জাতীয় সংবাদ

মাহে রমজানের সওগাত-১২

মুহম্মদ আলতাফ হোসেন
আজ মাহে রমজানের দ্বাদশ দিবস। মাগফিরাত বা ক্ষমার দশকের দ্বিতীয় দিন। মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের সুরা জুমার-এর ৫৩ আয়াতে বলেছেন, হে আমার বান্দারা! তোমরা যারা নিজেদের আত্মার উপর জুলুম করেছ তারা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হইও না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল গুনাহ মাফ করেন। নিঃসন্দেহে তিনি অধিক ক্ষমাশীল ও মেহেরবান। বান্দাহ যত গুনাহই করুক না কেন, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে, তওবা করলে তিনি ক্ষমা ও মাফ করে দেন। তওবা শব্দের অর্থ হলো প্রত্যাবর্তন করা বা ফিরে আশা। গুনাহগার বান্দা নিজের কৃত গুনাহের কারণে লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে তওবার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রর্থনা করে এবং ভবিষ্যতে এ রকম গুনাহ যাতে আবার সংঘটিত না হয় সেজন্য আল্লাহর দিকে ফিরে আসে। বান্দা খাঁটি মনে তওবা করে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইলে আল্লাহ তায়ালা তার তওবা কবুল করেন এবং তাকে হকের পথে থাকার তাওফিক দেন। পবিত্র কুরআনের সুরা শুরার ২৫ আয়াতে আল্লাহ বলেন ঃ তিনি সেই সত্তা যিনি বান্দার তওবা কবুল করেন, তাদের গুনাহ মাফ করেন এবং তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ তা জানেন।
মাগফিরাত বা ক্ষমার বিরাট সুযোগ রয়েছে এই মাহে রমজানে। এই মাসে দিবা-নিশি হর-হামেশা আল্লাহ দোয়া কবুল করেন এবং যারা ক্ষমা প্রার্থনা করেন তাদের তওবা কবুল করেন। আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি মাহে রমজানে ঈমান ও ইহতেসাবের সাথে রোজা রাখবে তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গুনাহ সমুহ মাফ হয়ে যাবে। মাহে রমজান হচ্ছে তওবা ও ক্ষমার মওসুম। এ মাস রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের মাস। আল্লাহর কাছে তওবার জন্য- মহামূল্যবান এই মাস। তাই তো আল্লাহর রসুল (সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন. আল্লাহ দিনে গুনাহকারীদের গুনাহ মাফ করার জন্য রাতে তার ক্ষমার হাত সম্প্রসারিত করেন এবং রাতে গুনাহকারীদের জন্য দিনে নিজ ক্ষমার হাত সম্প্রসারিত করেন। কিয়ামতের আগে পশ্চিমে সূর্যোদয় পর্যন্ত এভাবেই চলতে থাকবে। প্রকৃত পক্ষে আল্লাহর বান্দা তওবা করে মাফ চাইলেই মাফ পেতে পারে। মহানবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সেই ব্যক্তির নাক ধূলি মলিন হোক (অর্থাৎ সেই ব্যক্তি ধ্বংস হোক) যে রমজান পেয়েছে, কিন্তুু তার গুনাহ মাফ হয়নি। হাদীসে কুদসীতে আরো এসেছে ঃ আল্লাহ বলেন, হে আমার বান্দারা, তোমরা দিনে রাতে যত গুনাই করে থাক, আমি সকল গুনাহ মাফ করি। তোমরা আমার কাছে ক্ষমা চাও, আমি তোমাদের গুনাহ মাফ করে দেব। গুনাহ মাফের জন্য এর চাইতে বড় প্রতিশ্রুতি আর কি হতে পারে। মহান আল্লাহ বান্দার তওবা কবুুল করেন। কিন্তুু শর্ত হলো এখলাসের সাথে তওবা করতে হবে এবং পরে ইচ্ছাকৃত ভাবে আর সেই গুনাহর পুনরাবৃত্তি কর যাবেনা। পবিত্র কুরআনের সুরা আল ইমরানের ১৩৫-১৩৬ আয়াতে আল্লাহ বলেন, যারা অশ্লীল কাজ করে ফেললো, কিংবা নিজের আÍার উপর জুলুম করে ফেললো, নিজের গুনাহ মাফের জন্য আল্লাহকে স্মরণ করলো, আল্লাহ ছাড়া আর কে আছে যিনি গুনাহ মাফ করেন এবং যারা জেনে শুনে কৃত গুনাহর পুনরাবৃত্তি করে না। তাদের পুরস্কার হলো, আল্লাহর ক্ষমা এবং এমন জান্নাত যার তলদেশ দিয়ে নহর প্রবাহিত। তারা সেখানে চিরদিন থাকবে। আমলকারীদের পুরস্কার কতই না উত্তম। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিকভাবে তওবা করার তাওফকি দিন। আমীন!

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button