বিএসএফের বিরুদ্ধে তৃতীয় লিঙ্গের একজনকে নির্যাতনের অভিযোগ
প্রবাহ রিপোর্ট : পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যদের হাতে কিরণ (৪৫) নামে তৃতীয় লিঙ্গের একজন মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। গতকাল সোমবার সকালে কিরণকে উদ্ধার করে প্রথমে তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পরে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সীমান্তের একটি সূত্র জানায়, গত রোববার রাতে বাংলাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে ১১ জনের তৃতীয় লিঙ্গের একটি দল অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। তারা নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় থাকতেন। সানজিতা নামে একজনের নেতৃত্বে কাজের খোঁজে ভারতে যাওয়ার জন্য সীমান্তে যান। এ নিয়ে বাংলাবান্ধা এলাকার কয়েকজন গরু চোরাকারবারি ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাদের সীমান্ত পার করে দেবেন বলে কথা হয়। গত রোববার রাতে তারা বাংলাবান্ধার একটি বাড়িতে ছিলেন। রাত ১টায় বৃষ্টির মধ্যে তাদের সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় ১০ জন দৌড়ে ভারতের ভেতরে চলে গেলেও পায়ে সমস্যা থাকায় বিএসএফ সদস্যদের হাতে ধরা পড়েন কিরণ। এ সময় কয়েকজন বিএসএফ সদস্য তাকে লাঠি ও রাইফেলের বাট দিয়ে বেদম মারপিট করেন। একপর্যায়ে তাকে বাংলাদেশি সীমান্তে ফেলে যান তারা। গুরুতর আহত কিরণ বলেন, ভারতে না কি কাজ পাওয়া যায় এবং রোজগারও বেশি। এজন্য ১০ জনের সঙ্গে আমিও ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। দালালদের ১০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। মধ্যরাতে তারা সীমান্তে দৌড় দিতে বললে আমার দলের ১০ জন দৌড়ে চলে যায়। আর আমি পড়ে গেলে বিএসএফ আমাকে ধরে তিন ঘণ্টা মারধর করে সীমান্তে ফেলে যায়। পরে বিজিবি সদস্যরা উদ্ধার করেন। তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বি বলেন, ওই ব্যক্তিকে বিএসএফ মারধর করেছে। বিজিবির মাধ্যমে তাকে উদ্ধার করে সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রহিমুল ইসলাম বলেন, তাকে তেঁতুলিয়া থেকে এখানে রেফার করা হয়েছিল। তার হাত-মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হাতে ফ্যাকচার হতে পারে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রংপুরে পাঠানো হয়েছে। পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল জিয়াউল হক বলেন, তিনি অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করেছিলেন। বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। এ নিয়ে পতাকা বৈঠকের জন্য আহ্বান করা হয়েছে বিএসএফকে।