স্থানীয় সংবাদ

খুলনার বই মেলায় শেষ শুক্রবার ছিল কানায় কানায় পরিপূর্ণ

মেলার সময় বাড়ানোর দাবি নাকচ

স্টাফ রিপোর্টারঃ খুলনার একুশে বই মেলার গতকাল ছিল শেষ শুক্রবার। আগামী বৃহস্পতিবার শেষ হবে মাসব্যাপী চলমান এই বই মেলা। পুরো মেলা জুড়ে কবি লেখক, সাহিত্যিক আর পাঠকের ভীড় চিল লক্ষণীয়। বৃহস্পতিবার রাতের বৃষ্টিতে মাঠে কোন কোন স্পটে পানি ও কর্দমাক্ত মাঠ হলেও দর্শক সমাগম ছিল বিগত দিনের চেয়ে বেশী। বই মেলা সময় দু’ দিন বাড়ানোর দাবি করলেও সাব না করে দিয়েছে মেলা কমিটির সদস্য সচিব ও বয়রা বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারের উপ-পরিচালক মোঃ হামিদুর রহমান। বয়রা বিভাগীয় গণগ্রন্থাগার ২১শে বই মেলায় গেটে দশর্কদের ভেজায় ভীড়। ভীড় ঠেলেই ভিতরে যেতেই দেখা মেলো স্টলে স্টলে দর্শক ও ক্রেতাদের ভীড়। বইয়ের দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা যায়। একুশের আলো খুলনার প্রধান নির্বাহী মাহাবুবুল হক বলেন, তার স্টলে নাম মাত্র মূল্যে রক্তের শ্রেণী নির্ণয় করা হচ্ছে। এ জন্য রাখা হচ্ছে ১৫ টাকা। ছুটির দিনে মেলায় অনেক ভীড় হয়েছে। নানা শ্রেনী পেশার মানুষ মেলায় এসেছে। আসফিয়া বুক ডিপো স্টলের প্রতিনিধি কেএম তুহিন বাবু ক্রেতাদের চাপে কথা বলতে পারছিলেন না। তারপরও একটু সময় নিয়ে তিনি বলেন, ছুটির দিনে দর্শক সমাগম প্রচুর হয়েছে। বেচাবিক্রি অনেক ভাল। পরিবেশও খুব ভাল। মোস্তাক আহমেদের সাইন্স ফিকশন বইটি ভাল বিক্রি হচ্ছে। মধ্য বয়সী ক্রেতা বেশী। মেলার সময় বাড়ানোর জোর দাবি জানান তিনি। বুক পয়েন্ট স্টলের প্রতিনিধি আল আমিন জানান, দর্শক সমাগম প্রচুর হয়েছে। কিন্তু বেচাবিক্রি সেভাবে বাড়েনি। তিনি বলেন, ধর্মীয় ও ছোটদের বই বেশী বিক্রি হচ্ছে। তিনিও মেলার সময় শেষ শুক্রবার মাত্র একদিন বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেছেন। গার্ডিয়ান পাবলিকেশন স্টলের প্রতিনিধি মুনতাসির মামুন বলেন, তার স্টলে সবচেয়ে বেশী বিক্রি হচ্ছে প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ নামক বইটি। তরুণ ক্রেতা তার স্টলে বেশী। তারা ধর্মীয় বই ক্রয় করছে। এছাড়া ভাল বিক্রি হচ্ছে বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মদ (সাঃ), বন্ধন, মুসলিম চরিত্র, প্রোডাক্টিভ মুসলিম, সিক্রেটস অব জায়োনিজম, মাআলা মোস্তফা, ম্যাসেজ, প্রকৃত আলিমের সন্ধানে, আহবানসহ কয়েকটি বই। বৃষ্টির পানি আর কাদার জন্য কয়েকটি স্টলের সামনে দিয়ে লোকজন চলতে পারছে না বলে তিনি জানান। বিষয়টি দায়িত্ব নিয়ে বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার খুলনার উপ-পরিচালককে দেখা উচিত ছিল বলে জানান বিশিষ্ট কবি রূপা বাড়ৈই। আফসার ব্রাদার্স নামক স্টলের প্রতিনিধি ফিরোজ মৃধা জানান, তার স্টলে অনুবাদ বই বেশী বিক্রি হচ্ছে। মধ্য বয়সী পাঠকরা বই বেশেী কিনছেন। আগামী শুক্র ও শনিবার এই দু’দিন বই মেলার সময় বাড়ালে ভাল হতো বলে তিনি মনে করেন। আলফা বুক হাউজ স্টলের প্রতিনিধি মনোজ কুমার দে বলেন, পদ্মজা বইটি তার বিক্রির শীর্ষে। পাঠক যা আসছে তাতে তিনি সন্তুষ্ট।
বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার, খুলনা উপপরিচালক মোহাম্মদ হামিদুর রহমান জানান, মেলা জমে উঠেছে। ছুটির দিনে মেলা কানায় কানায় পরিপূর্ন ছিল। শুক্রবার পর্যন্ত বেশী বই বিক্রির দাবিদার আসফিয়া বুক ডিপো স্টল মালিক। বৃষ্টির কারণে মাঠের কোন কোন স্পটে পানি জমেছে। তবে আজ শনিবার বালি দিয়ে ভরাট করা হবে বলে জানান। তিনি জানান, মেলার সময় বাড়ানোর কোন সুযোগ নেই। কারণ ভিন্ন নামে আরো একটি বই মেলার অনুমোদন নিয়ে স্বাধীনতা একাডেমি নামক একটি সংগঠন খুলনায় অবস্থান করছে। তারা ১ মার্চ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত এখানে বই মেলা করবে বলে তিনি জানান। এদিকে একুশে বইমেলা খুলনার ২৩ তম দিন অতিবাহিত হলো। ক্রেতা দর্শকদের স্বতস্ফূর্ত উপস্থিতিতে মেলা প্রাঙ্গণ ছিল মুখরিত। বইয়ের দোকানগুলোতে ক্রেতা দর্শকদের উপস্থিতি পূর্বের তুলনায় অনেক বেড়েছে। বিকালে বইমেলার মঞ্চে সাংস্কৃতিক আয়োজন শুরু হয় ‘ডাক বিভাগীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বয়রা, খুলনা’র ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। পরবর্তীতে বইমেলার মঞ্চে ছিল সাহিত্য সংগঠন ‘কবি সংসদ, বয়রা, খুলনা’র এর আলোচনা ও আবৃত্তি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। পরবর্তীতে আবৃত্তি সংগঠন ‘ মেঘদূত চক্র’ এর বাচিক শিল্পীবৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করে। মেলামঞ্চের সান্ধ্যকালীন সাংস্কৃতিক আয়োজনে ছিল ৩টি সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিবেশনা। প্রথমে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে ‘ক্লাসিক সংগীত একাডেমী, নান্দিক সংগীত একাডেমী এবং প্রাণ তরঙ্গ, খুলনা’র শিল্পীবৃন্দ।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button