জাতীয় সংবাদ

গ্রেপ্তার আতঙ্কে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

# শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন যে আন্দোলন শুরু, সেই আন্দোলনকে সন্দেহ করে, ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও গ্রেফতার করা হচ্ছে
# এভাবে চলতে থাকলে সারাদেশের গ্রামাঞ্চল ব্লাক আউট শাট ডাউনে পরিণত হবে

প্রবাহ রিপোর্ট ঃ আওয়ামী লীগ সরকার থাকতেই শুরু হওয়া আন্দোলন ১দিন আগে প্রত্যাহার করার পরও পল্লী বিদ্যু সমিতির কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুতি ও দেশের বিভিন্ন সমিতিতে যৌথ বাহিনীর তৎপরতায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছেন কর্মকর্তা কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাতে আটক হওয়া আন্দোলনের ৬ জন সমন্বয়ককে শুক্রবার আদালতে নেওয়া হলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার বিশেষ আদালত। তিন দিনের রিমান্ড আদেশ পাওয়া কর্মকর্তারা হলেন, প্রকৌশলী রাজন কুমার দাস (এজিএম, মুন্সীগঞ্জ), দীপক কুমার সিংহ (ডিজিএম, কুমিল্লা), আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া (ডিজিএম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া), বেলাল হোসেন (ডিজিএম, সিরাজগঞ্জ), রাহাত (ডিজিএম, মাগুরা), মনির হোসেন (এজিএম, নেত্রকোণা)। এদিকে কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার ও কারাগারে প্রেরণের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে আন্দোলনরত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বৈষম বিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) আন্দোলনের সমন্বয়ক এজিএম আব্দুল হাকিম ও এজিএম সালাউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, অভিন্ন সার্ভিস কোড বাস্তবায়ন ও অনিয়মিতদের নিয়মিতকরণের দুই দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহক সেবা চালু রেখেই নিয়মতান্ত্রিকভাবে অহিংস আন্দোলন করে আসছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার কোনো কর্মসূচি না থাকা সত্ত্বেও আরইবি কর্তৃক বিনা কারণে ২০ জন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত ও ১০ জনের নামে মামলা করা হয়। আরইবির এ উসকানিমূলক কর্মকা- বন্ধ, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং চাকরিচ্যুতির আদেশ বাতিলের দাবিতে শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। পরবর্তীতে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমের অনুরোধে সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীদের দাবি পূরণে আলোচনা এবং আটকদের ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাসে আলোচনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, কর্মসূচি প্রত্যাহারের পরও রাতেই আরও ৪ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয় এবং আরইবি হতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট অসত্য তথ্য প্রদান করায় বিভিন্ন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে গতরাত ও আজকে সারাদিন ধর পাকড় চালিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। ধর-পাকড় ও মামলায় আতঙ্কে সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীরা স্টেশনে অবস্থান করতে পারছেন না। এমন অবস্থায় গ্রাহক প্রান্তে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সচল রাখা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, গ্রাহকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা কিংবা জবাবদিহিতা না থাকায় আরইবি কর্তৃক সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে নিম্নমানের বৈদ্যুতিক মালামাল ক্রয় করে ভঙ্গুর বিতরণ ব্যবস্থা ও অবকাঠামোর কারণে গ্রাহকদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। বোর্ডের অনিয়ম ও অদক্ষতার মাশুল দিতে হয় জনগণকে এবং দায় নিতে হয় সমিতিকে। সমিতিগুলোকে শোষণ করা, হেয় প্রতিপন্ন ও হয়রানি করায় আরইবির কর্মকা-ে কর্মকর্তা/কর্মচারীদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতিতে সংকটের সমাধান না করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা/ কর্মচারীদের হয়রানির কারণে ও মামলার ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে অনেকেই কর্মস্থলে অবস্থান করার সাহস পাচ্ছেন না। এই অবস্থা চলতে থাকলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। এ অবস্থায়, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত রাখার স্বার্থে কর্মীদের কর্মস্থলে অবস্থান করা প্রয়োজন। চলমান সংকট নিরসনে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। অন্যথায়, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘœ ঘটলে এর দায়ভার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো বহন করবে না।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button