মহেশ্বরপাশা কালীবাড়ি দত্ত জুয়েলার্সে দিন দুপুরে দুধর্ষ ডাকাতি : আটক-১

# ডাকাতিতে ব্যবহৃত গাড়ী আটক
# ডাকাতদের বোমার আঘাতে আহত ২ #
# ঘটনাস্থলে ৭/৮টি বোমা বিস্ফোরণ করে দুর্বৃত্তরা #
# অস্ত্রের মুখে লুট করে নিয়ে গেছে নগদ অর্থসহ স্বর্ণালংকার #
# ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট ও পিবিআই’র কর্মকর্তাগণ #
স্টাফ রিপোর্টার ঃ নগরীর দৌলতপুর থানাধীন মহেশ্বরপাশা কালীবাড়ি বাজারে দত্ত জুয়েলার্স নামের স্বর্ণের দোকানে দিনে দুপুরে দুধর্ষ ডাকাতি সংগঠিত হয়েছে। এলাকার প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর ১টা দশ মিনিটে কালিবাড়ি বাজারে অ্যাস কালারের একটি প্রাইভেট কার দত্ত জুয়েলাস দোকানের সামনে এসে থামে। আশেপাশের সাধারণ পথচারীরা ভেবেছেন কাস্টমার দোকানে ঢুকেছি। ২-১ মিনিট পরেই গাড়িটির পিছনে এবং সামনে হাতবোমা ছুটতে থাকে এতে এলাকায় থমথমে ও ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। প্রত্যক্ষদর্শীর আরো বলেন, দলে পাঁচজন ডাকাত ছিল। তিনজন দোকানের মধ্যে ঢুকেছে ও একজন বাইরে বোমা চার্জ করছে এবং একজন প্রাইভেট কারের স্টিয়ারিং এ বসেছিল। এলাকাবাসী ডাকাতদের ধরার চেষ্টা করলে তাদেরকে লক্ষ্য করে বোমা ছুটতে থাকে। বোমার স্প্রিন্টারে একজন রিক্সার গ্যারেজের মালিক রাজা মিয়া সহ দুইজন আহত হয়। এ সময় এলাকাবাসী, গাড়ির গায়ে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে গাড়ির সামনের গ্লাস এবং সাইড গ্লাস ভেঙে দেয়। ডাকাতি সমাপ্ত করে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার উপরে কাঠের টুল দিয়ে প্রাইভেট কারটি থামানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু গাড়িটি এত দ্রুত বেগে চালাচ্ছিল। এগুলো ভেঙে দ্রুতগতিতে গাড়ি চলে যায়। দৌলতপুর থানা পুলিশ সংবাদ পেয়ে তাদের ওয়ারলেসের মাধ্যমে গাড়িটি আটকানোর জন্য মেসেজ দিয়ে দেয় সব থানায়। খানজাহান আলী থানা পুলিশের প্রচেষ্টায় ফুলতলার জামিরা বাজার নিকট গাড়ি থামিয়ে ডাকাতরা নেমে পালিয়ে যায়, তখন ডাকাত দলের সদস্য গাড়ি চালক নাজিম উদ্দীন (৪৫) ও ঢাকা মেট্রো -গ,১৯-৬৭৬৬ গ্রে (এ্যাস) কালারের প্রাইভেট কার আটক করে। ভুক্তভোগী, দত্ত জুয়েলার্সের মালিক উত্তম দত্ত জানান, দুপুর ১ টা ১০ মিনিটের সময় তার দোকানে দরজা খুলে তিনজন লোক প্রবেশ করে তাদের হাতে পিস্তল ও চাপাতি ছিল। আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে স্বর্ণ অলঙ্কারের বক্সের মধ্যে চাপাতি দিয়ে ভেঙে স্বর্ণ অলংকার ও ক্যাশের আলমারিতে থাকা নগদ ২ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। শেষ মুহূর্তে বেরিয়ে যাওয়ার সময় পিছনে থাকা একজনকে আমি জড়িয়ে ধরলে আমাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। অল্পের জন্য গুলিটি আমার গায়ে লাগেনি। গুলির খোসা আমার দোকানের মধ্যেই পড়ে আছে। ডাকাতির ঘটনার সংবাদ শুনে পুলিশের কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (উত্তর) ও সহকারী পুলিশ কমিশনার (দৌলতপুর জোন) এবং দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ, ওসি তদন্ত, সিআইডির তদন্ত টিম, পিবিআইসহ প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর আতাহার আলী জানান, দত্ত জুয়েলার্সের ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত একজন আসামী ও ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি আটক করা হয়েছে। আসামি কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শংকর কর্মকার বলেন,আমরা জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা সর্বদা আতঙ্কের মধ্যে দিন যাপন করছি। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করে ও ডাকাতি কৃত নগদ অর্থ ও স্বর্ণ অলংকার উদ্ধারের জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে জোর দাবি জানান । প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলবো আমাদের ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা জোরদার করেন। এলাকাবাসী জানান,দিনে দুপুরে জনবহুল একটি এলাকায় এভাবে ডাকাতি আমরা কখনো আশা করিনি। এ ঘটনার সাথে স্থানীয় বড় ধরণের একটি চক্র জড়িত না থাকলে এ ধরনের ঘটনা ঘটা সম্ভব নয়। এই ডাকাতির ঘটনার নেতৃত্বে যারা রয়েছেন তাদেরকেও খুঁজে বের কওে শাস্তির দাবী জানান এলাকাবাসী।