খুমেক হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে অপহরণের অভিযোগ : উদ্ধার করলো পুলিশ

স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (এও) জি এম ইখতিয়ার উদ্দিনসহ সাজ্জাদ নামের এক ব্যক্তিকে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাজ্জাদ খুমেক হাসপাতালে অফিস এ্যাটেনডেন্ট হিসেবে কর্মরত রয়েছেন । খুমেক হাসপাতালের সাবেক আউটসোর্সিং কর্মচারি লিজার নেতৃত্বে আজহার, মাছুম, নাছরিন, রিনা, প্রদীপ, আলাউদ্দিনসহ ২০-২৫ জন তাদের অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা। পরে সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে তাদের নিয়ে আসেন। গতকাল সোমবার দুপুর সোয়া দুইটার দিকে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন গ্রামীন আবাসিক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
খুমেক হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জি এম ইখতিয়ার উদ্দিন এ প্রতিবেদককে বলেন, গতকাল সোমবার সকালে হাসপাতালের অফিস এ্যাটেনডেন্ট সাজ্জাদকে সাবেক আউটসোর্সিং কর্মচারি লিজার নেতৃত্বে ২০-২৫ জন অফিসের মধ্যে অবরুদ্ধ করে রাখেন। তখন আমি হাসপাতালে অফিসিয়াল কাজে বাইরে ছিলাম। বিষয়টি আমাকে অবহিত করলে আমি হাসপাতালের পরিচালক স্যারক ডা: গৌতম কুমার পালকে ঘটনার বিষয়টি অবহিত করি। তখন পরিচালক স্যার আমাকে সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করার জন্য আমাকে নির্দেশ প্রদান করেন। আমি পুলিশকে অবহিত করলে থানা থেকে এসআই কামরুজ্জামান হাসপাতালে এসে অবরুদ্ধ সাজ্জাদকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে দুপুর সোয়া দুইটার দিকে থানার এসআই কামরুজ্জামান সাজ্জাদকে আমার হাতে তুলে দেয়ার জন্য গ্রামীন আবাসিক এলাকায় আসতে বলেন। ওখান থেকে সাজ্জাদকে হাসপাতালে উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার সময় সাবেক আউটসোর্সিং কর্মচারি লিজার নেতৃত্বে আজহার, মাছুম, নাছরিন, রিনা, প্রদীপ, আলাউদ্দিনসহ ২০-২৫ জন তাদেরকে জোর করে তুলে নিয়ে যান। পরে তারা আমাকে লাঞ্ছিত করেন। সেখান থেকে তারা আমাদেরকে নিউ মার্কেটের পেছনে একটি গলির মধ্যে নিয়ে আসেন। সেখানে ওয়ার্ড বিএনপি নেতা ফারুকের কাছে নিয়ে আসে। আমি তখন ফারুকের সাথে আমার হাসপাতালের পরিচালকের সাথে কথা বলায় দেই। তখন ফারুক কোন কথা না বলে আমাদেরকে যারা জোর করে তুলে নিয়ে আসেন তাদের কাছে রেখে উঠে চলে যান। পরে তারা আমাদেরকে একটি রাজনৈতিক অফিসে নিয়ে আটকায় রাখেন। সেখান থেকে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার আব্দুল হাই তাদেরকে ওখান থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। এ বিষয়ে আমি থানা পুলিশকে অবহিত করেছি কারা আমাকে জোর করে তুলে নিয়ে গেছেন। আমার ছেলের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত আমি ঢাকায় যাচ্ছি। সেখান থেকে এসে আমি তাদের বিরুদ্ধে এজাহার দাখিল করবো। তাকে অপহরণ করার কারন জানতে চাইলে হাসপাতালের এও জি এম ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, গত ১৯ অক্টোবর ( শনিবার ) হাসপাতালের পরিচালক ডা: গৌতম কুমার পাল এক অফিস নোটিশে উল্লেখ করেন হাসপাতালের ১০০ লটের আউটসোসির্ং কর্মচারিদের চলতি বছরের ৩০ জুন প্রকল্প শেষ হওয়ায় এবং হসপিটাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট হতে আর কোন ব্যয় বরাদ্দ প্রদান করা হবে না মর্মে পত্রে উল্লেখ করায় অত্র হাসপাতালের ১০০ লটের আউটসোসির্ং কর্মচারী কাজ করেন, তাদেরকে অত্র হাসপাতালে সকল প্রকার কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো। ওই নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, ১০০ লটের আউটসোর্সিং কর্মচারীগণ অত্র হাসপাতালে কাজ করার কোন প্রকার জটিলতা সৃষ্টি হলে কর্মচারীর ওপর দায় বার্তাইবে। এ নোটিশে করার পেছনে আমার হাত রয়েছে এমনটা মনে করায় তারা আমাকে অপহরণ করেছেন বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, আমাকে জোর করে তুলে নেয়ার বিষয়ে বিএনপি নেতা ফারুকের হাত রয়েছে। এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা মডেল থানা এসআই কামরুজ্জামান এ প্রতিবেদককে বলেন, খুমেক হাসপাতালে অফিস এ্যাটেনডেন্ট সাজ্জাদ নামে এক ব্যক্তিকে সাবেক আউটসোর্সিং কর্মচারিরা অফিসে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। বিষয়টি জানার পর আমি হাসপাতাল থেকে সাজ্জাদকে অবরুদ্ধ থেকে উদ্ধার করে থানায় চলে আসি। পরে সাজ্জাদকে হাসপাতালের এও কাছে হস্তান্তর করার জন্য তাকে নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানানীধন গ্রামীন আবাসিক এলাকায় সাজ্জাদকে হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তার হাতে তুলে দেই। এরপর কি হইছে আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার সেকেন্ডে অফিসার আব্দুল হাই ঘটনার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ডা: গৌতম কুমার পালকে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।