসদেব দে’র আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান
স্টাফ রিপোর্টার ঃ নগরীতে ব্যাসদেব দে (৩৯) নামে এক স্বর্ণ চোরাচালানকারীর কাছ হতে তিন পুলিশ সদস্য তিনটি সোনার বার ছিনতাই করেছেন। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে দস্যুতার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। অন্যদিকে, বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযুক্ত চোরাকারবারী ব্যসদেব আদালতে অপরাধ স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছেন। তার কাছে থাকা আরও তিনটি সোনার বার উদ্ধার এবং চক্রের অন্য সদস্যদের অবস্থান জেনে গ্রেফতারের লক্ষ্যে তদন্ত কর্মকর্তা তাকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করেন। গ্রেফতার হওয়া তিন পুলিশ সদস্য হলেন, লবনচরা থানার এস আই (নি: হ) মোঃ মোস্তফা জামান, এএসআই (নি:) মোঃ আহসান হাবিব এবং কনস্টেবল ৫৫২৮ মোঃ মুরাদ হোসেন। এই তিন পুলিশসহ চার জনকে শুক্রবার সন্ধ্যায় আদালতে সোপর্দ করা হয়। তাদের মধ্যকার ব্যাসদেবের দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী আদালত ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক রেকর্ড করেছেন। পরবর্তীতে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আল আমিন চার আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতের একটি সূত্র ও থানা পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছেন। অভিযুক্ত তিন পুলিশকে বরখাস্তসহ পাশাপাশি বিভাগীয় মামলা প্রস্ততি নেওয়া হয়েছে। ছিনতাই করা তিন স্বর্নের বার আনুমানিক প্রায় ৩০ লাখ টাকা। কেএমপি’র পাঠানো এক প্রেস রিলিজ থেকে জানা গেছে, গত ১১ জানুয়ারি দুপুরে এসআই মোঃ মোস্তফা জামান লবনচরা থানার সাচিবুনিয়া বিশ^রোড মোড়ে ফোর্সসহ মোবাইল ডিউটি করাকালীন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন- টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসের একটি বাসে অবৈধ স্বর্ণের বার নিয়ে এক ব্যক্তি নগরীতে প্রবেশ করছেন। তখন পুলিশের ওই টিম খানজাহান আলী সেতু হতে জিরোপয়েন্টগামী মহাসড়কের দক্ষিন পাশে অবস্থান নেন, পুলিশ দেখে ব্যাসদেব নামের ওই ব্যক্তি বাস থেকে নেমে সন্দেহজনকভাবে দ্রুত হেটে সরে যাবার চেষ্টা করেন। পুলিশ তাকে দাড়ানোর কথা বললে তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকালে আটক হন। এরপর তিনি প্যান্টের বেল্টের নিচে সুকৌশলে বানানো গোপন পকেট হতে খাকি রঙের কচটেপ দিয়ে মোড়নো ছয়টি স্বর্ণের বার বের করে এসআই মোস্তফা জামানের হাতে তুলে দেন। পুলিশ সদস্যরা ভয়-ভীতি দেখিয়ে তার কাছ হতে তিনটি সোনার বার ছিনিয়ে নেয় এবং বাকি তিনটি বার ফেরৎ দিয়ে ছেড়ে দেয়। পুলিশ সদস্যরা ওই চোরাকারবারীকে কিছুদূর এগিয়েও দেন। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি সাউথ তাজুল ইসলাম বলেন, অপরাধ যেই করুক তাদের কোনো ছাড় নেই। গ্রেপ্তার তিন পুলিশ সদস্যকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় মামলার প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি চোরাকারবারির কাছ থাকা বাকি তিনটি স্বর্ণবার উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। লবণচরা থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, স্বর্ণ পাচারকারিকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ও অভিযুক্ত তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৩৯২ ধারায় মামলার পর গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। লবনচরা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) নাহিদ হোসেন মৃধা বলেন, চোরাচালানের বাকি তিনটি সোনার বার কোথায় আছে? চক্রের অন্য সদস্য করা? তাদের অবস্থান কোথায়? এসব প্রশ্নের উত্তর জেনে উদ্ধার-গ্রেফতারের চেষ্টায় আসামি ব্যাসদেবকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।