বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল!
মেহেদী মাসুদ খান ঃ ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান/আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান।’ এভাবেই বর্ষা ঋতুকে গানে গানে অভিবাদন জানানো হয় বাংলাদেশে। এক পশলা ঝড়-বৃষ্টি এবার হয়েছিল কয়েকদিন আগে ঘূর্ণিঝড় রিমালের সময় ; তারপর আর বাদলের দেখা নেই। আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ। যে প্রচন্ড তাপমাত্র বয়ে চলেছে খুলনার উপর দিয়ে তাতে আষাঢ়ের প্রথম দিনটি তাপমাত্রাই দিয়ে যাবে দক্ষিণ বঙ্গে বলে ধারনা করছে খুলনা আবহাওয়া অফিস। সে যাই হোক বর্ষাতো আসবেই ইনশাআল্লাহ, শোনাবে নূপুরের শব্দ। কদম, কেতকী ধোয়া বৃষ্টিস্নাত দিন বাঙালির জীবনের হয়তো নিয়ে আসবে নতুন কোনো বারতা। বর্ষা মানেই আবেগ, অনুভূতির জোয়ার। এ জোয়ারে ভাসেননি এমন কবি-সাহিত্যিক পাওয়া যায় না। শুধু যে কবি-সাহিত্যিক, তা নয়-সাধারণ মানুষও। কালীদাস থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জীবনানন্দ দাশ বা নির্মলেন্দু গুণ, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে হুমায়ূন আহমেদ-কেউ বর্ষাকে এড়িয়ে যেতে পারেননি। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুতুল নাচের ইতিকথা, পদ্মা নদীর মাঝি, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথের পাঁচালী, জহির রায়হানের হাজার বছর ধরে, হুমায়ূন আহমেদের শ্রাবণ মেঘের দিনে বর্ষা এক বিপুল বিস্ময় নিয়ে আবির্ভূত। আষাঢ় ও শ্রাবণ দুই মাস বর্ষাকাল। আর বর্ষাকাল মানেই মেঘ, বৃষ্টি, প্রেম, নতুন প্রাণ, জেগে ওঠার গান। রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশ তাই তো বলেছেন, ‘এই জল ভালো লাগে;-বৃষ্টির রূপালি জল কত দিন এসে/ধুয়েছে আমার দেহ-বুলায়ে দিয়েছে চুল-চোখের উপরে/তার শান্ত স্নিগ্ধ হাত রেখে কত খেলিয়াছে,-আবেগের ভরে।’ বর্ষা আমাদের মনকে স্নিগ্ধ করে তোলে। পুরোনো জঞ্জাল ধুয়েমুছে আমরাও জেগে উঠি প্রাণচাঞ্চল্যে।