সম্পাদকীয়

ব্যবসায়ীদের সচেতন করতে হবে

ফুটপাতের খাবারে রোগজীবাণু

প্রাত্যহিক জীবনে মানুষ ঘরোয়া খাবারের পাশাপাশি বাইরের খাবার খেতে অনেকে পছন্দ করেন। রাস্তার পাশে দেখা যায় বিভিন্ন খাবারের দোকান। এসব দোকানে প্রতিদিন নানা রকম সুস্বাদু খাবার তৈরি করে থাকেন বিক্রেতারা। চলার পথে আমরা প্রতিনিয়ত এসব খাবারের সাথে নিজেকে জড়িয়ে নিচ্ছি। কেউ ভোগ সামাল দেয় আবার কেউ সখের বসে খাবার গুলো গ্রহণ করে থাকেন। কিন্তু জানার বিষয় হলো আমরা যে রাস্তার পাশের খোলা খাবার গুলো খাচ্ছি এগুলো কি সুস্বাস্থ্যেকর খাবার? নিশ্চয় এই প্রশ্নটার উত্তর একজন সাধারণ মানুষের জানা নেই। তবে এটি গবেষণার মাধ্যমেই সঠিক উত্তরটা পাওয়া যায়। সাম্প্রতিক একটি গবেষণা দল বাইরের খাবার গুলো চিহ্নিত করে তার উপর গবেষণা করেছেন। এতেই মিলছে খাবারের আসল রূপ! বিএফএস করা গবেষণায় দেখা গেছে, রাস্তার পাশে বিক্রি করা চটপটি, ছোলা-মুড়ি, স্যান্ডউইচ, আখের রস, অ্যালোভেরা শরবত ও সালাদে, এই ছয়টি স্ট্রিট ফুডে মিলেছে মাত্রাতিরিক্ত ই-কোলাই (মানুষের মলে থাকে), সালমোনেলা এসপিপি ও ভিব্রিও এসপিপি ব্যাকটেরিয়া, যা কলেরা, ডায়রিয়াসহ মানুষের পেটের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৭টি জোন থেকে এসব খাবারের ৪৫০টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। গড়ে প্রতি প্লেট চটপটিতে সাত কোটি ২০ লাখ ই-কোলাই, সাড়ে ৭০০ সালমোনেলা ও সাড়ে ৭০০ ভিব্রিও ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে। ছোলা-মুড়িতে ই-কোলাই পাওয়া গেছে সাত লাখ ৪০ হাজার, সালমোনেলা দুই হাজার ও ভিব্রিও ৩০ লাখ। স্যান্ডউইচে ই-কোলাই পাওয়া গেছে দুই হাজার, সালমোনেলা দুই হাজার ও ভিব্রিও এক কোটি ৬০ হাজার। আখের রসে ই-কোলাই পাওয়া গেছে ৬৫ হাজার, সালমোনেলা ১৭ হাজার ও ভিব্রিও ১৩ হাজার। অ্যালোভেরা শরবতে ই-কোলাই পাওয়া গেছে ৫৬ হাজার, সালমোনেলা ১৮ লাখ ও ভিব্রিও ১৪ হাজার। সালাদে ই-কোলাই পাওয়া গেছে এক হাজার ৮০০, সালমোনেলা ৫১০ ও ভিব্রিও ৩০০। এসব স্ট্রিট ফুড খেয়ে প্রতি ১০ হাজার মানুষের মধ্যে দুজন ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়ার কারণে অসুস্থ হচ্ছে। একইভাবে সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ার কারণে চারজন ও ভিব্রিও ব্যাকটেরিয়ার কারণে একজন অসুস্থ হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মোকাবেলায় খোলাবাজারের ব্যবসায়ীদের সচেতন করতে হবে। ফুটপাতের খাবার বিক্রেতাদেরকে সুস্বাস্থ্যেকর খাবার পরিবেশনায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে। এছাড়াও যারা সচেতন হবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। কেননা অসুস্থতায় মানুষ ভোগে এতে মৃত্যু পর্যন্ত হয়ে থাকে। এসব খাবারের বিষয়ে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে খাবার বিক্রেতা এবং জনগণকে সচেতন করতে হবে। যেন আগামীতে জীবাণুতে কেউ সংক্রমিত না হয়।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button