স্থানীয় সংবাদ

ইসরাইলি নৌ-ঘাঁটিসহ বিভিন্ন স্থাপনায় রকেট হামলায় বিপর্যস্ত ইসরাইল

# মরণ কামড় দিতে গাজায় হাসপাতালের রোগিদেরকে পুড়িয়ে মারছে ইসরায়েলি সেনারা
# ইসরাইলি বাহিনী গাজার আল-শাতি শরণার্থী শিবিরে শিশুদের লক্ষ্য করেও হামলা চালিয়েছে, এতে পাঁচ শিশু নিহত হয়েছে #

প্রবাহ রিপোর্ট ঃ লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ সোমবার সকালেও ইসরাইলের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি ও স্থাপনার ওপর একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে দখলকৃত ফিলিস্তিনের স্টেলা মারিস নৌ-ঘাঁটিও। আল-মায়াদিন টিভি নেটওয়ার্কের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে জানায়, এই হামলাগুলো গাজার জনগণের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এবং লেবানন ও তার জনগণকে রক্ষার জন্য পরিচালিত হয়েছে। সেই সঙ্গে এই হামলাকে দক্ষিণ লেবাননের গ্রাম ও বেসামরিক লোকদের ওপর চালানো ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিশোধ হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়। হিজবুল্লাহ এদিন সকাল সাড়ে ৭টায় শেবা ফার্মে অবস্থিত ইসরাইলি জিবদিন ঘাঁটিতে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। যা সরাসরি ঘাঁটিতে আঘাত হানে বলে জানা গেছে। অপর একটি বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ নিশ্চিত করে যে, সকাল সাড়ে ৯টায় ইসরাইলের উত্তর-পশ্চিম হাইফা শহরের স্টেলা মারিস নৌ-ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। যা ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে চালানো হয়। হিজবুল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, লেবানন ও তার জনগণকে রক্ষা করতে এবং শত্রুর বিরুদ্ধে তাদের দায়িত্ব পালন অব্যাহত থাকবে। লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীটি জানায়, তারা সকাল পৌনে ১১টায় দক্ষিণ লেবাননের মারুন আল-রাস গ্রামে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীকে লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালায়। এর আগে রোববার দিবাগত রাত সোয়া ১টায় হিজবুল্লাহ আল-লাব্বুন্নেহ এলাকায় ইসরাইলি সেনা সমাবেশের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। একই এলাকায় আরও একটি হামলা রাত ১২টা ০২ মিনিটে পরিচালিত হয়। হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা রাত সোয়া ৩টায় ইসরাইলি পদাতিক বাহিনীর একটি গ্রুপের ওপর রকেট হামলা চালায়। যারা লেবাননের মাক্বাবা গ্রামের দিকে প্রবেশের চেষ্টা করছিল। এর আগে, রোববার ইসরাইলি বাহিনীর ওপর একাধিক অভিযান চালায় হিজবুল্লাহ। যাতে বহু ইসরাইলি সেনা নিহত ও আহত হয়। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হামলায় হিজবুল্লাহর ড্রোন হাইফার দক্ষিণে বিনইয়ামিনা-গিভ’আত আডা শহরের গোলানি ব্রিগেডের সামরিক ক্যাম্পে আঘাত হানে। ইসরায়েলি সূত্র জানায়, সেই হামলায় চারজন ইসরাইলি সেনা নিহত এবং ১১০ জন আহত হয়। অপরদিকে, গাজায় হাসপাতালের রোগীদেরকেও পুড়িয়ে মারল ইসরাইল
ইসরাইলি বিমান হামলায় গাজায় অবস্থিত আল-আকসা শহিদ হাসপাতালের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আগুন ধরে যায়। এতে তিন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৪০ জন আহত হয়েছেন। রোববার সেন্ট্রাল গাজার দেইর আল-বালাহ শহরে অবস্থিত এই হাসপাতালের মাঠে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের অস্থায়ী তাঁবুতে বিমান হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। এ হামলার পরপরই আগুন ধরে যায়, যা ৩০টি তাঁবুতে ছড়িয়ে পড়ে। এই তাঁবুগুলোতে থাকা বেসামরিক নাগরিকরা আগুনের মধ্যে আটকা পড়ে। গাজার সিভিল ডিফেন্সের মতে, ইসরাইলের এই আগ্রাসন দেখিয়ে দিল যে, গাজার কোনো স্থানই এখন নিরাপদ নয়। এছাড়াও আল-মুফতি স্কুলেও বোমা হামলা চালায় দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। যেখানে ২২ ফিলিস্তিনি নিহত হন। যার মধ্যে ১৫টি শিশু এবং একজন নারী ছিলেন। এই স্কুলটিতে হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল এবং এটি কোনো যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত ছিল না। আল-মুজাহিদিন প্রতিরোধ আন্দোলন এই হত্যাকা-গুলোকে নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এটি বিশ্বের নীরবতার প্রমাণ, যারা ইসরাইলের মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের বিষয়ে নিশ্চুপ রয়েছে। সংগঠনটি আরও বলেছে, ইসরাইল গাজাজুড়ে এই ধরনের অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে, যাতে ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিরোধের ইচ্ছাকে ধ্বংস করা যায়। ইসরাইলি বাহিনী গাজার আল-শাতি শরণার্থী শিবিরে শিশুদের লক্ষ্য করেও হামলা চালিয়েছে। এতে পাঁচ শিশু নিহত এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এসব ঘটনার জন্য যুদ্ধবাজ ইসরাইল এবং তার মিত্রদেরকেই সম্পূর্ণ দায়ী করেছে হামাসসহ ফিলিস্তিনের অন্যান্য সংগঠনগুলো। সূত্র: আল-মায়াদিন

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button