স্থানীয় সংবাদ

ইসলামাবাদ কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ

পদত্যাগ না করলে আজ আবারো আন্দোলন

স্টাফ রিপোর্টারঃ অধ্যক্ষ অপসারণ ও তার দুর্নীতির বিচারের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করেছে খুলনা সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত ইসলামাবাদ কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষার্থীরা। রবিবার সকাল ৯টা থেকে তারা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করতে থাকে। বেলা ১২টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত করেন। নগরীর বসুপাড়াস্থ ইসলামাবাদ কলেজিয়েট স্কুলের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী তানভীর মাহতাব শশী জানান, অধ্যক্ষ একজন দুর্নীতিবাজ। কলেজের শিক্ষার মান না বাড়িয়ে আ’লীগ নেতা ও মেয়রের চাটুকতায় ছিলেন বেশী ব্যস্ত। এ কলেজে বাংলা ও ইংলিশ ভার্সন থাকলেও লেখাপড়া ও স্কুলের পাঠ দানের পরিবেশ মোটের ভাল ছিল না। শিক্ষার্থীদের কোচিং করা ছিল বাধ্যতামূলক। বোর্ডের প্রশ্নপত্রে পরিক্ষা না নিয়ে নিজস্ব করা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নিত। এতে করে যারা শিক্ষকদের কাছে কোচিং না করতো তাদের ভাল ফলাফল করা কস্টকর হতো বলে অভিভাবক রোকসানা ইসলাম ও মাহমুদা জানান। তারা জানান, সকাল ৯টা থেকে শিক্ষার্থীরা দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ আরিফ বিল্লাহের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। চলে বেলা ১২টা পর্যন্ত। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে ত্রি পক্ষীয় বৈঠক করে। বৈঠকে কলেজের আতœসাৎকৃত ২৭ লাখ টাকা সন্ধ্যার ভিতর ফেরৎ ও পদত্যাগ করার প্রতিশ্রুতি দিলে শিক্ষার্থীরা চলে যায়। তবে সন্ধ্যা ৭টায় দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ আবু দারদা আরিফ বিল্লাহ পদত্যাগ করার কথা থাকলেও করেননি বলে অভিভাবকরা জানান। কেসিসির শিক্ষা ও সাংস্কৃতি অফিসার এসকেএম তাছাদুজ্জামান বলেন, অত্র স্কুলের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত ফিস নেয়ার অভিযোগ করেছে। আর শিক্ষকরা অভিযোগ করেছে প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভুক্ত করার জন্য তাদের কাছ থেকে অধ্যক্ষ টাকা নিয়েছে। এসব বিষয়ে সামনে রেখে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছে। অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করেছে। সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে আপাতত পরিস্থিতি শান্ত আছে বলে তিনি জানান। অভিভাবক লাবনী বলেন, স্কুল ঠিকমত ক্লাস হয় না। কর্মচারিরা মেয়রের লোক বলে তাদের আচরণ খুবই খারাপ। তারা অভিভাবদের পাত্তাই দেয় না। ক্লাস টাইমে অধ্যক্ষ ফালতু বিষয় নিয়ে মিটিং করে। নগরীর সকল প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞান মেলায় অংশ নিলেও এ স্কুল অংশ নেয়নি। সাইন্স ল্যাবরেটরিতে প্রয়োজনীয় কোন জিনিসপত্র নেই। টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করলেও টাকার বিনিময়ে পাশ করিয়ে দেয়। এত বড় প্রতিষ্ঠানে বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই। ক্লাসের ফ্যান দীর্ঘ দিন নস্ট হয়ে পড়ে আছে। তারা শিক্ষা বোর্ডের প্রশ্ন পত্রে পরীক্ষ না নিয়ে নিজেদের করা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়। যাতে করে তাদের কোচিং-এ শিক্ষার্থীরা পড়ে। এ কারণে বোর্ডের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়া হয় না। প্রাইভেট আর কোচিং বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। গণিত বিভাগের শিক্ষক আনোয়ার সবচেয়ে খারাপ বলে অভিভাবক শারমীন আক্তার জানান। তারা জানান, দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের লোকেরা (শিক্ষক-কর্মচারি) স্কুলের শিক্ষার মান নস্ট করে ফেলেছে। প্রিন্সিপাল আর ভাইস প্রিন্সিপালের দলাদলিতে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ব্যবস্থা মাচায় উঠেছে। অভিভাবক তবিবুর রহমান পলাশ জানান, ২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অধ্যক্ষ অতিরিক্ত ৬৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এমপিও ভুক্তকরণের কথা বলে শিক্ষকদের কাছ থেকে মাথা পিছু দেড় লাখ টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে। ত্রি পক্ষীয় বৈঠক শেষে সেনাবাহিনী তাকে বাড়িতে পৌচ্ছে দিয়ে আসে।এসব ছাত্ররা ভূয়া ভূয়া আর আ’লীগের দালাল বলে শ্লোগান দেয়। তার দেয়া কথা মতো রাত ৮টার দিকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের বাসায় গেলে তিনি পদত্যাগ না করে পালিয়ে যান। তিনি যদি পদত্যাগ না করেন তবে আজ সোমবার আবারো শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করবে বলে শিক্ষার্থী আকাশসহ অনেকে জানান।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button